অভয়নগর ও নড়াইলে শত শত বিঘা জমির ধান চিটায় পরিণত

সারাদেশ

সুমন হোসেন, নওয়াপাড়া (যশোর) থেকে : যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলা ও পাশ্ববর্তী নড়াইল জেলার সদর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে সর্বশান্ত করে দিয়েছে এই অঞ্চলের হাজারো সাধারন কৃষকের স্বপ্ন। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, অভয়নগর ও নড়াইল উপজেলায় শত শত বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে এই কালবৈশাখী ঝড়ে কবলে পড়ে। বিগত রবিবার সন্ধায় হঠাৎ ৫ মিনিটের ঝড়ো বাতাশে ধানের কুশি থেকে ফুল ঝরে যওয়ায় যা পুরপুষ্ট ধান হওয়ার কথা ছিলো। তা সব চিটেই পরিণত হয়েছে বলে ধারণা করছে সাধারন কৃষকেরা।
দেখে মনে হচ্ছে সবুজের মাঠ। কৃৃষকের হাসি দুলছে সারা মাঠে। মাঠে ধান আছে ঠিকই তবে ৮০ ভাগের ও বেশী জমির ধানে কৃষকের সোনার স্বপ্ন বিলীন করে দিয়ে চিটে পড়ে গেছে। শনিবার সরেজমিনে নড়াইলের চাকই, মধুরগাতী, মির্জাপুর, কালিয়ার পেরুলি, অভয়নগরের সিদ্ধিপাশা বালিয়ার ডাঙ্গা, বুগিয়া ডাঙ্গা সহ বেশ কয়েকটি বিলে গিয়ে দেখা গেছে, ধান ক্ষেত সবুজ দেখাচ্ছে, তবে ধানের শীষে নেই ধানের কোনো অস্তিত্ব।
বাশুয়াড়ীর কৃষক আমিন বলেন, এনজিও (বে-সরকারি ক্ষুদ্র ঋণ দান সংস্থা) থেকে টাকা লোন নিয়ে ২ বিঘা জমিতে হাইব্রীড ধানের চাষ করেছি। মাঠের পুরো জমিতে ধানের পরিবর্তে এখন চিটেতে পরিণত হয়েছে। আজিজুর ইসলামের ১ বিঘা জমির ধানও একই অবস্থা বলে সে জানায়।
সিদ্ধিপাশার পূর্বের বিলের কৃষক হারুন সরদার বলেন, তার ৩ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে কালবৈশাখী ঝড়ে। স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন, বিগত রবিরার সন্ধ্যায় উত্তর-পশ্চিম মেরু থেকে থেকে হঠাৎ আসা কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। কালবৈশাখী ঝড়টি ৫-৭ মিনিট অবস্থান করে এই এলাকায়। তাতেই লন্ডভন্ড হয় ধানের ক্ষেত সহ জনপদ।
জানাগেছে ধানের কুশিতে ঝড়ের প্রচন্ড ধুলি বাতাশ হঠাৎ আঘাত আনলে কুশি থেকে ফুলপড়ে যওয়াতে এই ক্ষতির স্বীকার হয় সাধারন কৃষকরা।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষক তাদের বাকী ধানের ফসল মাঠ থেকে বাড়ীতে আনতে পারবে কি না তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। এই বিষয়ে সাধারন কৃষকেরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের হস্থক্ষেপ কামনা করছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ গোলাম ছামদানী বলেন, আবহাওয়া এবং জলবায়ুর প্রতিকুলে থাকায় হঠ্যাৎ কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে কিছু ধানের ক্ষতি হয়েছে। অভয়নগর উপজেলার ১৮ হেক্টর জমির শতকরা ১-২ শতাংশ ধানের হিটশর্ট নামক রোগের কারনে এই সমস্যা হয়েছে। তবে এই বিষয়ে সাধারন কৃষকদেরকে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি এবং সচেতনতা মুলক লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। ধানের জমিতে পানি ধরে রাখতে এবং পটাশ সার স্প্রে করে দিতে।


বিজ্ঞাপন