করোনায় ঈদের নামাজ আদায়, মসজিদে কান্নার রোল

জাতীয়

আজকের দেশ রিপোর্ট : বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চলমান অবস্থায় সারাদেশব্যাপীসহ রাজধানী ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। সরকার ঘোষিত লকডাউন চলমান ও স্বাস্থ্যবিধি পালন করতে নির্দেশনা থাকায় মুসুল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করার আগেই মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজে অংশগ্রহণ করেন।


বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১৪ মে) সকাল ৮.৪৫ মিনিটে কামরাঙ্গীরচর বড়গ্রাম গণিমিয়া মাদ্রাসায় ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করা হয়।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, কামরাঙ্গীরচরের অধিকাংশ মসজিদে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। করোনায় এবার ঈদগাহ মাঠে নামাজ আদায় করার বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা থাকায় মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের প্রচন্ড ভিড় পরিলক্ষিত হয়। মুসল্লিরা সকাল থেকেই নতুন পায়জামা-পাঞ্জাবি পরিধান করে মসজিদে প্রবেশ করেন।

ক্রমান্বয়ে, মসজিদে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। করোনা ঝুঁকি ও গ্রামের বাড়িতে শহরের অধিকাংশ মানুষ চলে যাওয়ার পরেও মসজিদে পর্যাপ্ত পরিমাণে মুসুল্লি নামাজ আদায় করায় মসজিদ কমিটি সন্তোষ প্রকাশ করেন। এসময় মসজিদে মুসল্লিরা স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেন।

জানা যায়, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের ঈদ উদযাপন একেবারেই ভিন্ন রকম হয়েছে। করোনা ও লকডাউনের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ায় মানুষের আনন্দ উদযাপনে ভাঁটা পড়েছে। নিন্মবিত্ত মানুষদের আর্থিক সঙ্কট দেখা দেওয়ায় মানসিক সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। হতাশা ও দুশ্চিন্তা গ্রাস করেছে তাদের।

ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা দীর্ঘ ১মাস সিয়াম সাধনার পর মুসলমানদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছিলেন। সে অপেক্ষার অবসান হয়েছে আজ নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে, সবার মাঝে উচ্ছ্বাস এর পরিবর্তে মৌনতা পরিলক্ষিত হয়। এবার প্রাণহীন ঈদ উদযাপন করলেন বাঙালি মুসলমানেরা।

আরো জানা যায়, নামাজ আদায়ের পর ইমাম খুতবা পড়াকালীন অবস্থায় মুসল্লিদের আবেগ যেন উঁতলিয়ে পড়েছে। এসময় মুসল্লিদের গুমোট কান্নায় মসজিদে ভাবগাম্ভীর্য অবস্থা দেখা গেছে। চোখের পানিতে ভেসে গেছে মসজিদের কার্পেট, শিশু, বৃদ্ধ, কিশোর ও যুবক সবাইকে এ কান্নায় অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। ইমাম ও মুয়াজ্জিনের সান্ত্বনা দেওয়ার পরেও মুসল্লিদের কান্না যেন থামেই না।

নামাজ আদায়ের পর মুসল্লিদের মধ্যে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। মুসুল্লিরা করমর্দন, কোলাকুলি ও খোশগল্প থেকে এবার নিজেদের বিরত রাখেন। নিজেদের স্বার্থেই তারা স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে সর্তকতা অবলম্বন করেন। এমনকি, অন্যান্য বছরের মতো এবার নামাজ শেষে মুসল্লিদের সমাগম চোখে পড়েনি। মুসল্লিদের একটাই প্রত্যাশা, মহান রাব্বুল আলামিন যেন করোনা মহামারী থেকে সবাইকে হেফাজত রাখেন।