বেতন বাড়লেও কমেনি সরকারি চাকরিজীবীদের দুর্নীতি

অপরাধ অর্থনীতি আইন ও আদালত এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন ঢাকা রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়লেও দুর্নীতি কমার কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। রোববার রাজধানী ঢাকার ধানম-ির মাইডাস সেন্টারে তাদের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়। ‘জনপ্রশাসনে শুদ্ধাচার: নীতি ও চর্চা’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি এ কথা জানায়।
টিআইবির কর্মসূচি ব্যবস্থাপক মহুয়া রউফ প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক ও অন্যান্য প্রভাবের কারণে জাতীয় শুদ্ধাচারের কোনো কোনো কৌশলের চর্চা ফলপ্রসূ হচ্ছে না। প্রশাসনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তিনি বলেন, শুদ্ধাচার কৌশলে জনপ্রশাসন সম্পর্কিত ১১টি কৌশলের মধ্যে পাঁচটি কৌশলের চর্চা সন্তোষজনক। তিনটি কৌশলের চর্চা এখনো শুরুই হয়নি। বিভিন্ন উপাত্ত তুলে ধরে মহুয়া রউফ বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় জনপ্রশাসনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রবণতা বেড়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে যোগ্যতা নয়, ক্ষমতাসীনদের পছন্দ প্রাধান্য পাচ্ছে।
পদোন্নতি ও পদায়নের অসংগতি তুলে ধরে মহুয়া রউফ বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনাকে প্রাধান্য দিয়ে প্রশাসনের উপসচিব বা এর ওপরের পদে শূন্য পদের অতিরিক্ত কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। রাজনৈতিক বিবেচনায় পদোন্নতির ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতার লঙ্ঘনও হয়। অন্যদিকে, পদোন্নতি বিধিমালায় উল্লেখ না থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের পদোন্নতিতে গোয়েন্দা প্রতিবেদনকে অধিকতর প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। কোন গোয়েন্দা সংস্থা কী বিষয়ে কখন কী প্রতিবেদন দিচ্ছে, তা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানার সুযোগ নেই। এমনকি গত নির্বাচনের আগে ৫৫ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা ক্ষমতাসীনদের নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ। ডিসি পদায়নে গোয়েন্দা রিপোর্ট একটি কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এসব প্রতিবেদনে কর্মকর্তারা ক্ষমতাসীন দলবিরোধী কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন কি না, তা বিবেচনায় আনা হচ্ছে।
তবে প্রতিবেদনে শুদ্ধাচার কৌশলের কিছু কিছু অগ্রগতির চিত্রও তুলে ধরা হয় গবেষণায়।
অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জনপ্রশাসনে শুদ্ধাচারের অবস্থাটি মোটামুটি মিশ্র। কিছু ক্ষেত্রে লক্ষণীয় অগ্রগতি আছে। কিছু কিছু উদ্যোগ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে। আবার কিছু কিছু উদ্যোগ শুরুই হয়নি। তিনি সরকারি কর্মচারী আইনে গ্রেপ্তার সম্পর্কিত একটি ধারার সমালোচনা করে বলেন, এই ধারাটি দুর্নীতি প্রতিরোধে বাধার সৃষ্টি করবে। তাই তাঁরা এই ধারাটি বাতিল করে আইনের সংশোধন চান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পারভিন হাসান, টিআইবির উপদেষ্টা অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, টিআইবির পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান প্রমুখ।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *