নিজস্ব প্রতিবেদক : খাবারে ঘি সবারই প্রিয় যদি সেটা সত্যি ঘিয়ের স্বাদ হয়। তবে ডালডা ও সয়াবিন তেলে শিমুল তুলার বিচির নির্যাস এবং বিষাক্ত রং মিশিয়ে বানানো ঘি এর স্বাদ কেমন হয়? হয়তো জানেন না অনেকে।
এমনই একটি নকল কারখানায় অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের একটি টিম। শনিবার রাজধানীর পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকার ওই কারখানা থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রায় ৫ মণ ভেজাল ঘিসহ মালিক আব্দুস সামাদ, কারিগর রবিউল ইসলামসহ দুই কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি।
সরেজমিনে দেখা যায়, লালবাগের বেগমবাজারের চারতলা বিশিষ্ঠ একটি জরাজীর্ণ ভবনের চার তলার একটি কক্ষে ৪ থেকে ৫ জন ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাদের কেউ চুলায় তাপ দিচ্ছেন আবার কেউ চুলা থেকে গরম তেল নামিয়ে ঠান্ডা করছেন। কেউ আবার তেলে নানান নকল উপকরণ মেশাচ্ছিলেন
পাশের আরেকটি কক্ষে প্রাণ ও আড়ংয়ের ঘিয়ের মতো নামি-দামি ব্র্যান্ডের কৌটায় সারি সারি ভাবে সাজানো ছিলো ঘি। এসব ঘি নোংরা পরিবেশে বানানো হচ্ছিলো। এ সময় সেখানে হানা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। উপস্থিতি টের পেয়ে ভবনটির মালিক আব্দুস সামাদ পালাতে চেষ্টা করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. রাজীব আল মাসুদ বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওই কারখানায় অভিযান চালানো হয়েছে। মালিকসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, তারা বিভিন্ন ব্র্যান্ড কোম্পানির পুরনো কৌটা সংগ্রহ করে তাতে নকল ঘি ভরে বিক্রি করতো। এসব নকল ঘিতে সয়াবিন ও ডালডা তেল মিশিয়ে তাতে শিমুল তুলার বিচির নির্যাস দিতো। এতে করে খাঁটি ঘিয়ের মতো দেখা যেতো।
ডিবির ডিসি রাজীব আল মাসুদ আরো বলেন, এসব ঘি হরহামেশা বিক্রি হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। তাদের কাছ থেকে এসব ঘি কিনে নিয়ে যায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। নামমাত্র মূল্যে এসব ঘি কিনে বাজারে ক্রেতাদের কাছে নামি-দামি ব্র্যান্ডের দামে বিক্রি করা হয়।
ডিবি সুত্রে জানা যায়, গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে মালিক আব্দুস সামাদ এই কাজ করেন। তবে বছর দু’য়েক আগে পুলিশের হাতে একই অপরাধে গ্রেপ্তার হয়ে বছরখানেক জেলও খেটেছেন। এরপর জামিনে বেরিয়ে এসে আবারো একই কাজ করছেন তিনি।