নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাকালীন সময়ে সরকারের দেওয়া ২৩টি প্রণোদনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, করোনাকালে সাধারণ মানুষ যেন কষ্ট না পায়, তার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা ৭২৭ স্থানে ওএমএস কার্যক্রম চালু করেছি। সেখানে চাল, আটাসহ বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করা হয়। টিসিবির মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরাসরি বিক্রি অব্যাহত আছে। সমগ্র দেশের মানুষকে বিভিন্নভাবে আমরা সহায়তা দিয়েছি। করোনাকালে প্রায় ৫ কোটি মানুষ আমাদের সহায়তা পেয়েছেন।
রোববার সকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার-১৪২৪ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুক্ত ছিলেন।
দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত বর্তমান সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটা বদ্বীপ। এই বদ্বীপে বসবাস করা মানুষ যেন ভবিষ্যত প্রজন্মসহ নিরাপদ থাকে, সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই ২১০০ সাল পর্যন্ত বদ্বীপ প্রকল্প নিয়েছি। যার মাধ্যমে এই দেশের উৎপাদন অব্যাহত থাকবে। দেশ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হবে, উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম উন্নত জীবন পাবে, সুন্দরভাবে বাঁচবে। সেই পরিকল্পনা নিয়ে সেটাও আমরা বাস্তবায়ন শুরু করেছি।
তিনি বলেন, জাতির পিতা সাধারণ মানুষের জন্য যতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছিলেন পঁচাত্তরের পর যারা ক্ষমতায় আসে তারা একে একে সবই বন্ধ করে দেয়। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য এই বাংলাদেশে আমরা দেখেছি ৯১ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসে, কৃষকরা সারের জন্য আন্দোলন করেছিল, ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছিল, কৃষক সার পায়নি পেয়েছিল গুলি।
শেখ হাসিনা বলেন, তখন আমরা বলেছিলাম‑ আমরা আওয়ামী লীগ যদি সরকারে আসি সারের জন্য কৃষকদের গুলি খাওয়া তো দূরের কথা দৌড়া-দৌড়িও করতে হবে না। কৃষকের ঘরে (সার) পৌঁছে দিব। সেই সময় আমরা স্লোগান তুলেছিলাম, কৃষক বাঁচাও দেশ বাঁচাও। কৃষকদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছিল খালেদা জিয়া সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০০৮ সালে নির্বাচনি ইশতেহারে দিয়েছিলাম ‘দিন বদলের সনদ’। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ তার অগ্রযাত্রা শুরু করবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সুপরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। অর্থনৈতিকভাবে যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছি।
তিনি বলেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো- করোনা আসার পর শুধু বাংলাদেশ না, সারাবিশ্বে একটা স্থবিরতা এসে গেছে। যেটা সব থেকে দুঃখজনক। আর আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশের জন্য সব থেকে কষ্টকর।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। সবাইকে অনুরোধ করবো, সাবধানে থাকবেন। নিজেকে নিরাপদ রাখবেন। পরিবারকে নিরাপদে রাখবেন। আমরা এই অবস্থাও মোকাবিলা করতে পারব। আপনাদের সকলের সহযোগিতা আমরা চাই।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়ন প্রান্তে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী তিনটি ক্যাটাগরিতে ৩২ জন পুরষ্কার বিজয়ীর হাতে পদক ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর উপর ‘বাণী চিরসবুজ’ ও স্মারক গ্রন্থ ‘চিরঞ্জীব’ শীর্ষক দুইটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।