নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির কার্যালয়ে বিক্ষোভের সময় ‘অপ্রীতিকর’ ঘটনাবলীর জন্য ক্ষমা চেয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ মেনে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ছাত্রদলের বহিষ্কৃত নেতাকর্মীরা। বুধবার দুপুরে নয়া পল্টনের কার্যালয়ের নিচতলায় জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সদ্য বহিষ্কৃত ছাত্র দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন লিখিত বিবৃতি পড়েন শুনান। বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি ছাত্র দলের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার একপর্যায়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এবং সংলগ্ন এলাকায় ঘটে যাওয়া কিছু অপ্রীতিকর ঘটনাবলী আমাদের ব্যথিত এবং মর্মাহত করেছে। এই ধরনের ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। সংঘটিত বিষয়ে আমরা দুঃখপ্রকাশ করছি। একইসঙ্গে দলীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অনুগত থেকে শ্রদ্ধাভাজন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশাবলী পালনে অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি। গত ৩ জুন বিএনপি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ২০০০ সালের পরের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার শর্ত আরোপ করা হয়। বয়সসীমা উঠিয়ে দেওয়ার দাবিতে ১০ জুন থেকে বিক্ষোভ করে আসছেন ছাত্রদল নেতাকর্মীদের একাংশ। পরদিন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিনভর বিক্ষোভ করেন তারা। এরকম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে তুহিনসহ বিক্ষোরত ছাত্র দলের ১২ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। এরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক বাশার সিদ্দিকি, ছাত্র দলের ভেঙে দেওয়া কমিটির সহসভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, ইকতিয়ার কবির, জয়দেব জয়, মামুন বিল্লাহ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, বায়েজিদ আরেফিন, সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক দবির উদ্দিন তুষার, সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আজম সৈকত, আবদুল মালেক ও সাবেক কমিটির সদস্য আজীম পাটোয়ারি। ছাত্র দলের বিক্ষুব্ধদের এরকম কর্মসূচির মধ্যে গত ২৩ জুন ছাত্র দলের কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করে ছাত্র দলের সাবেক নেতাদের নিয়ে গঠিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। ১৫ জুলাই ছাত্র দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা থাকলেও তা বিক্ষোভের কারণে স্থগিত হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে সংকট নিরসনে বিক্ষুব্ধদের নিয়ে বসার দায়িত্ব দেন তারেক রহমান। তাদের দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পরপরই বিক্ষুব্ধরা এই সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি কার্যালয়ে তালা দেওয়াসহ সংঘটিত ‘অপ্রীতিকর’ ঘটনায় জড়িত না থাকার দাবি করেন বহিষ্কৃতরা। লিখিত বিবৃতিতে তুহিন বলেন, দলের অনুগত এবং বিশ্বস্ত কোনো কর্মী এই ঘটনা ঘটাতে পারে বলেও মনে হচ্ছে না। এলোমেলো পরিস্থিতির কারণে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমরা মনে করি। তুহিন বলেন, ছাত্রদলের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় একপর্যায়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সংলগ্ন এলাকায় ঘটে যাওয়া কিছু অপ্রীতিকর ঘটনায় আমাদের ব্যথিত ও মর্মাহত করেছে। এ ধরনের ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এটা অনাকাক্সিক্ষত ও কারো জন্য কাম্য নয়। দলের অনুগত এবং বিশ্বস্ত কেউ এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলেও মনে হচ্ছে না। এলোমেলো পরিস্থিতির কারণে সংগঠিত বিষয়ে জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে দলীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অনুগত থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনাবলি পালনে অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি, যোগ করা হয় লিখিত বক্তব্যে। বিবৃতিতে বহিষ্কৃত ১২ নেতাসহ ২৬ জনে স্বাক্ষর রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বহিষ্কৃতদের বাইরে শামসুল আলম রানা, কাজী মুক্তার, শফিকুর ইসলাম শফিক, আজিজুর রহমান আজিজ, সাইদুর রহমান রয়েল, মাহফুজুর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, নাসির উদ্দিন সরকার সাওন ও সুলতান জুয়েলসহ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।