আজকের দেশ ডেস্ক : শ্বাসপ্রশ্বাসের সংক্রমণে রোগ প্রতিরোধ নিয়ে যারা গবেষণা করেন, তাদের মতো আমিও উদ্বেগের সঙ্গে উদ্ভূত করোনাভাইরাসের ভ্যারিয়েন্টগুলোর খবর দেখেছি।
সার্স-কোভ-২ বা করোনা ভাইরাসের স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে টিকা বা আগের সংক্রমণ কোনো সুরক্ষা দেয় কিনা তা ভেবে আমি আশ্চর্য্যান্বিত হয়েছি।
বিশেষ করে নতুন উচ্চ মাত্রার সংক্রমণশীল ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বেলায়। এই ভ্যারিয়েন্ট জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী কমপক্ষে ১০৮টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে দ্রুততার সঙ্গে।
অনলাইন সায়েন্স এলার্টে এসব কথা লিখেছেন ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলাইনার রোগ প্রতিরোধ বিষয়ক ক্লিনিক্যাল অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর জেনিফার টি গ্রিয়ার। তিনি আরো লিখেছেন, একজন মানুষ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নয়ন করতে পারে দুটি উপায়ে।
একটি হলো ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পর এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মে অথবা টিকা নেয়ার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সবসময় সমান থাকে না।
রোগ প্রতিরোধ কতটা শক্তিশালীভাবে সাড়া দিচ্ছে অথবা কতটা সময় প্রতিরোধ ক্ষমতা টিকে থাকে তার ওপর নির্ভর করে টিকা থেকে এবং প্রাকৃতিক উপায়ে প্রতিরোধের ভিন্নতা।
উপরন্তু সংক্রমণ থেকে সবাই একই মাত্রায় প্রতিরোধ ক্ষমতা পাবেন না, যদিও টিকার প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে নতুন ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে টিকা এবং সংক্রমণের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও ভিন্ন হয়।
জুলাইয়ের শুরুতে প্রকাশিত দুটি গবেষণায় বলা হয়েছে, নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে চমৎকার প্রতিরোধ গড়ে তোলে করোনার টিকা।
তবে এই টিকা করোনার মূল ভাইরাসের তুলনায় কিছুটা কম কার্যকর নতুন ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে। গবেষকরা দেখছেন, করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টের সঙ্গে এন্টিবডির সম্পর্ক কি।
দেখা গেছে, যেসব মানুষ আগে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তারা নতুন স্ট্রেইনে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে যেসব মানুষ টিকা নিয়েছেন তাদের সুরক্ষিত থাকার সম্ভাব্যতা বেশি।
কোভিড-১৯ এর টিকা করোনা ভাইরাসের পুরনো স্ট্রেইন এবং নতুন যেসব স্ট্রেইন, বিশেষ করে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট- উভয় ক্ষেত্রেই নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। এন্টিবডি হলো প্রোটিন, যার সঙ্গে ভাইরাসের সম্পর্ক আছে। এই এন্টিবডি সংক্রমণ রোধ করতে পারে।
টি-সেল আক্রান্ত কোষ এবং ভাইরাসকে মেরে ফেলে। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় এরাই হলো প্রধান উপাদান। করোনায় সংক্রমিত হওয়ার পর একজন ব্যক্তির এন্টিবডি এবং টি সেল নতুন করে আক্রান্ত হওয়া রোধ করতে পারে।
শতকরা প্রায় ৮৪ থেকে ৯১ ভাগ মানুষ, যাদের শরীরে মূল করোনা ভাইরাসের স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি হয়েছে, তারা পরবর্তী ৬ মাস আক্রান্ত হওয়া থেকে নিরাপদ থাকার সম্ভাব্যতা বেশি।
সংক্রমণকালে যেসব ব্যক্তির শরীরে কোনো লক্ষণ দেখা দেয়নি, তাদের মধ্যেও প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠতে পারে। যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের তুলনায় এসব মানুষের শরীরে এন্টিবডি তৈরি হয় কম।
এ জন্য কিছু মানুষের শরীরে প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।