শিগগিরই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ

অন্যান্য এইমাত্র জাতীয় রাজনীতি

মন্ত্রী হচ্ছেন মাশরাফি

মহসীন আহমেদ স্বপন : শিগগিরই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হচ্ছে। সেই সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় সীমিত আকারে মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনাও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর শেষে দেশে ফেরার পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের আসন্ন জাতীয় সম্মেলন এবং দল ও সরকারকে পৃথক রাখার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনায় রয়েছে।
গণভবন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টাকে টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। তাকে দেওয়া হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। এরপর রদবদল এনে মন্ত্রিসভাকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনার কথা জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, গত ছয় মাসের মূল্যায়নে মন্ত্রিসভার কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দুর্বলতার বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দৃশ্যমান হয়েছে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় রয়েছে, যেখানে পরিবর্তন আনাটা জরুরি বলে সরকারের উচ্চপর্যায় মনে করছে। সব ঠিক থাকলে চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ নাগাদ মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তি ও রদবদলের সম্ভাবনা রয়েছে।
নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা মন্ত্রী হচ্ছেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়। তবে পূর্ণমন্ত্রী না প্রতিমন্ত্রী নাকি উপমন্ত্রী দেয়া হচ্ছে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি ওই সূত্র।
জানা গেছে, মন্ত্রী পরিষদের আকার বাড়ছে, হতে পারে রদবদলও। কিছুদিন যাবৎ এমন গুঞ্জন উঠেছে। প্রথম দিকে নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজাকে মন্ত্রী করার দাবি উঠলেও চলতি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কারণে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। পুনরায় মন্ত্রী সভার রদবদল এবং আকার বড় হওয়ার গুঞ্জন উঠলেই উঠে আসে মাশরাফি বিন মর্তুজার নাম। প্রধানমন্ত্রী চীন সফর শেষে দেশে ফিরলেই মন্ত্রী পরিষদ রদবদল এবং নতুনমুখ দেখা যাবে বলে জানা গেছে।
নড়াইল-২ আসেনর সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজার ঘনিষ্ট একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মাশরাফি বিন মর্তুজাকে বৈদেশিক ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। মাশরাফি বিশ্বকাপ মিশন শেষে দেশে ফিরলেই প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে।
তবে পূর্ণমন্ত্রী না প্রতিমন্ত্রী নাকি উপমন্ত্রী দেয়া হচ্ছে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি ওই সূত্র।
এ যাত্রায় ১৪ দলের শরিকরা মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে ১৪ দলের শরিকদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে বলে জানা গেছে। সে ক্ষেত্রে ইতিপূর্বে যারা মন্ত্রী ছিলেন তাদের বাদ দিয়ে শরিক দলগুলোর মহাসচিব/সাধারণ সম্পাদক পর্যায়ের নেতাদের মধ্য থেকে মন্ত্রী করার ব্যাপারে সরকারের উচ্চপর্যায়ের মনোভাব ইতিবাচক বলে গণভবনসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্যাবিনেট শাফল-রিশাফলের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। আমার মনে হয় কিছু কিছু পদ-পদবি এখনো খালি আছে। কাজেই এক্সপান্ড (সম্প্রসারণ) হতে পারে। যেমন মহিলা ও শিশু, এখানে কোনো মন্ত্রী নেই।
সূত্র জানায়, আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের সম্মেলন মাথায় রেখে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করার চিন্তাভাবনা চলছে। নতুন করে যারা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে পারেন, তাদের মন্ত্রিসভার বাইরে রাখা হবে। সাধারণ সম্পাদক পদটি দলের জন্য সার্বক্ষণিক হিসেবে রাখার আলোচনাও রয়েছে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী মহলে। সে ক্ষেত্রে আগামী সম্মেলনে যদি সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আনা হয়, তাহলে ওই পদের জন্য যাদের সম্ভাব্য হিসেবে ধরা হবে তাঁদের, মন্ত্রিসভার বাইরে রাখা হবে।
টানা তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। এ বছরের ৭ জানুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেয়। বর্তমান মন্ত্রিসভায় ৪৭ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী রয়েছেন। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীসহ পূর্ণমন্ত্রী ২৫ জন, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রী রয়েছেন। টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী রয়েছেন ইয়াফেস ওসমান ও মোস্তাফা জব্বার। মন্ত্রিসভার যে আকার, সে অনুযায়ী আরো দুজনকে টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী করার সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা, সাবেক এক আমলা এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদকের ভাগ্য খুলে যেতে পারে।
জানুয়ারিতে সরকার গঠনের পর গত মে মাসে বর্তমান মন্ত্রিসভায় প্রথম রদবদল হয়। ওই সময় ডা. মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী করা হয়।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *