বিনোদন প্রতিবেদক : ১৮ বছরে চিরতরুণ খায়রুন সুন্দরী। আজ থেকে ঠিক আঠারো বছর আগে এই দিনে মুক্তিপায় তুমল জনপ্রিয় ও ঝড় তোলা চলচ্চিত্র “খায়রুন সুন্দরী”। সময়টা বিষাদের পুরো ইন্ডাস্ট্রীতে অশ্লীলতা, নকল,কপি আর কাটপিসে ভরপুর, ঠিক সেই ঘোর অন্ধকারে এল মাহেন্দ্রক্ষণ!
চারিদিকে শোরগোল, উচ্চাকাঙ্খা ও স্বস্তির নিঃশ্বাস। কারন সিনেমাটা যে নিখাঁদ মৌলিক এবং একটি এলাকার জীবন্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করেই যার ভিত্তি।
সাধারণত মানুষ চায় মৌলিক, নির্ভেজাল, নিপাট গল্প,চিত্রনাট্য, কারিগরি কাজ,সুদক্ষ অভিনয়শৈলী,শ্রুতিমধুর গান,সেই সাথে চরিত্রের তারকা বা তারকার স্টারডম।
লৌকিক গল্প, হয়ত চেনা জানা, আশে পাশে অহরহ এসব ঘটনার বহু উপাখ্যান আছে কিন্ত সেলুলয়েডের পর্দায় তা পাওয়া মেলা ভার।
দর্শকের সামনে তাই ই আসল এবং এমন তারকা যিনি নারী বিদ্রোহের প্রতিকরূপে কখনও ‘বাঘিনী কন্যা’,কখনও বিদ্রোহী বধূ’,কখনও দুর্বার আন্দোলনের এসিপি শাহানা(বিপদজনক),কখনও বা অধিকার আদায়ের দূর্ধর্ষ রত্না (আমার প্রতিজ্ঞা), সেই আমার প্রতিজ্ঞার রত্নাই আবার দমে না গিয়ে নারী বিদ্রোহের বিক্রম বীর ‘মিস ডায়না’,যিনি কুপোকাত করে শত্রুকে পায়ের তলায় পিষে প্রতিশোধের নেশায় মত্ত তারকা।
আর সেই তারকারই একেবারে ভিন্ন অবতারে পর্দাপোস্থিতি নির্মম, নিরীহ,নিষ্পেষীত খায়রুন রুপি মৌসুমী! ভাবুন তো শত্রুকে ঘায়েল করে যিনি ‘দুশমন দুনিয়া’ বা ‘জজ সাহেবে’ দুরন্ত তাকে এমন নির্মিলীত করুন,অসহায়রুপে দেখে
দর্শকের কেমন আকুতি হয়! আকুতি বিকুতি যাই হোক মহাতারকা মৌসুমী তাঁর প্রজন্মের একমাত্র বৈচিত্র্যময় চরিত্রের সফল তারকা যিনি যে রুপে এসেছে, সে রুপেই বাজিমাত করেছে।
একটা ‘মেঘলা আকাশ’, ‘মাতৃত্ব’, ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’, ‘মেহের নেগার’, ‘ইতিহাস’, ‘বাংলার বউ’, ‘হারানো প্রেম’, ‘প্রথম প্রেম’ হয়ে,’লজ্জা’, ‘লুটতরাজ’, ‘কষ্ট’, ‘আজ গায়ে হলুদ’, ‘স্বজন’, ‘সুখের ঘরে দুঃখের আগুন’, ‘ভাঙচূর’, ‘দেনমোহর’, ‘বিশ্বপ্রেমিক’,’অন্তরে অন্তরে’,’ ‘গরীবের রাণী’, ‘এক বুক জ্বালা’, ‘মোল্লা বাড়ীর বউ’ বা ‘লাট সাহেবের মেয়ে’ হয়ে শেষ অব্দি ‘প্রজাপতি’র মোহিনী মৌসুমী থেকে ‘লিডারে’র নাদিয়া এতদূর পর্যন্ত তাঁর স্বমহিমায় বিস্তৃতি শুধু স্বকীয় বৈশিষ্ট্য, তুখোড় জনপ্রিয়তা,নিজস্ব স্টাইল বা স্বতন্ত্রধারা ও বৈচিত্র্যময় কাজে একচ্ছত্র করে রাখার কারনে। আজও সমুজ্জ্বল হয়ে দীর্ঘ ২৯ বছর টিকে আছে ভাঙা গড়ার ঢালিউডে। এ রেকর্ড তাঁর প্রজন্মের শুধু তাঁরই।
সেই স্টারডমের সফল সাক্ষী ‘খায়রুন সুন্দরী’ যা কালের স্রোতে বেগবান হয়ে দিনে দিনে আরো সমুন্নত হচ্ছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের দর্শকদের মাঝে। আজও নবীন, প্রবীনের উচ্ছাস, উদ্দীপনা খায়রুন যেন কিংবদন্তির আখ্যানভাগ হতে সৃষ্টি হয়েছে।
তাই তো সেই ১৮ বছর আগের খায়রুনে মুগ্ধ এখনকার নতুন দর্শক ও এবং যার ফলশ্রুতিতে বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে রেকর্ডসংখ্যক ভিউজ পাওয়ার নজীর ‘খায়রুন সুন্দরী’ তথা মহাতারকা মৌসুমীরই।
প্রজন্মের পরম্পরায় ‘খায়রুন সুন্দরী’র জনপ্রিয়তা বাড়বে গান বা পুরো সিনেমার ভিউ নিজের রেকর্ডকে দুমড়ে মুচড়ে নিজেই ঘটমান বর্তমান, অতীত বা ভবিষ্যতের মেলবন্ধন তৈরি করবে।তদ্ব্যিনে বাংলা চলচ্চিত্রে আরো একটা খায়রুন সুন্দরী উপখ্যান রচিত হোক অথবা অন্য কোন তারকার স্বমহিমায় তৈরি হোক আরো একাধিক বিস্তৃত উপাখ্যান, যা ঢালিউডের পাথেয় হয়ে থাকবে অনন্তকাল।