জয়ের জন্মদিন, বাংলাদেশের সাথেই যার বেড়ে ওঠা

জাতীয়

মাহমুদ মেনন খান : বাংলাদেশ নামের দেশটির সাথে সাথে বেড়ে ওঠা একজন মানুষ তিনি। যুদ্ধের ডামাডোলের মাঝেই জন্ম। এরপর একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যেসব চড়াই উৎড়াইয়ের মধ্য দিয়ে গেছে তিনিও গেছেন তারই মধ্য দিয়ে। প্রথমে জাতির জনকের দৌহিত্র হিসেবে। পরে জাতির জনকের কন্যার, দেশের চার মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সন্তান হিসেবে। ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই ঢাকায় পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনা দম্পতির ঘরে জন্ম নেন সজীব ওয়াজেদ জয়।


বিজ্ঞাপন

আধুনিক সময়ের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত তিনি। নিজেকে তৈরি করে নিয়েছেন দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে। ২০১৩’র কথা। সেবার জাতিসংঘের সাধারন অধিবেশনের সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দেওয়া নৈশভোজে গেলে সজীব ওয়াজেদকে দেখে বারাক ওবামা শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন, ‘ইওর সান ইজ ভেরি স্মার্ট অ্যান্ড ইন্টলিজেন্ট’।

সময়ের ব্যবধানে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেওয়ার স্বপ্নে মা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম ভরসার পাত্র হয়ে উঠতে পেরেছেন তিনি। মা তার ছেলের সে গুনাবলী ভালোই জানেন। বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার যে উদ্যোগ তাতে সজীব ওয়াজেদের রয়েছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও অবদান। সে কারণে ছেলেকে করে নিয়েছেন রাষ্ট্র পরিচালনায় নিজের উপদেষ্টা। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার সময় মা ও বাবার সঙ্গে জার্মানিতে ছিলেন জয়। এরপর মায়ের সঙ্গে ভারতে চলে যান। সেখানেই কাটে শৈশব ও কৈশোরের দিনগুলো।

তার জন্মদিনটি এবারও এলো করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে। দিনটি উপলক্ষে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে কোনো উদযাপন কর্মসূচি রাখেনি। তবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে খাদ্য, শিক্ষা উপকরণ ও করোনাভাইরাসের সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করবে।

নিজ গুনেই গুণান্বিত সজীব ওয়াজেদ জয়। ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে ‘গ্লোবাল লিডার অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। ভারতের নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজে পড়ালেখার পর যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ডিগ্রি নেন। পরে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে জনপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। ফলে তথ্য প্রযুক্তির পাশাপাশি রাজনীতিতেও তার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা।

দেশের সক্রিয় রাজনীতিতে নাম লেখান ২০১০ সালে। সেবছর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রাথমিক সদস্য পদ পান। দলীয় কোনো বড় পদে এখনো যাননি। তবে দলকে ঘিরে রয়েছে তার নানাবিধ কার্যক্রম। বঙ্গবন্ধুর তিন মূলনীতিকে রাষ্ট্রপরিলাচনার নীতি হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তাকে সোচ্চার হতে দেখা গেছে বার বার। দেশের রাজনৈতিক নানা সঙ্কটেও তাকে কথা বলতে দেখা গেছে। যা তার রাজনৈতিক সচেতনতা ও সক্রিয়তারই প্রমাণ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকেও একটি আধুনিক রাজনৈতিক দল হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় রয়েছে তার। আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)-এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দলটিকে পরিচালনার জন্য এবং সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন পরিবর্ধনের জন্য গবেষণাভিত্তিক পরামর্শ আসে এই প্রতিষ্ঠানটি থেকে। দলের সঙ্গে তারুণ্যের সংযোজনে রয়েছে এর একাধিক উদ্যোগ। ইয়ংবাংলা, লেটস টক, পলিসি ক্যাফের মতো সাড়া জাগানো কিছু জাতীয় ভিত্তিক কর্মসূচি নিয়ে সিআরআই তার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ গঠনে তরুণদের কাজের স্বীকৃতি দিতে ইয়াং বাংলা দিয়ে আসছে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’। এসব কর্মসূচির অন্যতম রূপকার সজীব ওয়াজেদ জয়।

ডিজিটাল বাংলাদেশ কনসেপ্ট নিয়ে বাংলাদেশের গত এক দশকের পথ চলা এই করোনা মহামারির মধ্যেও দেশ পরিচালনায় সরকারকে নানাবিধ সুবিধা দিচ্ছে। করোনায় দেশে অনেক মৃত্যুর মধ্যে তার জন্মদিনে আনন্দ উদযাপন হয়তো হবে না, তবে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে থাকবে নানান কর্মসূচি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজন করেছে বিশেষ ওয়েবিনার। যার শিরোনাম- ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অগ্রসরমান ডিজিটাল প্রযুক্তি, পথিকৃৎ মুজিব হতে সজীব’।

মুজিব নামের সঙ্গে সজীব নামটিকে জুড়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে দল তাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। জন্মদিন শুভ হোক।
লেখক : সম্পাদক, অপরাজেয় বাংলা