পরীমনিকে বিপথে নেওয়ার নেপথ্যে প্রযোজক রাজ

অপরাধ বিনোদন

রিমান্ডে পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদ


বিজ্ঞাপন

বিনোদন প্রতিবেদক : প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ। উঠতি বয়সি তরুণীদের নায়িকা ও মডেল বানানোর ফাঁদে ফেলে নানা ধরনের অনৈতিক কাজে ব্যবহার করত সে।


বিজ্ঞাপন

মফস্বল থেকে আসা শামসুন্নাহার স্মৃতি তার হাত ধরেই চিত্রনায়িকা পরীমনি হয়ে ওঠে। পরবর্তীকালে পরীমনিকে বিপথে নিয়েছে রাজ।

এভাবে নায়িকা-মডেলদের বিপথে নিয়ে নানা অপকর্মের মাধ্যমে এ প্রযোজক ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ’ বনে যান।

তার দেখানো বিলাসী জীবনের স্বপ্নে বিভোর হয়ে সর্বনাশ হয়েছে অনেক তরুণীর। আর এসব কাজে সমন্বয়কের ভূমিকায় থেকে রাজকে সহযোগিতা করত দেলোয়ার নামের এক ব্যক্তি।

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে রাজের কাছ থেকে এমন তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে বিয়ের পর অনেকটা ‘ভালো হয়ে গেছেন’- এমনটি সিআইডির কাছে দাবি করেন রাজ।

সূত্র জানায়-চিত্রনায়িকা পরীমনি, প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ, আশরাফুল ইসলাম ওরফে দীপু মামা, ম্যানেজার সবুজ আলী ও মডেল মরিয়ম আক্তার মৌকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করেছে পুলিশ।

রিমান্ড শেষে আজ তাদের আদালতে উপস্থিত করবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। যেহেতু বুধবার সিআইডিতে আরও ছয়টি মামলা হস্তান্তর করা হয়েছে, সে কারণে এসব মামলায় ফের রিমান্ড আবেদন করা হতে পারে। এ নিয়ে সিআইডি এ সংক্রান্ত ১৪টি মামলার দায়িত্ব পেল।

এর আগে ৪ আগস্ট রাতে প্রায় ৪ ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমনি ও তার সহযোগীকে আটক করে র‌্যাব।

তার বাসা থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। পরদিন পরীমনির বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়। পুলিশের আবেদনে পরীমনির ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

র‌্যাব, থানা পুলিশ, ডিবি ঘুরে ৪র্থ সংস্থা হিসাবে পরীমনির মাদক মামলার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সূত্র জানায়, রিমান্ডে পরীমনি তার বিরুদ্ধে আনা মাদকসংক্রান্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে একাধিক প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করেন। এদের অনেকের সঙ্গেই তার হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ হতো।

বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত যাতায়াতসহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে পরীমনি সেভাবে মুখ খুলতে রাজি হননি।

পরে দীপু মামা, নজরুলসহ বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য তার সামনে তুলে ধরা হয়। তখন তিনি সেই বিষয়গুলো স্বীকার করেন।

অন্যদিকে রিমান্ডের শুরুতে নজরুল রাজ দাবি করেন, তিনি আগে কিছু ভুল করলে ও বিয়ের পর ‘ভালো হয়ে’ গেছেন। এখন সেভাবে নারীদের কাছে যান না। আর কাজের প্রয়োজনে অনেক সময় অভিনেত্রী ও মডেলদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

তবে জিজ্ঞাসাবাদের শুরুর দিকে নির্দোষ সাজার চেষ্টা করা রাজ একপর্যায়ে এ সংক্রান্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। কীভাবে তার চক্রে নারীদের সম্পৃক্ত করেছেন সেই বিষয়েও বিস্তারিত বলেছেন।

এক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক ছিল তার অন্যতম হাতিয়ার। ফেসবুকে তথাকথিত মডেল বানিয়ে অনেক তরুণীর ছবি ব্যবহার করে প্রভাবশালীদের থেকে হাতিয়েছেন মোটা অঙ্কের টাকা।

সিআইডি জানায়, মডেল-অভিনেত্রী ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে করা ১৫টি মামলার মধ্যে ১৪টিরই তদন্ত করছে তারা।

আসামিদের মাদক কারবার, প্রতারণা ও পর্নোগ্রাফিসংক্রান্ত অভিযোগগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। পরীমনি, রাজ, দীপু, সবুজ ও মৌয়ের পাশাপাশি এ সংক্রান্ত মামলার অন্য আসামিদের অপরাধের ফিরিস্তিও খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন তারা।

এরমধ্যে খিলক্ষেত থানায় পিয়াসা এবং মাহমুদুল হাসান জিসানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা, হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

পাশাপাশি অভিনেত্রী-মডেল কেলেঙ্কারির ঘটনার পর পর্নোগ্রাফি আইনে দায়েরকৃত মামলাটির বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। এর আগে বুধবার বিতর্কিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা, চিত্রনায়িকা পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ করিম জিমি এবং কবির হোসেনের রিমান্ড ও জামিন আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে।

গুলশান ও ভাটারা থানার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের দুই মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড শেষে আসামি পিয়াসাকে বুধবার আদালতে হাজির করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সেদিন আবার ৫ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।