যশোরে আন্ত:জেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্য গ্রেফতার

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিনিধি : যশোর ডিবি পুলিশ কর্তৃক আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্য গ্রেফতার, লুন্ঠিত মাইক্রোবাস, মোবাইল ও বিভিন্ন মালামাল, নগদ টাকাসহ মোট ৩৬ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকার মালামাল উদ্ধার এবং ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার, ২টি চাকু জব্দ হয়েছে, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।


বিজ্ঞাপন

ঘটনার বিবরণে জানা গেছে বৃহস্পতিবার ১২ আগস্ট সকাল অনুমান ১০ টায় বাঘারপাড়া থানাধীন সুকদেবনগর এলাকায় পাঁকা রাস্তার উপর স্থানীয় জনগণ সংবাদ পেয়ে ১টি মাইক্রোবাসসহ ৪ জন ডাকাত সদস্যকে আটক করেন।


বিজ্ঞাপন

সংবাদ পেয়ে বাঘারপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আটককৃত ডাকাতদেরকে গ্রেফতার করেন এবং লুন্ঠিত মাইক্রোবাস ও গাড়িতে থাকা ১,৫০,০০০/- টাকার বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করেন। জানা যায়, গাড়ির ড্রাইভার ইকবাল হোসেন ও সঙ্গীয় আশরাফুজ্জামান তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাস যোগে ঢাকা থেকে ১২ আগস্ট বৃহস্পতিবার ভোর ৫ টা ৪৫ মিনিটে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে রূপসা ফেরিঘাট দিয়ে খুলনা ডুমুরিয়া থানাধীন গুটুদিয়া নামক স্থানে পৌঁছালে ১টি মাইক্রোবাস ও ১টি প্রাইভেটকার দিয়ে বেরিকেট দিয়ে তাদের গতিরোধ করে অস্ত্র দ্বারা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদেরকে আটক করে চোখ ও হাত-পা বেঁধে সকাল অনুমান পৌনে ৯ টায় বাঘারপাড়া থানাধীন সাইটখালী এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে দেয়।

স্থানীয় জনগণ তাদেরকে উদ্ধার করে ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে মোবাইল ফোনে বাঘারপাড়া থানা পুলিশকে অবহিত করে এলাকার লোকজনের প্রচেষ্টার একপর্যায়ে সকাল অনুমান ১০ টার সময় সুকদেবনগর এলাকায় ৪ জন ডাকাতকে লুণ্ঠিত মাইক্রোবাসসহ হাতে নাতে ধৃত করে। ঘটনা সংক্রান্তে ইকবাল হোসেন, পিতা-আবুল হোসেন, সাং- হাড়দাহ, থানা-সাতক্ষীরা সদর, জেলা-
সাতক্ষীরা বাদী হয়ে বাঘারপাড়া থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করলে বাঘারপাড়া থানার মামলা নং-০৭ তাং-১২/০৮/২০২১ ইং, ধারা-৩৯৫/৩৯৭/৪১২ পেনাল কোড রুজু হয়।

ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর ও স্পর্শকাতর হওয়ায় জেলার পুলিশ সুপার এর নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখার উপর তদন্তভার ন্যাস্ত করেন। গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মামলাটি এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম এর উপর ন্যাস্ত করেন।

পুলিশ সুপার, যশোর এর দিক-নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাহাঙ্গীর আলম এঁর তত্ত্বাবধানে ডিবি’র অফিসার ইনচার্জ রুপন কুমার সরকার, পিপিএম এর নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম এসআই ইদ্রিসুর রহমান, এসআই শাহীনুর রহমান, এসআই শামীম হোসেনদের সমন্বয়ে একটি চৌকশ টিম তদন্তে নামে।

আসামীদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক খুলনা মেট্রোপলিটনের খালিশপুর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ১টি প্রাইভেটকার ও ২টি চাকু জব্দ করেন এছাড়াও লুন্ঠিত নগদ ২০,০০০/- টাকা ও ২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ধৃত ও পলাতক আসামীগণ একটি সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য।

আসামী মিজানুর রহমান পুলিশ বিভাগ থেকে একইরূপ ঘটনায় ২০১৫ সালে চাকুরীচ্যুত হয়ে একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল তৈরী করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাদের ব্যবহৃত গাড়ী যোগে ডিবি পুলিশ/র‌্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ছিনতাই ডাকাতি সংঘটন করে থাকে বলে জানা যায়।

আরো জানা যায়, গাড়িতে স্বর্ণ আছে তথ্য পেয়ে আসামীরা রুপসা ফেরিঘাট থেকে পিছু নিয়ে খুলনা ডুমুরিয়া থানা এলাকায় গাড়িটি গতিরোধ করে গাড়িতে থাকা বাদী ও সঙ্গীয় ১ জনকে আটক করে।

বাদীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গাড়িতে কোন স্বর্ণ ছিল না। এই বিষয়ে গভীর তদন্ত অব্যাহত আছে।

গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম ঠিকানাঃ

১। মিজানুর রহমান(৪০), পিতা-মৃত মুক্তার হোসেন, সাং-নয়নপুর, থানা-নড়াগাতি, জেলা-নড়াইল,
২। জাহাঙ্গীর হোসেন(৩০), পিতা-মোঃ জমাত আলী, সাং-মাছখোলা, থানা ও জেলা-সাতক্ষীরা,
৩। দেলোয়ার হোসেন(৫২), পিতা-নাজির উদ্দিন শেখ,
৪। মোঃ কামরুজ্জামান(৩৫), পিতা-নুরুল ইসলাম, উভয় সাং-সেতাই, থানা-শার্শা, জেলা-যশোর

উদ্ধারকৃত আলামতঃ
১। লুন্ঠিত মাইক্রোবাস মুল্য- ৩৫,০০,০০০/- টাকা।
২। লুন্ঠিত মালামাল- মুল্য ১,৫০,০০০/- টাকা।
৩। লুন্ঠিত নগদ – ২০,০০০/- টাকা।
৪। লুন্ঠিত ২টি মোবাইল মূল্য-১,৬৫,০০০/- টাকা। মোট = ৩৬,৮৫,০০০/- টাকা উদ্ধার।
ডাকাতি ব্যবহৃত আলামত জব্দ
১। ১টি প্রাইভেটকার।
২। ২টি বার্মিজ চাকু।