দীর্ঘ ৩বছর পর বোমা হামলা মামলার আসামী গ্রেফতার

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিনিধি : বগুড়া সদর থানার মামলা নং-৬১, তারিখ-১৩/০৭/২০১৮ খ্রিঃ, পেনাল কোড তৎসহ বিস্ফোরক দ্রবাদি আইন এর তদন্তে প্রাপ্ত সন্দিগ্ধ আসামী মোঃ সাদ্দাম আলী @ সাদ্দাম (২৯) কে গত ইং ২৯/০৮/২০২১ তারিখ রাত্রি ২১.০৫ ঘটিকায় বগুড়া জেলার সদর থানাধীন জামিল নগর মোড় নামক এলাকা হইতে গ্রেফতার করলো পিবিআই বগুড়া জেলা।
গত ইং ০৫/১২/২০১৫ তারিখে বগুড়া জেলার সদর থানাধীন জামিল নগর গ্রামস্থ জনৈক মোঃ ওয়াহেদুর রহমান এর ছেলে মোঃ রাহাত আহম্মেদ রিটু (৪৮) সহ জহুরুল, শামীম, রউফ, দেলোয়ারগণ মালগ্রাম মৌজাস্থ (জামিলনগর) বাড়ীসহ মোট ৩৫ শতক সম্পত্তি জনৈক লয়া মিয়া দিং এর নিকট হতে ক্রয় করেন। উক্ত সম্পত্তির উপর বাড়িঘর, গরু রাখার সেড, বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ভোগ দখল করতে থাকে। উক্ত সম্পত্তি দেখভাল করার জন্য মোঃ বাদল, পিতা-মোঃ আব্দুল জলিল, সাং- জাঙ্গালিয়া (আগেরপাড়া), থানা- সাঘাটা, জেলা- গাইবান্ধা কে কেয়ারটেকার হিসাবে নিয়োগ করেন। উক্ত কেয়ারটেকার বাড়ী দেখাশুনা ও ভাড়া আদায় করেন এবং উক্ত বাড়িতে বসবাস করেন। গত ১০/০৭/২০১৮ তারিখ সময় সন্ধ্যা আনুমানিক ০৭.০০ ঘটিকায় একই এলাকার জনৈক মোঃ মমতাজ এর ছেলে মোঃ নিয়াজুল ইসলাম মোশারফসহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০জন সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ দলবদ্ধভাবে হাতে ছোড়া, চাইনিজ কুড়াল, পিস্তলসহ জমির মালিক মোঃ রাহাত আহম্মেদ রিটু (৪৮) এর স্বত্ত্বদখলীয় বাড়িতে বেআইনীভাবে প্রবেশ করে কেয়ারটেকার বাদলকে বাসার বাহিরে নিয়ে যায়। এ সময় আসামী নিয়াজুল ইসলাম মোশারফ বাদী ও অন্যান্যদের খোঁজ করে। কেয়ারটেকার বাদী ও অন্যান্যদের অবস্থান জানে না মর্মে বলায় আসামী মোশারফ এর হাতে থাকা ছোড়া দ্বারা প্রাণ নাশের হুমকী দিয়ে ০৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা চঁাঁদা দিতে বলে।


বিজ্ঞাপন

গত ১২/০৭/২০১৮ তারিখে বিকাল অনুমানিক ০৪.০০ ঘটিকায় সহকারী কমিশনার (ভুমি) সদর, বড়গোলা, বগুড়া অফিসের সামনে জমির মালিক মোঃ রাহাত আহম্মেদ রিটু কে একা পেয়ে উক্ত আসামীগণ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে পূর্বের দাবিকৃত চঁঁাঁদার টাকা চায়। জমির মালিক মোঃ রাহাত আহম্মেদ রিটু আসামীগণের দাবীকৃত চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামীগণ তাকে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করে হুমকী দিয়ে চলে যায়। অতঃপর জমির মালিক মোঃ রাহাত আহম্মেদ রিটু উক্ত ঘটনাটি মৌখিকভাবে থানা পুলিশকে অবহিত করে। থানায় খবর দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে সন্ত্রাসী নিয়াজুল ইসলাম মোশারফ সহ ৮/১০ জন সন্ত্রাসীগণ ক্ষিপ্ত হয়ে ঐ দিনই রাত্রী আনুমানিক ০৯.০০ ঘটিকায় ছোরা, চাইনিজ কুড়াল, ককটেল, রামদাসহ সুসজ্জিত হয়ে জমির মালিক মোঃ রাহাত আহম্মেদ রিটু এর বাড়ীতে বে-আইনীভাবে প্রবেশ করতঃ বাড়ীর বারান্দায় পরপর ২/৩টি ককটেল বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাসের সৃষ্টি করে। সে সময় অন্যান্য আসামীরা তাদের হাতে থাকা রাম দা, চাইনিজ কুড়াল দিয়ে বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে আনুমানিক ২০,০০০/-(বিশ হাজার) টাকা ক্ষতিসাধন করে। সে সময় উক্ত বাড়ী কেয়ারটেকার বাদল প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসী মোশারফ সহ অজ্ঞাতনামা সন্ত্রানীগণ কেয়ারটেকার বাদলকে বেদম মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম হয়। তখন আসামীগণ বাদলের দুয়ারী ঘরে প্রবেশ করে ট্রাঙ্কে রক্ষিত ১০হাজার টাকা টাঙ্ক ভাঙ্গিয়া ছিনিয়া নেয়। উক্ত ঘটনায় জমির মালিক মোঃ রাহাত আহম্মেদ রিটু (৪৮) বাদী হয়ে সন্ত্রাসী মোঃ নিয়াজুল ইসলাম মোশারফ সহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০জন আসামী করে বগুড়া সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ আসামী মোঃ নিয়াজুল ইসলাম মোশারফ সহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০জন আসামীগণের বিরুদ্ধে বাদীর আনীত অভিযোগের ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করতঃ বিস্ফোরক দ্রবাদি আইন-১৯০৮ এর ৫ ধারার অপরাধ সাক্ষ্য প্রমাণে অপ্রমাণিত মর্মে উল্লেখ করে পেনাল কোডের ৪৪৮/৩২৩/৩৮০/৪২৭/৫০৬ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অতঃপর মামলার বাদী মোঃ রাহাত আহম্মেদ রিটু থানা পুলিশের দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে নারাজীর প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ আদালত বাদীর নারাজীর আবেদন শুনানী অন্তে মঞ্জুর করতঃ মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই বগুড়া জেলাকে নির্দেশ প্রদান করেন। বিজ্ঞ আদালতের আদেশে পিবিআই বগুড়া জেলা মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। বিজ্ঞ আদালতের নিদের্শে পুলিশ সুপার পিবিআই বগুড়া জেলা মহোদয়ের হাওলা মতে এসআই (নিঃ) মোঃ জাকারিয়া বিধি মোতাবেক মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।

ডিআইজি পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার) পিপিএম, এর সঠিক তত্ত্ববধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই বগুড়া জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মোঃ আকরামুল হোসেন এর সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির এসআই (নিঃ) মোঃ জাকারিয়া গত ইং ২৯/০৮/২০২১ তারিখ রাত্রি ২১.০৫ ঘটিকায় তদন্তে প্রাপ্ত সন্দিগ্ধ আসামী মোঃ সাদ্দাম আলী @ সাদ্দাম (২৯), পিতা- মৃত চাঁন মিয়া, সাং-জামিলনগর, থানা-বগুড়া সদর, জেলা-বগুড়াকে বগুড়া জেলার সদর থানাধীন জামিল নগর মোড় নামক এলাকা হইতে গ্রেফতার করে।

এ বিষয়ে পিবিআই বগুড়া জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মোঃ আকরামুল হোসেন জানান, দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা দীর্ঘ সময় তদন্ত করে সন্দিগ্ধ আসামী মোঃ সাদ্দাম আলী @ সাদ্দাম (২৯) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী মোঃ সাদ্দাম আলী সাদ্দাম ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করলে অদ্য ইং ৩০/০৮/২০২১ তারিখ বিধি মোতাবেক ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের লক্ষ্যে তাকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হলে আসামী মোঃ সাদ্দাম আলী সাদ্দাম বিজ্ঞ আদালতে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।