মানবপাচারকারী চক্রের ২সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বর্তমানে দেশে মানব পাচারের মত ঘৃন্যতম অপরাধ থেমে নেই। মানব পাচারকারী চক্রের টার্গেট দরিদ্র মানুষ।


বিজ্ঞাপন

পাচারকারীরা বিদেশে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে সহজ সরল এই মানুষগুলোকে ফাঁদে ফেলে নিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার জগতে। পাচারকারীদের পাতা জালে জড়িয়ে অবৈধ পথে বিদেশ পাড়ি দিতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছে এসব মানুষ। যার অধিকাংশই নারী।

এসকল নারীদেরকে বিদেশে লোভনীয় ও আকর্ষণীয় বিভিন্ন পেশায় চাকুরীর কথা বলা হলেও তাদেরকে বিক্রি করে দেওয়া হয় এবং জোরপূর্বক সম্পৃক্ত করা হয় ডিজে পার্টিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে।

এই পর্যন্ত র‌্যাব-১ আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের বিদেশী নাগরিকসহ অসংখ্য মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।

এসকল মানব পাচারকারী চক্রের নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে এবং সম্প্রতি রাজধানীসহ বেশ কিছু এলাকায় মানব পাচারকারী চক্রের তথ্য পাওয়া যায়।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রবিবার ৩১ অক্টোবর আনুমানিক ২ টায় র‌্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিএমপির বনানী থানাধীন কড়াইল বস্তি এলাকা হতে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য মোঃ সুজন সিকদার (২১), জেলা-নড়াইল এবং মোঃ রমজান মোল্লা (২৬), জেলা-বাগেরহাট’দ্বয়কে গ্রেফতার করে। এসময় ধৃত আসামীর নিকট হতে ০২ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

ধৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মোঃ সুজন সিকদার এই মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা। ধৃত আসামী সুজন, রমজান এবং তাদের অন্যান্য সহযোগীরা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবত পার্শ্ববর্তী দেশে নারী পাচার করে আসছিল।

তারা প্রথমে দরিদ্র সুন্দরী নারীদের টার্গেট করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রেমের সম্পর্ক চলাকালীন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভিকটিমদের কাছ থেকে তাদের ব্যক্তিগত আপত্তিকর ছবি জোরপূর্বক তাদের মোবাইল ফোনে ধারন করে।

ধৃত আসামীরা ভিকটিমদের বিশ্বস্ততা অর্জন করার জন্য মৌখিকভাবে বিয়ে করে। বিয়ে করার পরে ভিকটিমদের নগ্ন ছবি এবং তাদের অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ছবি তাদের মোবাইলে ধারণ করে।

পরবর্তীদের ভিকটিমদের পার্শ্ববর্তী দেশে লোভনীয় ও আকর্ষণীয় পেশায় চাকুরীর কথা বলে ধৃত আসামীরা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পাচার করে।

কোন নারী যদি পার্শ্ববর্তী দেশে যেতে রাজি না হত তাহলে তাদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিত। পাচারকৃত নারীদের বিভিন্ন পতিতালয়ে বিক্রি করা হয় এবং জোড়পূর্বক সম্পৃক্ত করা হয় ডিজে পার্টিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে।

ধৃত আসামীদের জিজ্ঞসাবাদে আরও জানা যায়, তারা যশোর সীমান্ত এলাকা দিয়ে নারী পাচার করে থাকে। নারী পাচারের ক্ষেত্রে যশোর সীমান্ত পারাপারে পলাতক আসামী হোসেন সহায়তা করে থাকে।

পালতক আসামী হোসেন পাচারকৃত নারীদের পার্শ্ববর্তী দেশের এই চক্রের অন্য সহযোগীর নিকট হস্তান্তর করে থাকে। ধৃত আসামী মোঃ সুজন সিকদার ৩ টি বিয়ে করে, যার মধ্যে খাদিজা আক্তার নামের ১ জনকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করে দেয়।

বর্তমানে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের উদ্দেশ্যে ধৃত আসামী সুজন এক নারীকে বিয়ে করার প্রস্তুতি নেয় এবং রমজান তার বর্তমান স্ত্রী মারা গেছে মর্মে মিথ্যা বলে অপর এক নারীকে বিয়ে করে।

এই ২ জন নারীকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের জন্য গ্রেফতার কৃতরা ভারতীয় জনৈক ব্যক্তির কাছ থেকে ২৮,০০০ টাকা গ্রহণ করে বলে জানায়। র‌্যাবের তৎপরতায় ধৃত আসামীরা দুই ভুক্তভোগীকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারে ব্যর্থ হয়।