কালব রিসোর্টে সংস্কারের ছলে ২৬ কোটি টাকার ভাউচারে অর্ধেকই লোপাট!

অপরাধ

দুর্নীতি দমন কমিশন ও সমবায় অধিদপ্তরের প্রতি তদন্তের আহবান


বিজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক : দি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লীগ অব বাংলাদেশ লি: (কালব) এর গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জস্থ কুচিলাবাড়ীতে রিসোর্ট এন্ড কনভেনশন হল পুরাতন কাজ ঘষা মাজা করে প্রায় ২৬ কোটি টাকার বিল ভাউচার করে অর্ধেক টাকাই আত্মসাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নামসর্বস্ব ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জাহানারা ট্রেডার্স রিসোর্টের তথাকথিত সংস্কারের অধিকাংশ কাজ করেছে। প্যাডসর্বস্ব কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা ব্যতিত রিসোর্টের কাজ করা জাহানারা ট্রেডার্সের নেপথ্য মালিক কালবের সেক্রেটারী ও রিসোর্ট পরিচালনা কমিটির সদস্য আরিফ মিয়া। রিসোর্ট সংস্কার কাজের অন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আলমগির এন্টারপ্রাইজ,ইয়াস আর্কিটেক্ট ও মেক্সিমকো ইলেক্ট্রনিক্স এর মালিক আরিফ মিয়ার আত্মীয় স্বজন। দুর্নীতির সুবিধাভোগী চেয়ারম্যান জোনাস ঢাকী,পরিচালক ও রিসোর্ট পরিচালনা কমিটির সদস্য নোয়েল চার্লস গমেজ এবং একাউন্টস ম্যানেজার ও সকল দরপত্র কমিটির সদস্য সচিব ফিরোজ আলম। এছাড়া,দুর্নীতির সুবিধাভোগীর সন্দেহের তীর পরিচালক ও ইন্টারনাল অডিট কমিটির আহবায়ক বাবলু কোড়াইয়া’র দিকে। কেননা,রিসোর্টে অনিয়ম দুর্নীতির কোন আপত্তি ইন্টারনাল অডিট কমিটির রিপোর্টে করা হয়নি।
নিছক অর্থ আত্মসাতের জন্যে রিসোর্টে সকল কাজ করা হয়েছে নি¤œ মানের। নির্মান কাজে নি¤œ মানের ইট,সিমেন্ট,বালু ব্যবহার করা হয়েছে। সুইমিং পুল,এসি,আসবাব পত্র মানসম্মত নয়। বর্তমান বোর্ড বিগত বোর্ডের ২০১৭ সালে সম্পাদিত কাজের সংস্কারের নামে তথা রুম ডেকোরেশন,সুইমিং পুল,বাগান,মাটি ভরাটের ছলে ২৬ কোটি টাকার অধিক ব্যয় দেখিয়েছে। বিনিয়োগের জন্যে সমবায় অধিদপ্তর থেকে বিধিবদ্ধ অনুমোদন নেয়া হয়নি। সমবায় অধিদপ্তরের অডিট রিপোর্টে রিসোর্টের ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির ছিটাফোটাও তুলে ধরা হয়নি। কালবের ঘুষ উপঢৌকনে আচ্ছন্ন যুগ্ম নিবন্ধক নবিরুল ইসলাম সহ অন্যান্য অডিট কর্মকর্তাদের অনিয়ম দুর্নীতি চোখ এড়িয়ে গেছে। বর্তমান বোর্ডের ইন্টারনাল অডিট কমিটিও রিসোর্টের দুর্নীতির বিষয়ে সমবায় অধিদপ্তরের মত তমাসাচ্ছন্ন। বর্তমান বোর্ডের সময়ই রিসোর্টে বেশি অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে। পুরাতন কাজ ঘষা মাজা করার নামে ২৬ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ দেখিয়ে অধিকাংশ টাকাই আত্মসাত করা হয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠান রিসোর্টের কথিত উন্নয়নের কাজ করছে। যার নেপথ্য প্রধান কারিগর আরিফ মিয়া। । দরপত্র আহবান ও দরদাতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ও বিধিমালা অনসরন করা হয়নি। ১৭ অক্টোবর সাধারন সভায় ডেলিগেটগণ রিসোর্টে ঠিকাদার নির্বাচন, জাহানারা ট্রেডার্সের মত নামসর্বস্ব একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে সকল কাজ করানো ও অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদ জানান। অথচ বর্তমান ইন্টারনাল অডিট কমিটির রিপোর্টে তার লেশমাত্র নেই।
উল্লেখ্য,কালবের গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জস্থ কুচিলাবাড়ীতে রিসোর্ট এন্ড কনভেনশন হল সমবায় প্রতিষ্ঠানটির লোকসানের বোঝা আরো ভারি করেছে। কালব প্রতিমাসে প্রায় ৩ কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে। সদস্যদের আপত্তি, ব্যাপক সমালোচনা সত্ত্বেও কেবল নিজেদের পকেট ভারি করার জন্যে পর্যায়ক্রমে প্রায় ১৪৮,৬৫,১৯০০০ টাকা বিনিয়োগ করেছে। এরমধ্যে জমি ক্রয়ে ৬৩,৪৯,০৭,০০০ টাকা এবং রিসোর্ট উন্নয়নের নামে ব্যয় হয়েছে ৮৫,১৬,১১,০০০ টাকা। ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে বিনিয়োগকৃত টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। এখান থেকে আয় বলতে তেমন কিছুই নেই। ভবিষতেও আয়ের তেমন কোন সম্ভাবনা না থাকলেও বিনিয়োগ করা বন্ধ নেই। এখান থেকে আয় না হলেও চেয়ারম্যান জোনাস ঢাকী-সেক্রেটারী আরিফ মিয়া সহ কর্তা ব্যক্তিদের পকেটভারি ও নিজেদের প্রমোদকুঞ্জ বানানোর ব্যবস্থা হয়েছে ঠিকই।
দুর্নীতি দমন কমিশন ও সমবায় অধিদপ্তর এবং কালবের অভিজ্ঞ ডেলিগেটদের দিয়ে একটি কমিটি করে তদন্ত করলে রিসোর্টে যে ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে টাকা আত্মসাত করা তার প্রমান পাওয়া যাবে বলে সংশ্লিষ্টগণ মনে করছেন।