আজকের দেশ রিপোর্ট ঃ বিদেশে আশ্রিত কথিত মিডিয়া কর্মী খ্যাত গুজব প্রচারকারীদের দিয়ে দেশের সাধারণ জনগণের মাঝে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানোর জোর চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। যদিও সচেতন নাগরিক সমাজ তাদের এই গুজবে প্রভাবিত না হয়ে বরং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিনোদনের খোরাক হিসেবে বেছে নিয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের কয়েকটি এনজিও থেকে ভুল তথ্য পেয়ে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্র।
পরবর্তীতে সকল তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে নিজেদের ভুল বুঝতে পারে। এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে ফোন করে ভুল স্বীকার করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
এতে পুনরায় মাথাব্যথা শুরু হয়েছে গুজব সেলের। সুইডেনে আশ্রিত তাসনিম খলিল উঠে-পড়ে লেগেছেন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে। সম্প্রতি তার আন্ডারগ্রাউন্ড নিউজ পোর্টাল নেত্র নিউজে ‘যুক্তরাষ্ট্রে তদবিরের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যয় ২.৪ মিলিয়ন ডলার’ শিরোনামে ভুয়া তথ্য প্রচার করেছে। যার কোনো ভিত্তি নেই।
সেখানে তিনি দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসহ দেশটির সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে তদবিরের কাজে একটি লবিং ফার্মকে ৮ বছরে ২.৩ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু আদতে যুক্তরাষ্ট্রে কোনো লবিং ফার্মের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সম্পর্ক নেই।
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র ফ্রন্ট- এনইডি (ন্যাশনাল এনডৌমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি); যারা বিভিন্ন দেশের সরকার উৎখাতের গ্রাউন্ড তৈরিতে সক্রিয়। বিশ্বের প্রগতিশীল এবং উদীয়মান অর্থনীতির বিভিন্ন দেশকে ধ্বংস করতে এবং সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সেই ষাটের দশক থেকে।
দেশগুলো যেন মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াতে না পারে, সেজন্য এনইডি নেপথ্যে সরকারবিরোধী বিভিন্ন প্রতিপক্ষ তৈরীতে অর্থায়ন এবং নানান সাহায্য দেয়।
এনইডি’র হয়ে কাজ করে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যম ও সংবাদপত্র। যেখানে সরকারবিরোধী অপপ্রচার, গুজব, প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাওয়া হয় অবিরতভাবে। জনমতকে ভিন্নপথে পরিচালিত করে উসকে দেয়া হয়। যেন একটি ক্যু ঘটালে জনগণ সেটি সহজেই মেনে নিতে পারে- এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
এনইডি’র অর্থায়নে চলছে দেশের বেশ কিছু পত্রিকা। সাথে আছে বিদেশে পলাতক দেশবিরোধী চক্রের মালিকানার কয়েকটি পোর্টাল। সংবাদ প্রকাশের নামে পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের রক্তস্নাত মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি, প্রধানমন্ত্রী, সরকার ও সেনাবাহিনীকে নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে চক্রটি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষায় কোনো দেশের কোনো গোষ্ঠীকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেলে কোনো দেশের সরকারকে কৌশলে সরানোর পটভূমি তৈরি করে এনইডি। এজন্য তারা ওসব দেশের স্থানীয় বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে নেগোশিয়েট করে বিভিন্ন ইস্যুতে জনগণ ক্ষেপিয়ে তোলে। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ওই দেশ ও সরকার সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করে চাপ সৃষ্টি করে।
বিভিন্ন সময় নিকারাগুয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, কোরিয়া, ইরান, ইউক্রেন, চিলিসহ অন্তত এক ডজন দেশের সরকার হঠানোর জন্য সেসব দেশে উগ্রবাদীদের দিয়ে সহিংসতা ছড়াতে মোটা অর্থ বিনিয়োগ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে ৭৫ এর পট পরিবর্তনের বেনিফিসিয়ারি ছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেই জঘন্য হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা।
সেই এনইডি’র অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে তাসনিম খলিলের আন্ডারগ্রাউন্ড পোর্টাল নেত্র নিউজ।
যার ইংরেজি মাধ্যমটির দায়িত্বে আছেন যুদ্ধাপরাধীদের লবিস্ট এবং ড. কামাল হোসেনের জামাতা ডেভিড বার্গম্যান। দুই গুজববাজের দায়িত্ব বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে করে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা এবং উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করা।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়টি কংগ্রেস সদস্যদের কাছে তুলে ধরতে কনসালটিং ফার্মকে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু এতে কোনো বিনিয়োগ করা হয়নি। দেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন দেখে ঈর্ষান্বিত একটি মহল এটা নিয়ে অপপ্রচার করছে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে স্বার্থান্বেষী মহল এমনটি করছেন বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় বিএনপি-জামায়াতের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে পারবেনা।
জনগণ তাদের আসল রূপ দেখেছে।
তাই গুজব ছড়িয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করাই ওদের মূল লক্ষ্য। দেশের সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে চোখ-কান খোলা রাখা খুবই জরুরি।