বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়নের পৃথক অভিযানে ২,৫৮,০০০ পিস ইয়াবা এবং ২ জন মায়ানমার নাগরিকসহ ৪ জন আটক

অন্যান্য এইমাত্র

নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) কর্তৃক পরিচালিত পৃথক দু’টি অভিযানে ৭,৭৪,০০,০০০ (সাত কোটি চুয়াত্তর লক্ষ) টাকা মূল্যমানের ২,৫৮,০০০ পিস নিষিদ্ধ ঘোষিত ইয়াবা এবং ২ জন মিয়ানমার নাগরিকসহ সংঘবদ্ধ ইয়াবা পাচারকারী চক্রের ৪ সদস্যকে আটক করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

গত বুধবার ২৬ জানুয়ারি, মিয়ানমার হতে অবৈধভাবে ১টি ট্রলার ৪ জন ব্যক্তিসহ (২ জন বাংলাদেশী নাগরিক এবং ২ জন মিয়ানমার নাগরিক) বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশের সময় প্রতিবেশী মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) এর ৩ টি স্পীড বোট দিয়ে নাফ নদীতে ধাওয়া করলে ট্রলারটি টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ সাবরাং বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-০৫ হতে আনুমানিক ৪০০ গজ দক্ষিণ-পূর্ব দিকে জিন্নাহখাল নামক স্থানে বালুচরের উপরে উঠিয়ে দেয়।

পরবর্তীতে উক্ত ট্রলারে অবস্থানরত ৪ জন ব্যক্তি পালিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবি টহলদল তাদেরকে আটক করতে সক্ষম হয়।

অতঃপর উক্ত ৪ জন ব্যক্তির জবানবন্দী অসংলগ্ন ও সন্দেহজনক হওয়ায় বর্ণিত ট্রলারটিকে দু’টি ট্রলারের সাহায্যে বৃহস্পতিবার ২৭ জানুয়ারি, টেকনাফ জেটিঘাটে আনয়ন করতঃ আনুমানিক ৬ টায় ট্রলারটি বিস্তারিতভাবে তল্লাশী করার সময় ট্রলারের ইঞ্জিনের নীচ হতে অভিনব পদ্ধতিতে লুকায়িত অবস্থায় একটি বস্তা উদ্ধার করা হয়।

উক্ত বস্তার ভিতর হতে ২,৩৪,০০,০০০ (দুই কোটি চৌত্রিশ লক্ষ) টাকা মূল্যমানের ৭৮,০০০ পিস নিষিদ্ধ ঘোষিত ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এসময় ২ জন মিয়ানমার নাগরিকসহ ৪ জন আসামীকে আটক করা হয়।

আটককৃত আসামীরা যথাক্রমে, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৪২), পিতা-মোঃ রবিউল ইসলাম, মাতা- মোছাঃ আয়েশা বেগম, গ্রাম-ফুলের ডেইল, পোস্ট-হ্নীলা, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার যার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে টেকনাফ থানায় ইয়াবা ও অস্ত্র মামলা রয়েছে, মোঃ হাফেজ আহমেদ (৪০), পিতা-মৃত কালু মিয়া, মাতা-মৃত জরিনা বেগম, গ্রাম-শাহপরীরদ্বীপ, পোস্ট-সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা কক্সবাজার,
ছেওয়াচি (৩৮), পিতা-মৃত উ চিং য়ে, মাতা-মৃত মা চু ছে, গ্রাম-মন্দ্রাছে, থান-আকিয়াব, জেলা-আকিয়াব, মিয়ানমার এবং নেম ইউ চ (৩৬), পিতা-মৃত উপান জ, মাতা- দমা তিন সুয়ে, গ্রাম-দব্রিচাই, পোস্ট-দব্রিচাই, থানা-দব্রিচাই, জেলা-রয়েম প্রি, মিয়ানমার।

আটককৃত আসামীদেরকে জব্দকৃত মালামালসহ নিয়মিত মামলার মাধ্যমে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

অপরদিকে বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) গত বুধবার ২৬ জানুয়ারি, রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, অত্র ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ খারাংখালী বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-১৪ থেকে আনুমানিক ৫০০ গজ উত্তর দিকে খারাংখালী এলাকার পার্শ্ববর্তী নাফ নদীর সীমান্ত দিয়ে মাদকের একটি বড় চালান মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে পাচার হতে পারে।

উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ খারাংখালী বিওপি হতে একটি বিশেষ টহলদল নাফ নদীর তীরে বেড়ীবাঁধের আড় নিয়ে কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে।

আনুমানিক রাত ১২টা ১৫ মিনিটে টহলদল সন্দেহভাজন ৫/৬ জন মাদক কারবারীকে একটি কাঠের নৌকায় মিয়ানমারের মুদদ্বীপ থেকে নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসতে দেখে।

নৌকাটি শূন্যরেখা অতিক্রম করে বাংলাদেশ পার্শ্বে নাফ নদীর তীরে আসলে বাংলাদেশ এর পার্শ্ব থেকে ২/৩ জন লোক বেড়ীবাঁধ দিয়ে নিচে নেমে নৌকাটির কাছে যায়।

তারা নৌকাটির কাছে গেলে নৌকা হতে মাদকের চালান তাদেরকে হস্তান্তর করার সময় বিজিবির টহলদল তৎক্ষণাত তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে।

বিজিবি’র চ্যালেঞ্জকে উপেক্ষা করে মাদক কারবারীরা বিজিবি’র টহলকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে আত্মরক্ষার্থে বিজিবি’র টহলও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে।

এতে অজ্ঞাতনামা মাদক কারবারীরা নৌকা হতে লাফিয়ে নাফ নদী দিয়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পালিয়ে যায়। ইতোমধ্যে খারাংখালী বিওপি হতে আরও একটি টহল রিইনফোর্সমেন্ট হিসেবে প্রেরণ করা হয়।

যৌথ টহলদল ঘটনাস্থলে ব্যাপক তল্লাশী কার্যক্রম পরিচালনা করে নদীর তীরে ২টি বস্তা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উক্ত বস্তায় ৫,৪০,০০,০০০ (পাঁচ কোটি চল্লিশ লক্ষ) টাকা মূল্যমানের ১,৮০,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করতে সক্ষম হয়।

মাদক কারবারীদেরকে আটকের নিমিত্তে বর্ণিত এলাকা ও পার্শ্ববর্তী স্থানে পরবর্তী রাত ২ টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করা হলেও কোন মাদক কারবারী কিংবা তাদের সহযোগীকে আটক করা সম্ভব হয়নি।