!! দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে গতকাল মঙ্গলবার ৯ টি অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং ৩ টি অভিযান পরিচালনা করা সহ ৬ টি দপ্তরে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে !!
নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) লিমিটেড, বনানী কাযালয়, ঢাকা কর্তৃক নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান, লোড বৃদ্ধি প্রভৃতি সেবা প্রাপ্তিতে ঘুষ দাবি এবং গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে দুদক, প্রধান কাযালয়ের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী ও মোঃ সহিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত টিম গতকাল মঙ্গলবার ১ মার্চ ২০২২ একটি অভিযান পরিচালনা করেন।
এনফোর্সমোন্ট টিম সরেজমিনে উক্ত দপ্তর পরিদর্শন করে এবং অভিযোগে সম্পর্কে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাথে কথা বলে এবং তার বক্তব্য রেকর্ড করে।
অভিযান পরিচালনাকালে উক্ত দপ্তরের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাপ্ত নথিপত্র যাচাই-বাছাইপূর্বক কমিশন বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
উপজেলা মৎস্য অফিস, কাঁঠালিয়া, ঝালকাঠি-এর অফিস সহায়কের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলনের অভিযোগের বিষয়ে দুদক, সজেকা, বরিশালের সহকারী পরিচালক হাফিজুর রহমান-এর নেতৃত্বে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুদক টিম সরেজমিনে উক্ত দপ্তর পরিদর্শন করে এবং অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে।
রেকর্ড অনুযায়ী অভিযোগ সংশ্লিষ্ট মোসাম্মৎ পারভীন আক্তার গত ১ মার্চ ২০১১ সালে উপজেলা মৎস্য দপ্তর, কাঠালিয়া, ঝালকাঠিতে এমএলএসএস পদে যোগদান করেন। উক্ত অফিসের পুরনো হাজিরাখাতা উপস্থাপন করতে অনুরোধ করলে কেবল ২০২০ ও ২০২১ সালের হাজিরা খাতা পাওয়া যায়।
হাজিরা খাতা পর্যালোচনায় দেখা যায়, মোসাম্মৎ পারভীন আক্তারের অফিসে উপস্থিতির স্বাক্ষর বিভিন্ন রকমের রয়েছে অর্থাৎ বিভিন্নজন তার স্বাক্ষর প্রদান করেছে। তিনি বর্তমানে কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স ম্যানেজারের দপ্তর, কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাবরেটরী, ঢাকায় কর্মরত আছেন।
তাকে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, কাঠালিয়া, ঝালকাঠি থেকে ৩১.০১.২০২২ খ্রি. তারিখে ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে। বর্তমান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জনাব জসিম উদ্দিন গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২১ সাল থেকে কর্মরত আছেন।
উক্ত অফিসের অফিস সহকারী মোঃ জাকির হোসেন গত ৬ অক্টোবর ২০২১ থেকে কর্মরত আছেন। তারা দু’জনই বলেছেন যে, হাজিরা খাতায় পারভিন আক্তারের নামের সামনে কে, কখন স্বাক্ষর করেছেন, তা তারা দেখেননি।
এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশসহ কমিশন বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড মহাসড়ক মেরামতের কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযােগের প্রেক্ষিতে দুদক, সজেকা, চট্টগ্রাম-২-এর এডি নুরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে প্রাপ্ত সূত্রে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ডের বাড়পকুণ্ড মহাসড়ক হতে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত মন্দারিতলা সড়কটি ৩.৫ কিলোমিটার সিসি ও কারপেটিং রাস্তার কাজ গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ২ টি প্যাকেজে মেসার্স আমীন ইন্টারন্যাশনাল ১.২৯ কিলোমিটার কার্যাদেশ প্রাপ্ত হন। কার্যাদেশ অনুযায়ী গত ২৩ নভেম্বর ২০১৯ সালে কাজটি সমাপ্তির উল্লেখ থাকলেও পরবর্তীতে ৫ বার সময় বর্ধিত করে গত ২৯ ডিসেম্বর ২০২১ সালে কাজটি সমাপ্তি হওয়ার কথা ছিল।
উপজেলা প্রকৌশলী ও নিরপেক্ষ প্রকৌশলীসহ সরেজমিনে অভিযান পরিচালনায় দেখা যায় যে, আনুমানিক ৯৫% কাজ সম্পন্ন হয়েছে। উক্ত কাজে ৮২% বিল প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয় পাকেজটিও ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ ১.১৬ কিলোমিটার রাস্তার কাজের জন্য কার্যাদেশ প্রাপ্ত হন।
কার্যাদেশ অনুযায়ী গত ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ সমাপ্তির কথা উল্লেখ থাকলেও বর্তমানে আনুমানিক ৭০% কাজ সমাপ্ত হয়েছে এবং উক্ত কাজের মোট বিলের ৫৮% বিল প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়াও তৃতীয় প্যাকেজে হাসান মোটরস ২০২১-২২ অর্থ বছরে মোট ১.৩১ কিলোমিটার কাজের জন্য কার্যাদেশ প্রাপ্ত হন।
কার্যাদেশ অনুযায়ী আগামী ২০ এপ্রিল কাজটি সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে। উক্ত প্যাকেজের আনুমানিক ২০% কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ১০% অগ্রিম বিল প্রদান করা হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ, চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী, এনফোর্সমেন্ট টীম ও LGED এর প্রকৌশলীসহ রাস্তার কাজ সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায় প্রাক্কলন অনুযায়ী রাস্তাটি ১৮ ফিট প্রশস্থ হওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও বিভিন্ন স্থানে ১২-১৮ ফিট প্রশস্থ পাওয়া যায়।
নিরপেক্ষ প্রকৌশলীগণ মতামত প্রদান করেন যে, কাজের গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য তিন জন ঠিকাদার ও নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতিতে নির্মাণ সামগ্রী সংগ্রহপূর্বক গুণগত মান পরীক্ষার জন্য LAB Test প্রেরণপূর্বক Test report সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এনফোর্সমেন্ট টিম এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন বরাবরে শীঘ্রই প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এছাড়াও দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন-১০৬) আগত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক কমিশনকে অবহিত করার জন্য ৬ টি দপ্তরে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।