৭ মার্চের ভাষণই মুক্তিযুদ্ধের সঞ্জীবনী শক্তি

অন্যান্য এইমাত্র

আজকের দেশ ডেস্ক ঃ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির নবঅভ্যুদয় ঘটে। পৃথিবীর মানচিত্রে নতুন একটি স্বাধীন দেশের অস্তিত্ব অঙ্কিত হয়; আর এই অস্তিত্বের নাম বাংলাদেশ।


বিজ্ঞাপন

ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু যখন স্বাধীনতার ডাক দেন, সেদিনও তিনি ভাষণ শেষ করেছিলেন ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি উচ্চারণের মাধ্যমে। তখন তার কণ্ঠৈ কণ্ঠ মিলিয়ে লাখো জনতাও উচ্চারণ করে ‘জয় বাংলা’র বজ্রনিনাদ।

এই স্লোগানের উচ্চারণের মাধ্যমেই স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মাহুতি দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে যখন স্বাধীনতা অর্জিত হয়, তখনও কোটি জনতার কণ্ঠে মন্দ্রিত হয়েছে ‘জয় বাংলা’র বজ্রধ্বনি।

৮ মার্চের পত্রিকাগুলোতে উঠে এসেছে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাক ও রণ-কৌশল ঘোষণার বিস্তারিত তথ্য।

এই ভাষণ ঢাকা বেতারে সরাসরি সম্প্রচারের কথা থাকলেও, পাকিস্তানি জান্তাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে তা আর সরাসরি সম্প্রচার করা সম্ভব হয়নি। এর প্রতিবাদে ঢাকা বেতার ও টেলিভিশন স্টেশন ত্যাগ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে ভাষণ শোনেন কর্মচারীরা।

তখনই বঙ্গবন্ধুর পুরো ভাষণটি রেকর্ড করেন তারা। পরবর্তীতে এই ভাষণ সম্প্রচারের দাবিতে বেতার ও টেলিভিশনের কর্মচারীরা কাজ বয়কট করেন। ফলে ৮ মার্চ সকালে সেই ভাষণ সম্প্রচার করতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার।

৭ মার্চের ভাষণে পাকিস্তানিদের প্রতি ৪টি শর্ত দেন আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

৩ তারিখে স্থগিত হওয়া অধিবেশন আবারও ২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত করার জন্য জান্তা-প্রধান ইয়াহিয়ার ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু জানান, এই ৪ শর্ত পূরণ হলে তারপর ভেবে দেখবেন যে অধিবেশনে যোগ দেবেন কিনা।

পাকিস্তানিদের প্রতি দেওয়া বঙ্গবন্ধুর সেই ৪ শর্ত হলো, সামরিক আইন প্রত্যাহার, সেনাদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া, মার্চের ১ তারিখ থেকে ৬ তারিখ পর্যন্ত সারা দেশে জান্তা কর্তৃক গণহত্যার বিচার এবং নির্বাচতি জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর।

এরপর পাকিস্তানিদের প্রতি সর্বোচ্চ অসহযোহিতার জন্য বাঙালিদের আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু। এমনকি পাকিস্তানি শোষকদের অধীনে খাজনা-ট্যাক্স সব বন্ধ করার নির্দেশ দেন তিনি।

বন্ধ ঘোষণা করেন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-অফিস-আদালতসহ সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান।

নিতে বলেন যুদ্ধের প্রস্তুতি। এরপরেই সারাদেশজুড়ে শুরু হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম কমিটি গঠন।

যার যা আছে, তাই নিয়ে জান্তাদের প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে আপামর জনতা। প্রতিটি রাস্তা-ঘাট দখলে নিতে শুরু করে গণমানুষ। প্রতিটি ঘর পরিণত হয়ে যায় একেকটি দুর্গে।