নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটের আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের প্রায় আড়াই বছর পর অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন- পিবিআই। শনিবার দুপুরে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারোয়ার জাহান স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অভিযুক্ত তিনজন হলেন- বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার উত্তর বাইশারি যৌথ খামার এলাকার নূরুল আলমের ছেলে জহিরুল হক জসিম (২৬), তার স্ত্রী আর্জিনা ওরফে রাজিয়া (১৯) ও বাইশারি ঘোড়ামারা এলাকার নূর হোসেনের ছেলে মো. হাসান (২৫)।
২০১৭ সালের ২৪ মার্চ ভোরে আতিয়া মহলে এই ‘জঙ্গি আস্তানার’ সন্ধান পায় আইন-শৃংখলা বাহিনী। এরপর চার দিন ওই বাড়ি ঘিরে চলে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দলের ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’।
২৮ মার্চ অভিযান শেষে ওই বাড়ির ভেতরে চারজনের লাশ পাওয়া যায়। ভবনটির বিভিন্নস্থানে প্রচুর বিস্ফোরক পাওয়ার কথা জানায় র্যাব।
এ ঘটনায় এসআই সুহেল আহমদ মোগলাবাজার থানায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিআইবির পরিদর্শক আবুল হোসেন জানান, এই তিনজন জঙ্গি দলের সদস্য এবং আতিয়া মহলে নিহত ৪ জঙ্গিকে তারা জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করে। এই ঘটনায় মোশরফ নামে আরেক জঙ্গির সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তবে সে মৌলভীবাজারে জঙ্গি বিরোধী আরেক অভিযানে মারা গেছে।
আবুল হোসেন জানান, আতিয়া মহলে নিহত চারজনের মধ্যে দু’জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহত অপর দুই জঙ্গির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযান চলাকালে বিস্ফোরণে চার জঙ্গির দেহের সিংহভাগ পুড়ে যায়। এতে তাদের চেহারা নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। বাকি দু’জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে রেখেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৪ মার্চ ভোর থেকে জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলে ‘অপারেশন টোয়ালাইট’ চলাকালে ওই ভবনে ব্যাপক গুলিবিনিময় ও বিস্ফোরণ ঘটে। ওই অভিযানে চার জঙ্গি এবং র্যাবের গোয়েন্দা ইউনিটের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম ও আবু কাওসারসহ ১১ জন প্রাণ হারান। এছাড়া বিস্ফোরণে আহত হন র্যাব ও পুলিশ সদস্য এবং সাংবাদিকসহ কয়েকজন। অভিযানে আতিয়া মহলের ৭৮ বাসিন্দাকে উদ্ধার করা হয়। পাঁচ দিনের মাথায় অভিযানের সফল সমাপ্তি ঘোষণা করে সেনাবাহিনীর কমান্ডো ইউনিট।