সৌম্য ফিরলেও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে দ্যুতি, তুলে নিলেন সেঞ্চুরি

ক্রিকেট খেলাধুলা

হ্যামিল্টন টেস্টে আজ চতুর্থ দিনে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ আগের বলেই হজম করেছেন চার। প্রতিশোধ নিতেই বোধ হয় পরের বলটি শর্ট লেংথে করেছিলেন টিম সাউদি। অমন সময়েও হুক করতে বুক কাঁপেনি মাহমুদউল্লাহর। শটটি পুরো নিয়ন্ত্রণে না থাকলেও লং লেগ অঞ্চল দিয়ে সীমানা পেরিয়ে যায়। কথায় আছে ‘ফরচুন ফেভারস দ্য ব্রেভ’—সৌভাগ্য সাহসীদের পাশে থাকে। মাহমুদউল্লাহর ক্ষেত্রেও তাই হলো। সারা দিন কিউইদের পেসারদের আগুনের জবাবে বুক চিতিয়ে লড়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। নিউজিল্যান্ডে এবারের সফরে এখন পর্যন্ত এটাই কি বাংলাদেশের সেরা দিন? সেরা বললে অত্যুক্তি হয় না। ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর সিরিজের প্রথম টেস্টেও ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা দানা বেঁধেছে কাল ম্যাচের তৃতীয় দিনেই। ৪ উইকেটে ১৭৪ রান নিয়ে কাল তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিলেন সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশ তখনো নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস থেকে ৩০৭ রানে পিছিয়ে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই ভেবে নিয়েছেন আজ ম্যাচের চতুর্থ দিনে বাংলাদেশ হয়তো প্রথম সেশনও টিকতে পারবে না। ভুল। এবং তা প্রমাণ করেছেন সৌম্য-মাহমুদউল্লাহ-ই। প্রথম সেশনে বাংলাদেশ উইকেটশূন্য ছিল তাঁদের দৃঢ়তায়। মধ্যাহ্নভোজের আগেই টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন সৌম্য। প্রথম সেশনে দুজন কতটা ইতিবাচক ছিলেন তা ওভারপ্রতি ৪.৬৯ রান রেটেই বোঝা যায়। ৩০৭ রান থেকে ১৭১ রানে পিছিয়ে মধ্যাহৃভোজে গিয়েছিলেন সৌম্য-মাহমুদউল্লাহ। দ্বিতীয় সেশনে আরও ১৩ ওভার ব্যাট করেছেন দুজন। সৌম্যর নিশ্চয়ই দুঃখ থাকবে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিকে তিনি অন্তত দেড় শ রানে রূপ দিতে পারেননি। ১৪৯ রানে (১৭১ বল, ৫ ছক্কা ও ১৯ চার) থাকতে বাজে শট খেলে ট্রেন্ট বোল্টকে উইকেট দিয়েছেন। তার আগে ৯৪ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ছুঁয়েছেন তামিম ইকবালের গড়া টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে গড়েছেন ২৩৫ রানের ভীষণ প্রয়োজনীয় এক জুটি। সৌম্য যখন ফিরলেন মাহমদুউল্লাহর সংগ্রহ তখন ১৭১ বলে ৯০। আর ১২ বল খেলে টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেন বাংলাদেশের এই অধিনায়ক। ২০১০ সালে এই হ্যামিল্টনেই টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। আজ সেই একই মাঠে সেঞ্চুরির তুলে নেওয়ার মধ্য দিয়ে মাহমুদউল্লাহ খেলছেন অনেক সম্ভাবনার এক ইনিংস। সম্ভাবনা বলতে হচ্ছে কারণ, সৌম্য আউট হওয়ার পর উইকেটের অন্য প্রান্তে কেউ তাঁকে সেভাবে সঙ্গ দিতে পারছেন না। নিউজিল্যান্ড নতুন বল তুলে নেওয়ার পর ৯০তম ওভারে লিটন দাসকে (১) ফেরান বোল্ট। পরের ওভারে প্রথম বলেই বাউন্সারের ফাঁদ পেতে মিরাজকে তুলে নেন নিল ওয়াগনার। অন্তত ইনিংস ব্যবধানে হার এড়ানোর স্বপ্ন দেখা বাংলাদেশ তখন আবারও ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কায়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেই শঙ্কা কাটেনি। দলীয় সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৩৯৭ রান নিয়ে ব্যাট করছিলেন মাহমুদউল্লাহ ও আবু জায়েদ। হাতে মাত্র ৩ উইকেট রেখে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস থেকে দল তখনো ৮৪ রানে পিছিয়ে। দলের লোয়ার অর্ডার বেরিয়ে পরায় কিছুটা হাত খুলে খেলার চেষ্টা করছেন মাহমুদউল্লাহ। উইকেট থাকতে থাকতে নিউজিল্যান্ডকে অন্তত আরও একবার ব্যাটিংয়ে পাঠানোর চেষ্টাই করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩ ছক্কা ও ১৯ চারে ২০০ বলে ১৩১ রানে ব্যাট করছিলেন মাহমুদউল্লাহ। টেস্টে এ নিয়ে ছয় ইনিংসে এটি তাঁর তৃতীয় সেঞ্চুরি।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *