নিজস্ব প্রতিবেদক : কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কি প্যারোলে মুক্তি পাচ্ছেন? দলের নেত্রীকে মুক্তি করতে বিএনপি রাজপথের আন্দোলনের কথা ভুলে গিয়ে কি প্যারোলের মুক্তির সমঝোতায় যাচ্ছে? গতকাল থেকে আবারো রাজনৈতিক মহলে বেগম জিয়ার প্যারোলের মুক্তির প্রশ্নটি ঘুরপাক খাচ্ছে। যদিও খালেদা জিয়া বলেছেন, জামিন আমার হক। দেশের আইন অনুযায়ী আমি জামিন লাভের যোগ্য। আমি তো কোনো অপরাধ করিনি। তাই প্যারোলের প্রশ্ন কেন আসবে?
তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দী খালেদা জিয়া জামিন পেলে যে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চান, সে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি বিষয় যদির মধ্যে আটকে যাচ্ছে। কারণ জামিন পেলে চিকিৎসকরা যদি খালেদাকে বিদেশে নেওয়ার পরামর্শ দেন, তখনই সরকার বিষয়টি দেখবে।
গতকাল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ হাসপাতালে গিয়ে তার দলের নেত্রীর সঙ্গে কথা বলে আসেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জামিন পেলে খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবেন।
এবিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যে সংসদ সদস্য এ কথা বলেছেন, তিনি আমার সাথে দেখা করেও এ কথা বলেছেন কয়েকদিন আগে, বেগম জিয়াকে ঘিরে তাদের অভিপ্রায়ের কথা, জামিন পেলে তিনি বিদেশে যাবেন। আর হারুনুর রশীদ এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে বলতে অনুরোধ করেছেন। এটা আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তিনি জামিন পাবেন কিনা সেটা আদালতের বিষয়। সরকার আদালতকে কীভাবে বলবে যে জামিন দিয়ে দেবেন? এটা কি বলা উচিত? তাহলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি সরকারের হস্তক্ষেপ হবে। আর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশীদ নিজেও এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন।
এদিকে বুধবার শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন বিএনপির ৪ চার জন সংসদ সদস্য। সাক্ষাত শেখে বেগম জিয়ার বরাত বিএনপির নেত্রী রুমিন ফারহানা এমপি বলেন, ম্যাডাম বলেছেন, জামিন আমার হক। দেশের আইন অনুযায়ী আমি জামিন লাভের যোগ্য। আমি তো কোনো অপরাধ করিনি। সুতরাং এখানে প্যারোলের প্রশ্ন কেন আসবে?
এরআগে শর্তসাপেক্ষে পর্দার আড়ালে প্যারোলে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে সরকারের সাথে বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা আলোচনা করেছেন বলেও প্রশ্ন উঠে। ওই সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, প্যারোল আমাদের দলের বিষয় না, খালেদা জিয়া অসুস্থ-এটা তার বিষয় এবং তার পরিবারের বিষয়।
অপরদিকে সুপ্রিম কোর্ট ও নিম্ন আদালত মিলে খালেদার বিরুদ্ধে এখন ১৭টি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে দুটি মামলায় (জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা) জামিন পেলেই তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেতে পারেন বলে তার আইনজীবীদের ভাষ্য।
গত ২০১৮ সালেরে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন। আর অসুস্থতার জন্য গত ১ এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে তাকে রাখা হয়েছে।