সুমন হোসেন, (যশোর) ঃ
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রতিবাদে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেছে। রোববার মণিরামপুরের ধলিগাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এ ঘটনা ঘটেছে।
শিক্ষর্থীদের দাবী, অন্যায় ভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাবিবুল্লাহ হাবিব স্যারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে নিয়েই আমরা শ্রেণী কক্ষে প্রবেশ করতে চাই। নয়তো বা ক্লাস বর্জন অব্যাহত থাকবে।
বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, গত রোববার সকাল ১০টার পূর্বে যথারীতি সকল শিক্ষার্থীরা বিদ্যালেয় উপস্থিতি হন। শিক্ষার্থীরা এ্যাসেম্বিলি শেষ করার পর ১০ম শ্রেণীর ছাত্র ফারুক হোসেন, আব্দুল্লাহ, ৯ম শ্রেণীর ছাত্র মুজাহিদ হোসেন, তানভীর হোসেনসহ ৭/৮জন শিক্ষার্থী সকল শিক্ষার্থীদের শ্রেণী কক্ষে না বসার কথা জানিয়ে দেয়। এসময় সকল শিক্ষার্থীরা শ্রেনী কক্ষ থেকে বেরিয়ে অফিসের সামনে তাদের দাবী দাবা তুলে ধরেন।
আন্দোলনরত সকল শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকদের জানিয়ে দেন, বিদ্যালয়রে সহকারি প্রধান শিক্ষক হাবিুল্লাহ হাবিব স্যারকে অন্যায় ভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত আমরা ক্লাস করবো না। একপর্যায়ে তারা বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। তবে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চলতি দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন।
জানতে চাইলে এ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার সহকারি প্রধান শিক্ষক হাবিবুল্লাহ হাবিবকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি। তবে কি কারণে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে সে বিষয় তিনি কিছুই জানাতে পারেননি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষক হাবিবুল্লাহ হাবিবকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ছাড়াও অভিভাবক মহলও ফুসে উঠেছে। পরিস্থিতি যে পর্যায়ে পৌছুয়েছে তা শিক্ষার পরিবেশ নেই বললে চলে।
বরখাস্ত হওয়ায় শিক্ষক হাবিবুল্লাহ হাবিব জানান, সহকারি শিক্ষক সুমা রানী ২দিনের বেতন কর্তন এবং অসুস্থ্য শিক্ষক মাহাবুবুল আলমের বেতন উত্তোলন করে দেওয়ার অপরাধেই আমাকে সাময়িক বরখাস্ত দেখানো হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন এ দুজনের মধ্যে সুমা রানী ছুটি ছাড়াই দুদিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন। এ কারণে জেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশক্রমে তার দুদিনের বেতন বাদ দেওয়া হয়েছে। অসুস্থ্য অন্য শিক্ষক মাহাবুবুল আলম প্যারালাইস্ট রোগী। বর্তমান সভাপতি এবং অবসরে যাওয়া প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার পাল এ শিক্ষককে ২০১৮ সাল থেকে বেতন দিয়ে আসছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে হাবিবুল্লাহ হাবিব আরো জানায়, আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বিদ্যালয়ের প্রধান পদে একজন শিক্ষক নিয়োগ ও একজন কর্মচারী নিয়োগে জটিলতা নিয়েই কমিটি তাদের সুবিধা করতে আমাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতেই সাময়িক বরখাস্ত করেছেন এছাড়াও বিদ্যালয়ের বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা রয়েছে। যেকারনে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগ বোর্ড করতে আমার আপত্তি রয়েছে।
জানাগেছে, গত ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার পাল অবসরে যান। এসময় সহকারী প্রধান শিক্ষক হাবিবুল্লাহ হাবিবকে ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব দেন। এরই মধ্যে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ প্রধান শিক্ষক পদসহ দুটি পদে নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে। যা নিয়েই মূলত বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কমিটির মধ্যে বিরোধ শুরু হয়।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সুমন ক্লাস বর্জনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খুব শিঘ্রই এ সব ঝামেলা সমাধানের চেষ্টা চলছে। এসব বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোনটি রিসিভ করেননি তিনি।