নড়াইলের মধুমতি নদীর উপর নির্মিত দেশের প্রথম ৬ লেন সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

Uncategorized জাতীয়

মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
নড়াইলের মধুমতি নদীর কালনা পয়েন্টে নির্মিত মধুমতি সেতুর উদ্বোধন করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটাই দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। কালনা সেতুর উদ্বোধনের সাথে সাথে উন্মোচিত হলো দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসির ভাগ্যের দ্বার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সে সোমবার (১০ অক্টোবর) বেলা ১টার দিকে এ সেতুর উদ্বোধন ঘোষনা করেন। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের’র সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এর সঞ্চালনায় এ সেতু নির্মান প্রকল্প বিষয়ে উপস্থাপন করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ’র সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী। এ সময় মধুমতি সেতু’র পশ্চিম প্রান্তে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, নড়াইল-১ আসনের সাংসদ কবিরুল হক মুক্তি,নড়াইল-২ আসনের সাংসদ মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা,নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান,পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন,মধুমতি সেতু নির্মান প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান,নড়াইল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি মোঃ হাসানুজ্জামান,নড়াইল জেলা আ’লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস,সাধারণ সম্পাদক নিজামউদ্দিন খান নিলু,আ’লীগ নেতা কাজী ইসমাইল হোসেন লিটন, সিকদার জাহাঙ্গীর কবীর,জেলা যুবলীগের আহবায়ক আলহাজ্জ্ব ওয়াহিদুজ্জামান,সমাজসেবক গোলাম মোর্ত্তজা স্বপন প্রমুখ। উদ্বোধন অনুষ্ঠান স্থল সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। এ সেতুর উদ্বোধনের দিন ঘোষনার পর হতে নড়াইল সহ পার্শ্ববর্তী জেলা গুলোতে বইছে আনন্দের বন্যা। সোমবার (১০ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী ঘোষনা শুনে আনন্দে আত্যহারা হয়ে পড়েন অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নানা বয়সী নারী পুরুষ। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে মধুমতি সেতু নির্মিত হয়েছে। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) সেতু এটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক ১ মিটার। উভয় পাশে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় প্রায় ৯৬০ কোটি টাকা। এশিয়ান হাইওয়ের ওপর অবস্থিত এটি। সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেটের তামাবিল হয়ে ঢাকা,ভাঙ্গা,নড়াইল,যশোর,বেনাপোল,কোলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ভূমিকা রাখবে। তবে এতোদিন কালনা পয়েন্টে মধুমতি নদী ধারা বিচ্ছিন্ন ছিল। সেতু নির্মাণের ফলে সেই বিছিন্নতা নেই। কালনা সেতু চালু হলে শুধু জাতীয় ক্ষেত্রে নয়,আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। ভারত,কোলকাতা,আসামসহ দেশের মধ্যে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর,বেনাপোল ও নোয়াপাড়া নদীবন্দরের মধ্যে যোগাযোগের মাইলফলক রচিত হবে। নড়াইলের লোহাগড়ায় ইপিজেড (রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) চালুসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বহুল প্রতিক্ষিত এ সেতুর উদ্বোধনের সময় অনেকেই এ সেতু’র সুবিধা নিয়ে তাদের অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেন। নড়াইল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রী’র সভাপতি মোঃ হাসানুজ্জামান বলেন এ সেতু’র উদ্বোধনের অপেক্ষায় ছিলেন গোপালগঞ্জ,ফরিদপুর,নড়াইল,যশোর,বেনাপোল, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার কোটি কোটি মানুষ। আজ তাদের স্বপ্ন পুরন হলো। এ সেতু চালু হওয়ার সাথে সাথে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাণিজ্যিক বিপ্লব ঘটবে। ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘কালনা সেতু’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *