!! চট্টগ্রামে কর্ণফুলী ড্রাই ডকের বিরুদ্ধে প্রায় ২১ একর নদীর চর দখল ও অবৈধভাবে ম্যানগ্রোভ বনের ২ হাজার গাছ কেটে কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের অভিযোগ !!
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ঃ চট্টগ্রামে কর্ণফুলী ড্রাই ডকের বিরুদ্ধে প্রায় ২১ একর নদীর চর দখল করে এবং অবৈধভাবে ম্যানগ্রোভ বনের ২ হাজার গাছ কেটে কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে কাজ করছে বলে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করলেও নদী রক্ষা কমিশন বলছে, নদী দখল করে টার্মিনাল স্থাপনের অনুমতি সরকার দেয়নি।
গত শনিবার টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। চার দিন পর গত মঙ্গলবার দুপুরে আনোয়ারা উপজেলার ঘটনাস্থল কর্ণফুলী ড্রাই ডক পরিদর্শনে আসেন নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘কর্ণফুলী নদী দখল করে কোনো টার্মিনাল স্থাপন করার জন্য সরকার অনুমতি দেয়নি। সরকারের নাম ভাঙিয়ে অবৈধভাবে নদী দখল করে গড়ে ওঠা সব স্থাপনা খুব শিগগির গুঁড়িয়ে ফেলা হবে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ও ঠিকাদার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কর্ণফুলী ড্রাই ডক নদীর ২১ একর জায়গা দখল করে, প্রায় ২ হাজার গাছ কেটে পরিবেশ ও নদীর মারাত্মক ক্ষতি করেছে। গাছ কাটায় পরিবেশের যেমন ক্ষতি হবে, তেমনি ক্ষতি হয়েছে পাখিদেরও। স্থানীয়রা মামলার ভয়ে প্রতিবাদও করে না।’
এ নিয়ে জানতে চাইলে কর্ণফুলী ড্রাই ডকের ম্যানেজার মো. সোলায়মান নিয়াজী আজকের দেশ ডটকম কে বলেন, ‘মেরিন একাডেমির জেটির পাশে বেজার প্রায় ২১ একর জমিতে গড়ে ওঠা গাছগুলো কাটার জন্য কর্ণফুলী ড্রাই ডকের কাছে অনুমতি রয়েছে। এ ছাড়া সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিসহ সব ধরনের কাগজপত্র আমাদের কাছে রয়েছে।’
অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জেটি তৈরি করতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) বদলপুরা এলাকায় ২১ একর জায়গা নেয়। কিন্তু এই জায়গা অপর্যাপ্ত আখ্যা দিয়ে তারা ওই জায়গায় জেটি নির্মাণ থেকে বিরত থাকে। এরপর কর্ণফুলী ড্রাই ডক ওই জায়গায় গত শনিবার সকাল থেকে কনটেইনার টার্মিনাল তৈরির কাজ শুরু করে। এরপর ওই এলাকার অর্ধকোটি টাকার গাছ কাটা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বদলপুরা গ্রামের মধ্য দিয়ে ২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৩০০ ফুট প্রস্থের কর্ণফুলী নদী প্রবাহিত হতো। এখন ভরাট হয়ে নদীর প্রস্থ ঠেকেছে ৫০ থেকে ৬০ফুটে। এতে নদীটি প্রায় মরে গেছে। এ ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে চরে সৃষ্টি হয়েছে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল।
গত ৪০ বছরে পলি জমে সৃষ্টি হওয়া চরে ছৈলা, কেওড়া, বাইনসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের জন্ম হয়েছে। শুরুতে কারও নজরে না এলেও বর্তমানে ওই বনের গাছের ওপর নজর পড়েছে ড্রাই ডকের। তারা টার্মিনাল নির্মাণ করতে গিয়ে হুমকিতে ফেলেছে নদী ও পরিবেশকে।
গত শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবদুল্লাহ্ আল মুমিন, মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট ড. সাজিদ হোসেন, আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক এবং এ এইচ এন্টারপ্রাইজের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন সহ কর্ণফুলী ড্রাই ডক কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
![](https://ajkerdesh.com/wp-content/uploads/2022/11/received_532575668316705.jpeg)