নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ সবুজ সুন্দর মনোরম পরিবেশ, সকাল সন্ধ্যা কিচিরমিচির পাখির ডাক, অবিরাম বয়ে চলা শান্ত হিমেল হাওয়া, হাজারো বাহারি রঙের ফুলে হেসে উঠা মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মতিহার উদ্যান’।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বদ্ধভূমির পাশ ঘেঁষে সোজা পূর্ব দিকে রাস্তা ধরে হাঁটলেই চোখে পড়বে এই শান্ত নিবিড় জায়গাটি। যেখানে হরেক রকমের বড় বড় বৃক্ষে পরিপূর্ণ, পশুপাখিদের অভয়াশ্রম। রয়েছে ছোট-বড় কিছু পুকুর, দেশি পাখি-অতিথি পাখিরা সেই পানিতে স্নান করছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে সুউচ্চ গগন শিরীষ বা রেইন ট্রি গাছ। শিরিষের পাতার ফাঁক দিয়ে সূর্যের হালকা আলো আসছে মাটিতে। কোথায়ও আবার ঘন বাঁশঝাড়। মেহগনিগাছগুলো সারি সারি দাঁড়িয়ে রয়েছে। রয়েছে আমের বাগানও।
দু’ধারের আমগাছে দেশি পাখিদের আনাগোনা। শালিক, দোয়েল, হলদে, ঘুঘু, ফিঙ্গি পাখি একগাছ থেকে অন্য গাছে উড়ে বেড়াচ্ছে স্বাধীন চিত্তে। উদ্যানের পুকুরে খেলা করছে শুভ্র বক ও কৃষ্ণ পানকৌড়ি। গভীর গাছপালার ফাঁকে ফাঁকে কোথায় আবার তুলা, কচু, মাশকালাই বুনা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, মতিহার উদ্যানে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরাজি রয়েছে। জারুল, কৃষ্ণচূড়া, বহেরা, আমলকি, শিরিষ, শিমুল, লটকন, মেহগনি, পলাশ, আকাশমণি, বন কাঠালি, তমাল, হিজল, কামরাঙা, আকন্দ, আম, পেয়ারাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ডাল চাষ করা হয়। এসব গাছের বাহিরেও গবেষণার জন্য রয়েছে তুলার চাষ। পুকুরে গবেষণার জন্য মাছ চাষ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মসলিন কাপড়ের জন্য ব্যবহৃত কার্পাস তুলার জন্য ‘মতিহার উদ্যানে’ রয়েছে নির্দিষ্ট ৬ বিঘা জমি।
পুরো জায়গায় গাছ-গাছালি পশু-পাখি জীববৈচিত্র রক্ষা করে মনোরম বাগান করার পরিকল্পনা আছে কর্তৃপক্ষের। শিক্ষার্থীদের বনভোজনের ব্যবস্থা রাখা হবে এই উদ্যানে।
এছাড়াও জলাশয়গুলো উন্নত করে চারপাশে গাছ লাগিয়ে সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে। যেখানে পিকনিক করার পাশাপাশি বিশ্রামের জন্য আলাদা কক্ষ, ওয়াশরুমের সুবিধা থাকবে বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মতিহার উদ্যান নিয়ে পরিকল্পনার বিষয়ে রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, মতিহার উদ্যান নিয়ে আমাদের বৃহৎ পরিকল্পনা আছে।
জীববৈচিত্র্যর রক্ষার পাশাপাশি সেখানে শিক্ষার্থীদের অবসর সময় কাটানো, বনভোজন এবং বিনোদনের জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে। এছাড়া এক পাশে আলাদা একটা জায়গায় আইটি জোন তৈরা করা হবে। সেখানে শিক্ষার্থীদের আইটির বিষয়ে আগ্রহী করে তাদেরকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করা হবে।