শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে আসে হেমন্ত সাথে নিয়ে আসে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য খেজুরের রস, নলী গুড় ও পাটালী

Uncategorized জাতীয়


!! বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাজারো খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছীরা!!



নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাল্টে গেছে ঋতু পরিবর্তনের আবহমান কালের পাণ্ডুলিপি।
শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে আসে হেমন্ত। ভোর আর সন্ধ্যায় গ্রামাঞ্চলে দেখা মেলে হালকা কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। সকাল ও সন্ধ্যায় শীত শীত মিষ্টি অনুভূতি। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহের জন্য চলতি মৌসুমে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাজারো খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা। তারা বছরজুরে অন্য পেশায় নিয়োজিত থাকলেও বর্তমানে খেজুরগাছের রস ঘরে আনার জন্য ব্যস্ততায় দিন কাটাছে।

এ উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় বাড়ির আঙিনায়, ঝোঁপ-ঝাঁড়ে, ফসলী জমির ধারে, রাস্তার দু’পাশে রয়েছে অসংখ্য খেজুর গাছ।

প্রতিবছরে ন্যায় এ বছরও মৌসুমী গাছারিরা কোমরের দড়ি বেঁধে খেজুরগাছে ওঠে তাদের নিপুন হাতে গাছের ছাল(চাঁচ) তুলছেন। পরে নলি বসানোর কাজ শেষে রস সংগ্রহ করবেন। ধারালো দা দিয়ে খেজুর গাছের সোনালী অংশ বের করা হয়, যাকে বলে চাঁচ দেওয়া।

উপজেলার দুইটি পৌরসভা এবং ছয়টি ইউনিয়নে ব্যক্তি মালিকানাধীন এবং সরকারী অসংখ্য খেজুর গাছ রয়েছে। এ অঞ্চলের প্রত্যেকটি গাছ থেকে ৪ থেকে ৬ লিটার পর্যন্ত রস সংগ্রহ সম্ভব হয়। আগে রস বেশি হতো জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন আগের মতো রস হয় না।

শীত যত বাড়বে খেজুরের রসের স্বাদ তত যেন বাড়ে। আবহমান কাল থেকে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে মানুষদের শীতের সকালের নাস্তাতে মুড়ির সাথে রস না হলে যেন চলে না। শীতকালীন পিঠাপুলি, পায়েস সহ রকমারি খাবার তৈরীতে রস ও খেজুর গুড়ের ব্যপক চাহিদা রয়েছে। গাছিরা খেজুরের লালিগুড় তৈরী ছাড়াও পাটা গুড়, বাটি গুড় এবং রস প্রিয়সী মানুষদের জন্য ফেরী করে রস বিক্রয় করে।

দেশজুড়ে খেজুর গুড়ের চাহিদা বেশি থাকায় গাছিদের বাড়ি থেকেই খুরচা ও পাইকারী গুড় বিক্রয় করে সময় ও অর্থ দুটোই লাভবান হন এ অঞ্চলের গাছারিরা। তবে গাছিদের অভিযোগ, খেজুর গুড় সংরক্ষণের ভালো ব্যবস্থা না থাকায় বেশি দিন বাড়িতে রাখা যায় না।

স্থানীয়রা বাসিন্দা ও গাছিরা জানান, জলবায়ু পরিবর্তন , কালের বিবর্তনে, বনবিভাগের নজরদারি না থাকায় হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার ঐতিহ্য খেজুর গাছ।

দুপচাঁচিয়া সদর ইউনিয়নের ভাটাহার গ্রামের গাছি মোয়াজ্জিন হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘ ১০ বছর ধরে আমি একাজ করছি। চলতি মৌসুমে ৫০টি মতো গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করেছি।

চুক্তিতে অন্যের গাছ এবং রাস্তার দ’ুপাশে সরকারি গাছ থেকে আমি রস সংগ্রহ করে থাকি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগের মত এখন আর রস হয় না। তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে পর্যাপ্ত পরিমাণে গুড় উৎপাদন সম্ভব।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাজেদুল আলম বলেন,শীতের আগমনী বার্তায় দুপচাঁচিয়ায় খেজুর গাছ প্রস্তত করতে ব্যস্ত গাছিরা। খেজুর গাছ যে কোনো স্থানে় লাগানো যায় । এই গাছের জন্য বাড়তি কোনো খরচ করতে হয় না। ফসলের কোনো প্রকারের ক্ষতিও করে না। তবে শীত মৌসুমে খেজুর রস থেকে নিপাহ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটার সম্ভবনা বেশি থাকায় গাছিদের সতকর্তার সাথে রস সংগ্রহ করতে হবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *