!! নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সহ সরকারের ৮ টি তদারকি সংস্থার যৌথ অভিযানে উঠে এসেছে নানাবিধ অনিয়মের চিত্র !! নানা কোম্পানির নামে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম !! একই দোকানে একত্রে বিক্রি হচ্ছে গরু-খাসি-মুরগির মাংস !! মাছের দোকানে মিলল বিক্রিনিষিদ্ধ বাঘাইড় !!
নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ খাদ্যপণ্যের পাশে রেখে বিক্রি হচ্ছিল ইঁদুর মারার ওষুধ, মশা মারার স্প্রে। আবার কোনোটিতে খোলা বিক্রি করছিল খাদ্যে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান। একই দোকানে একত্রে বিক্রি হচ্ছে গরু-খাসি-মুরগির মাংস। মাছের দোকানে মিলল বিক্রিনিষিদ্ধ বাঘাইড়। আবার নানা কোম্পানির নামে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম। দামের পার্থক্য কেন যৌক্তিক উত্তর নেই ব্যবসায়ীদের।
এক বাজারে বিভিন্ন দোকানে এতসব অনিয়ম ধরা পড়ল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সহ সরকারের আটটি তদারকি সংস্থার যৌথ অভিযানে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকার মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেটে প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এই অভিযান চালানো হয়।
অভিযান পরিচালনা কালে ব্যাবসায়ীদের নানা গাফিলতি পাওয়া গেলেও প্রথম ধাপে তাদের সতর্ক করা হয়, কোনো জরিমানা করা হয়নি। একই সঙ্গে বিক্রি নিষিদ্ধ দুটি বাঘাইড় মাছ এবং একটি দোকানের লেবেল ব্যতীত খাদ্যে ব্যবহৃত রঙ ধ্বংস করা হয়।
এছাড়া একই সঙ্গে মুরগি, গরু, ছাগল ও বকরির মাংস আলাদা ভাবে বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়। মাছের দোকানে অভিযান চালিয়ে টাটকা মাছ নিশ্চিত করা ও চিংড়ি মাছে জেলি ব্যাবহার হয়েছে কি না পরীক্ষা করা হয়।
আর ডিমের দোকানে অর্গানিক ডিম ও সাধারণ ডিম আলাদা, আলাদা করে সৎভাবে বিক্রির পরামর্শ দেওয়া হয়। খাদ্যপণ্যের দোকানে খাবারের পাশাপাশি বিষাক্ত কোনো দ্রব্য যেমন বা মশা মারার স্প্রে বা ইঁদুর মারার ওষুধ আলাদা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ছাড়া অন্য সংস্থাগুলো যথাক্রমে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ফুড প্ল্যানিং অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিট (এফপিএমইউ), জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পরিচালক (খাদ্যের বিশুদ্ধতা পরিবীক্ষণ ও বিচারিক কার্যক্রম) ড. সহদেব চন্দ্র সাহার নেতৃত্বে অন্য সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা অভিযানে ছিলেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বি এ মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমাদের উদ্যেশ্য জনগণকে নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করা। সেই কারনে আমরা যৌথ এই অভিযান পরিচালনা করি। এবারের মতো সতর্ক করা হয়েছে। পরেরবার থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ উপ-পরিচালক মো. আব্দুস সোবহান বলেন, ‘মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্যই আমাদের অভিযান। আমরা প্রতিটা দোকানে গেছি। একেক দোকানে একেক দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে। তারা (ব্যবসায়ী) সিল মেরে দেখাচ্ছে এটা এই কোম্পানির ডিম এটা ওই ব্রান্ডের ডিম।’
‘ব্যবসায়ীরা বলছে, তারা বিষয়গুলো সম্পর্কে জানে না। কেবল বাইরে থেকে কিনে নিয়ে এসে বিক্রি করে। তারা যেখান থেকে কিনে আনে আমরা তাদের ঠিকানা নিয়ে এসেছি। পরবর্তীতে সেখানে গিয়ে অভিযান চালাবো।’
কাউকে জেল জরিমানা করা অভিযানের মূল উদ্দেশ্য নয় জানিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ সুব্রত কুমার দাস বলেন, ‘আজকের মনিটরিংয়ে আমাদের লক্ষ্য ছিলো, ব্যাবসায়ীরা যেসব সবজি আনছে সেগুলি যেন ওয়াশিংয়ের সময় দূষিত পানির কারণে দূষিত হয়ে না যায়। ব্যাবসায়িদের সতর্ক করেছি তারা যেন শাকসবজি পরিস্কার পানিতে ধোয়।’