নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) প্রায় ২৬ কোটি টাকার নয়ছয়ের প্রমাণ পেয়েছে সংসদীয় কমিটি। বিদেশি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত লোকাল এজেন্টের সাথে যোগসাজশে পণ্য আমদানির নামে জালিয়াতির মাধ্যমে এ টাকা নয়ছয় করা হয়।
সোমবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১৬তম বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি), ঢাকা মেডিকেল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০১২-১৩ অর্থবছরের হিসাব সম্পর্কিত মহাহিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বিশেষ অডিট রিপোর্ট ২০১৩-১৪ এর অডিট আপত্তির কয়েকটি অনুচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা হয়।
জানা যায়, সিএমএসডি কর্তৃক বিদেশি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত লোকাল এজেন্টের সাথে যোগসাজশে পণ্য আমদানির নামে জালিয়াতির মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতি ১৪ কোটি ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৪৫ টাকা। এ অডিট আপত্তির সাথে জড়িত সিএমএসডির প্রাক্তন পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন।
জাতীয় ওষুধ নীতি উপেক্ষা করে বাজার মূল্য অপেক্ষা অস্বাভাবিক উচ্চ মূল্যে ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি কেনার কারণে আর্থিক ক্ষতি ১১ কোটি ৬৬ লাখ ৫ হাজার ৩৫ টাকা। অডিট আপত্তির সাথে জড়িত আহসান কবীর খান আপত্তিগুলো সঠিক নয় বলে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য রুলস অব প্রসিডিউরের ২০৫ বিধি অনুযায়ী সংসদীয় কমিটির সভাপতি বরাবর ব্যক্তিগত শুনানির জন্য আবেদন করেন। সে অনুযায়ী সভাপতি তাদেরকে আগের বৈঠকে উপস্থিত থাকার অনুমতি দিয়েছিলেন।
তবে সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিনের ছেলের অসুস্থতার জন্য বিদেশে যাওয়ায় সভাপতি বরাবর সময় চেয়ে পুনরায় আবেদন করেন। তার অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটির রিপোর্ট উপস্থাপন করেন। পরে বৈঠকে আহসান কবীর খান উপস্থিত থেকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেন।
কমিটি সবকিছু শোনার পর আগামী ১ মাসের মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের বক্তব্য গ্রহণসহ ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে সিএজির মাধ্যমে কমিটির নিকট এ বিষয়ে রিপোর্ট উপস্থাপনের সুপারিশ করে।
বর্তমানে রুলস অব প্রসিডিউরের ২০৫ বিধি অনুযায়ী জড়িত ব্যক্তিবর্গের জন্য ব্যক্তিগত শুনানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এর ফলে দায়ী ব্যক্তি আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ পেয়ে নিজেদেরকে দায় থেকে মুক্ত করার সুযোগ পান।
বৈঠকে অন্য ছয়টি অডিট আপত্তি পিএ কমিটি কর্তৃক নির্দেশনার আলোকে যথাযথভাবে সম্পাদিত হওয়ায় কমিটি আপত্তিগুলো নিষ্পত্তির সুপারিশ করেছে। কমিটির সভাপতি মো. রুস্তম আলী ফরাজীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য আবুল কালাম আজাদ, মো. আব্দুস শহীদ, মো. আফছারুল আমীন, মো. শহীদুজ্জামান সরকার, আহসানুল ইসলাম (টিটু), বেগম ওয়াসিকা আয়েশা খান এবং মো. জাহিদুর রহমান অংশ নেন।
বৈঠকে ডিসি এন্ড এজি মাহবুবুল হক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালর ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা, অডিট অফিস এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।