পিবিআই যশোর কর্তৃক পুলিশ পরিচয়ে একাধিক নারীর সাথে প্রেম, ধর্ষণ এবং ভিডিও ধারণ করার দায়ে রুবেল হোসেনকে গ্রেফতার

Uncategorized আইন ও আদালত


নিজস্ব প্রতিবেদক : আসামী রুবেল হোসেন নিজেকে কখনও পুলিশ সদস্য, আবার কখনও উর্ধ্বতন কর্মকর্তা
পরিচয় দিয়ে নারীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক তৈরী করে সেটির ভিডিও ধারণ করা এবং সেই ভিডিও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে ভিকটিম সহ তাদের পরিবারের সদস্যদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় করাই তার পেশা।

এমনই একজন ভিকটিমের পিতা আসামী রুবেল হোসেনের দ্বারা প্রতারিত হয়ে গত বৃহস্পতিবার ৯ ফেব্রুয়ারি, পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর বরাবরে অভিযোগ দাখিল করলে পুলিশ সুপার অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য এসআই(নিঃ) রেজোয়ান, পিবিআই, যশোর জেলাকে নির্দেশ প্রদান করেন।

এসআই (নিঃ) রেজোয়ান কর্তৃক অনুসন্ধানকালে জানা যায়, আসামী রুবেল হোসেন রুবেল হোসেন (৩৬), পিং-মোঃ ফারুক হোসেন, সাং-আসকরপুর (সারদা), থানা-চারঘাট, জেলা-রাজশাহী, এ/পি-সাং-পোড়াবাড়ী, থানা-বেনাপোল পোর্ট, জেলা-যশোর একজন প্রতারক। সে ভিকটিমের সহিত পুলিশের এএসআই হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং ভিকটিমে সরলতা এবং বিশ্বস্ততার সুযোগে আসামী রুবেলের পরিচিত বাসা বাড়িতে নিয়ে ভিকটিমকে ধর্ষণ করে এবং নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে।

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিও বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আসামী রুবেল হোসেন ভিকটিমের নিকট থেকে ৩,০০,০০০ (তিন লক্ষ) টাকা চাঁদা হিসেবে নিয়েছে এবং একাধিকবার ভিকটিমকে ধর্ষণ করেছে। অনুসন্ধানকালে আসামী রুবেল হোসেন উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত বলে সত্যতা পাওয়া যায়।

এ কারণে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম, অ্যাডিশনাল আইজি, বাংলাদেশ পুলিশ, এর সঠিক তত্ত¡বধান ও দিক নির্দেশনায়, পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্তে¡ এসআই (নিঃ) রেজোয়ান কর্তৃক গতকাল শুক্রবার ১০ ফেব্রুয়ারি, ভোর অনুমান ০৪.০০ ঘটিকার সময় আসামী মো: রুবেল হোসেন (৩৬), পিং-মোঃ ফারুক হোসেন, সাং-আসকরপুর(সারদা), থানা-চারঘাট, জেলা-রাজশাহী, এ/পি-সাং-পোড়াবাড়ী, থানা-বেনাপোল পোর্ট, জেলা-যশোরকে ঝিকরগাছা থানাধনী হাড়িয়া বেলেরমাঠ গ্রামস্থ আসামির ভায়েরাভাই মোঃ জালাল হোসেনের বাড়ি থেকে ফৌ: কা: বি: ৫৪ ধারা মোতাবেক গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকালে আসামীর নিকট থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

পরবর্তীতে ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করলে কোতয়ালী মডেল থানার মামলা নং-২৪, তারিখ-১০/০২/২০২৩, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/০৩) এর ৯(১) তৎসহ পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(১)/৮(২)/ ৮(৩)/৮(৭) রুজু হয়।
উক্ত মামলাটি পিবিআই, যশোর জেলা স্ব-উদ্যোগে গ্রহণ করে মামলার তদন্তভার এসআই (নিঃ) রেজোয়ান এর উপর অর্পণ করা হয়।
মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে এসআই (নিঃ) রেজোয়ান আসামী মো: রুবেল হোসেন (৩৬) কে অত্র মামলা সংক্রান্তে গ্রেফতার পূর্বক হেফাজতে গ্রহণ করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী রুবেল হোসেন নিজেকে পুলিশ সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভিকটিমের সহিত প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে তাকে ধর্ষণ পূর্বক ভিডিও ধারণ এবং উক্ত ভিডিও বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এছাড়াও উক্ত ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ভিকটিমের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে নগদ অর্থ গ্রহণ করে মর্মে স্বীকার করে।

আসামী রুবেল হোসেনকে গতকাল শুক্রবার ১০ ফেব্রুয়ারি শম্পা বসু, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, যশোর আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামী আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *