পিংকি জাহানারা : খুলনায় জাহাঙ্গীর হোসেন কচিকে হত্যার দায়ে আসামি রনি চৌধুরী ওরফে গ্রেনেড বাবুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসাথে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছে আদালত।
উক্ত হত্যা মামলার ৮ আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় অন্যান্য আসামিরা আদালতে থাকলেও গ্রেনেড বাবু পলাতক ছিলেন।
গতকাল সোমবার (২৭ মার্চ, খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহম্মদ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আদালত সূত্র থেকে আরো জানা যায়,, জাহাঙ্গীর হোসেন কচি নগরীর ট্যাংক রোডের বাসিন্দা হাকিম মো. ইলিয়াস হোসেনের ছেলে।
২০১০ সালের ১০ জুন সন্ধ্যায় কচিকে ফোন করে ডেকে নেয় দুর্বৃত্তরা। ফোন পেয়ে কচি ঐ দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে নগরীর শামসুর রহমান রোডের রাজিয়া মঞ্জিলের উত্তর পাশে আসলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে থাকে। এক সময় মৃত ভেবে দুর্বৃত্তরা কচিকে ফেলে মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে খুলনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জাহাঙ্গীর হোসেন কচিকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে ঘটনার পরেরদিন কচির বাবা ইলিয়াস হোসেন রনি চৌধুরী বাবু ওরফে গ্রেনেড বাবুসহ ৬ জনের নাম উল্লেখসহ আরো কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে খুলনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর একই বছরের ২ নভেম্বর মামলার প্রধান আসামি গ্রেনেড বাবু পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়।
এরপর সে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট স্বপন কুমারের আদালতে হত্যাকাণ্ড নিজের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। সেখানে গ্রেনেড বাবু হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসাবে উল্লেখ করেন নিহত কচি একজন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন।
অপরাপর মামলার অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। মাদকের টাকার ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীর হোসেন কচির সঙ্গে তাদের মতবিরোধ দেখা দেয়। সে কারণে তাকে হত্যা করা হয়। স্বীকারোক্তিতে গ্রেনেড বাবু কচিকে ধারালো চাপাতি দিয়ে কোপানোর কথা স্বীকার করেন।
উল্লেখ্য,, তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা শাখার এসআই আমিরুল ইসলাম ২০১১ সালের ৫ জুলাই গ্রেনেড বাবুসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালীন ২৬ জনের মধ্যে ১২ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন।