স্পোর্টস ডেস্ক : ১ উইকেট হারিয়ে ৮৬ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করেছিল ভারত। আজ দ্বিতীয় দিনে তারা আরো ৫টি উইকেট হারায়। সারাদিনে রান তুলেছে ৪০৭। ৬ উইকেট হারিয়ে ৪৯৩ রান তুলে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা। লিড নিয়েছে ৩৪৩ রানের। রবীন্দ্র জাদেজা ৬০ রানে ও উমেশ যাদব ২৫ রানে অপরাজিত আছেন। সারাদিনে বাংলাদেশকে একাই ভুগিয়েছেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। গেল অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভিসাখাপত্তনমে ২১৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। আজ বাংলাদেশের বিপক্ষেও ছুঁলেন দ্বিশতক। মিরাজের করা ৯৯তম ওভারের পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন।
দিনের শেষভাগে ৩৩০টি বল খেলে ২৮টি চার ও ৮টি ছক্কার সাহায্যে ২৪৩ রান করে ফিরলেন এই ভারতীয় ওপেনার। দলীয় ৪৩২ রানে মিরাজের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে রাহির হাতে ক্যাচ হন তিনি। বল হাতে বাংলাদেশের আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী ৪টি উইকেট নিয়েছেন। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও এবাদত হোসেন।
এর আগে ইন্দোরে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ থেকে ৬৪ রানে পিছিয়ে থেকে ১ উইকেটে ৮৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই চেতেশ্বর পুজারার উইকেট পেতে পারতেন আবু জায়েদ রাহী। কিন্তু স্লিপে কঠিন ক্যাচ নিতে পারেনি মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে নিজের ওভারে এসে ঠিকই পুজারাকে ফিরিয়েছেন রাহী। মিরাজের বদলী সাইফের দুর্দান্ত ক্যাচে ৫৪ রানেই সাজঘরে ফিরে পুজারা। এরপর মায়াঙ্ক আগারওয়ালের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বিরাট কোহলি। কিন্তু ভারতীয় দলপতিকে বেশিক্ষণ ক্রিজে রাখেনি রাহী। রিভিউ নিয়ে বিরাট কোহলিকে ফিরিয়েছে বাংলাদেশ। ভারত অধিনায়ক মেরেছেন ডাক। আবু জায়েদ রাহী পেয়েছেন তৃতীয় উইকেট।
কোহলিকে হারিয়ে কিছুটা হোঁচট খায় ভারত। তবে সেই হোঁচট কাটিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। আর তাকে সঙ্গ দেন আজিঙ্কা রাহানে। আগারওয়াল তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক। আর রাহানে তুলে নেন অর্ধশতক। এই দুইয়ে মিলে গড়েন ১৯০ রানের বিশাল জুটি। এরপর নিজের ১৮তম ওভারে রাহানেকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন রাহী। ৮৬ রান করা রাহানে তাইজুল ইসলামের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান। ভারতের পতন হওয়ার প্রথম চার ব্যাটসম্যানকেই ফেরান রাহী।
ক্যারিয়ারের ৮ম টেস্টে খেলতে নেমে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসের ৯৯তম ওভারের ৫ম বলে মেহেদী হাসান মিরাজকে ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পূর্ন করেন ডাবল সেঞ্চুরি। এরপর ব্যাট হাতে আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠে মায়াঙ্ক। ঝড়ো গতিতেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম আড়াইশত রানের ইনিংসের দিকেই। এর আগে অবশ্য জাদেজার সঙ্গে গড়েন ১২৩ রানের জুটি। ইনিংসের ১০৮তম ওভারের তৃতীয় বলে বাউন্ডারি লাইন থেকে মায়াঙ্কের ক্যাচ ধরেন রাহী। আর এতেই শেষ হয় মায়াঙ্কের ক্যারিয়ার সেরা ২৪৩ রানের ইনিংস।
তবে দিনের শেষ দিকে এসে এবাদত তুলে নেন এই টেস্টে নিজের প্রথম উইকেট। মায়াঙ্ক আউট হয়ে ফিরে গেলে উইকেটে আসেন ঋদ্ধিমান সাহা। আর ইনিংসের ১১১তম ওভারের পঞ্চম বলে ১২ রান করা সাহাকে ক্লিন বোল্ড করে বিদায় করেন এবাদত। উমেশ যাদবের সঙ্গে ঝড়ো জুটি গড়ার পথে ৭২ বলে ফিফটি করেন জাদেজা। ৬০ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি, আর ২৫ রানে খেলছিলেন উমেশ।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গেছে ১৫০ রানে। দলের কোনো ব্যাটসম্যান করতে পারেননি ফিফটি। তিনবার জীবন পেয়ে মুশফিকুর রহিমের ৪৩ রান ছিল দলের সর্বোচ্চ। ইন্দোরের উইকেটে পেসারদের জন্য সহায়তা ছিল। তবে তাদের দারুণ বোলিংয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের পতন ডেকে এনেছে ব্যাটসম্যানদের বাজে শট নির্বাচনও।