নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ঢাকা ওয়াসার রাজস্ব জোন-১ এর উপ-প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সাঈদ ৩ নং জোনে দায়িত্বে থাকাকালিন ১৭ মাস যাবত সরকারী তেল এর টাকা চুরি করেছে। বিষয়টি হিসাব বিভাগ কর্তৃক টের পেয়ে সাঈদের মূল বেতন থেকে টাকা কর্তন করেছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। কারন রাজস্ব জোন -৩ এ তার নামে কোন সরকারী গাড়ী বরাদ্দ নাই। জোন- ৩ এর নামে ভাড়া করা গাড়ী বরাদ্দ আছে। সরকারি অর্থ আত্মসাতের মত অপরাধ করার পরও তার বিরুদ্ধে কোন বিভাগীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। মুলত: দুর্নীতির মূলহোতা প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এসএম মোস্তফা কামাল মজুমদারের আশির্বাদের কারনে তার বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। সাঈদ জোন -৩ এ থাকাকালীন সময়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমাও পরেছে । কিন্ত সে ওয়াসার মিডিয়া সেলের সদস্য হওয়াতে তা আলোর মুখ দেখেনি। তেল চুরির মত নিকৃষ্ট কাজ করেও আবু সাঈদের মিডিয়া কমিটিতে সিনাজুরি দেখে সাধারন কর্মকর্তারা বিস্মিত। তাদের মতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানের ইতিবাচক সংস্কারমূলক কার্যক্রম আবু সাঈদের মত দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তদের কারনে ম্লান হতে চলছে।
সূত্রমতে,সাঈদের আপন বড় ভাইকে জোন-১ এ বিলিং সহকারি পদে চাকুরী দিয়েছে। জোন- ৩ হতে নানা রকম অনিয়ম করে তদবির করে জোন- ১এ বদলি হয়ে গিয়েছে। বদলি হয়ে সেখানে গিয়ে আপন বড় ভাই আবু মুসাকে ১২১ ও ৩০৯ দুইটি বিলিং কোড বরাদ্দ দিয়েছে। উলে¬খ্য, সরকারী যে গাড়ীটির বরাদ্দ দেখিয়ে জোন- ৩ হতে তেলের টাকা চুরি করেছে, একই গাড়ীর দেখিয়ে রাজস্ব জোন- ৮ এর উপ প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা জাকির হোসেন প্রধানিয়াও প্রতি মাসে বেতনের সাথে তেলের টাকা উত্তোলন করেছে। উল্লে¬খ্য, জাকির হোসেন প্রধানিয়া হলেন ঢাকা ওয়াসার দুর্নীতি বিরোধী কমিটির সদস্য সচিব। অথচ তিনিই ওয়াসায় দুর্নীতির শিরোমনী।
দুর্নীতি দমন কমিশনে আবেদনের তথ্য অনুযায়ী,জাকির হোসেন প্রধানিয়া ও মোহাম্মদ আবু সাঈদ তাদের অধিনস্থ রাজস্ব পরিদর্শকদের নিয়মিত মাসোহারা আদায় করেন। তারা দু’জন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এসএম মোস্তফা কামাল মজুমদারের এজেন্ট হিসেবে ওয়াসার সকল জোন থেকে মাসোহারা আদায় করেন এবং প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তাকে নিয়মিত মাসোহারা প্রদান করেন। যেকারনে তাদের শত অপরাধ সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়না।
দুদকে অভিযোগে আরো বলা হয়েছে,মোহাম্মদ আবু সাঈদ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহার গড়ে তুেেছন। ঢাকার আফতাব নগরে বহুতল বাড়ি করেছেন। ঢাকার সবুজবাগ ও লালমাটিয়ায় বিলাশবহুল চারটি ফ্লাট ক্রয় করেছেন। কুমিল্লার গ্রামের বাড়িতে বাংলো ও প্রচুর ভূসম্পদ ক্রয় করেছেন। ব্যাংকে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে। যার তার জ্ঞাত আয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক একাউন্ট তলব করলে তার প্রমান মিলবে।চতুর সাঈদ নিজের নামে না করে তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে সম্পদ ক্রয় ও ব্যাংকে এফডিআর করেছে।
উল্লেখ্য,দুর্নীতি দমন কমিশন (প্রধান কার্যালয়ের নথি নং-০০.০১.০০০০.৫০১.০১.০১৪.২২ এবং প্রধান কার্যালয় ঢাকার ই/আর নং-৬২/২০২২-অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকী,সহকারী পরিচালক,প্রধান কার্যালয়) ঢাকা ওয়াসার প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এসএম মোস্তফা কামাল মজুমদারের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের বিষয়ে তদন্ত করছে। প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এসএম মোস্তফা কামাল মজুমদারের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের তদন্তের পাশাপাশি তার দুর্নীতির প্রধান সহযোগী উপ-প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু সাঈদ ও মো: জাকির হোসেন প্রধানিয়ার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ অবৈধ সম্পদ ও অন্যান্য অনিয়ম দুর্নীতি তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্যে আবেদনে দুদকের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে ।
এবিষয়ে বক্তব্য জানার জন্যে আবু সাঈদের সাথে চেষ্টা করেও যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।