বাংলাদেশ সাবধান, লাথাম কিন্তু ব্র্যাডম্যানের ওপরে!

ক্রিকেট খেলাধুলা

রড লাথামের টেস্ট ক্যারিয়ার এক বছরও টেকেনি। (৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯২ থেকে ৫ জানুয়ারি, ১৯৯৩) এর মধ্যেই চার টেস্ট খেলে দেখা পেয়েছেন এক সেঞ্চুরির। লাথাম নিশ্চয়ই এই আক্ষেপ ঘোচাচ্ছেন ছেলেকে দেখে। টম লাথাম। সংক্ষিপ্ত সংস্করণে ১ থেকে ৯—এর মধ্যে সব পজিশনেই ব্যাট করেছেন লাথাম ‘জুনিয়র’। ছিলেন রিজার্ভ উইকেটরক্ষকও। এসব ছাপিয়ে এখন লাথামের বড় পরিচয়, টেস্টে নিউজিল্যান্ডের নির্ভরযোগ্য ওপেনার। আর এই সংস্করণে প্রতিপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশকে পেলেই চওড়া হয়ে ওঠে তাঁর ব্যাট। এবার এতটাই যে ছাপিয়ে গেছেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যানকেও!


বিজ্ঞাপন

ব্র্যাডম্যানকে টেক্কা দেওয়ার হিসেবে পরে আসছি। আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে লাথামের টেস্ট পারফরম্যান্সের ফর্দাফাঁই হোক। এই সংস্করণে এ পর্যন্ত ৪২ ম্যাচ খেলেছেন লাথাম। এর মধ্যে ৩ ম্যাচ খেলেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছেন সর্বোচ্চ ৮ ম্যাচ। ন্যূনতম ৩ ম্যাচ হিসেবে নিলে সব প্রতিপক্ষের মধ্যে বাংলাদেশের বিপক্ষেই লাথামের ব্যাটিং গড় (১১৫.৭৫) সবচেয়ে বেশি। কিছুটা ধারে-কাছে থাকা (৮৪.৬৬) জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২ ম্যাচ খেলায় সেটি হিসেবের মধ্যে পড়ে না। বাকি দলগুলোর মধ্যে তাঁর সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে (৭৭.৫৫)।


বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের বিপক্ষে লাথামের যে দুটি সেঞ্চুরি, এর মধ্যে প্রথমটির দেখা পেয়েছেন ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে। সেই যে, সাকিব-মুশফিকের কাব্যিক ৩৫৯ রানের জুটি গড়ার ম্যাচ। বাংলাদেশের জন্য হেরে যাওয়া ম্যাচে প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ার তেতো স্মৃতিও। লাথাম সেই ম্যাচে খেলেছিলেন ১৭৭ রানের ইনিংস। আর এবার হ্যামিল্টনে টেস্ট সিরিজ শুরুই করেছেন ১৬১ রানের ইনিংস দিয়ে।

ব্যাটিং গড় হিসেবে নিলে ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভ প্রমাণ ব্যবধানে লাথামের সবচেয়ে প্রিয় টেস্ট ভেন্যু। এ মাঠে ৭ টেস্টে লাথামের ব্যাটিং গড় ৫৮.৮১। ন্যূনতম ৩ টেস্ট খেলেছেন এমন মাঠের মধ্যে ওয়েলিংটনেই লাথামের ব্যাট সবচেয়ে চওড়া। আর সেই ওয়েলিংটনেই কাল সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে লাথামের মুখোমুখি হতে হবে বাংলাদেশকে। সেটিও এমন এক সময়ে যখন ঘরের মাঠে চলতি মৌসুমে রয়েছেন দুর্দান্ত ফর্মে। সহজ কথায়, এবারের মৌসুমে ঘরের মাঠে চার ইনিংস খেলেই লাথাম ছাপিয়ে গেছেন ব্র্যাডম্যানের এক কীর্তিকে। এভাবেও বলা যায়, টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি ছুঁয়েছেন ব্র্যাডম্যানের গড়া মাইলফলক।

ধাঁধা লাগছে? খুলে বলা যাক। ১৯৩১-৩২ মৌসুমে ঘরের মাঠে ৫ টেস্টে ২০১.৫০ গড়ে ৮০৬ রান করেছিলেন ব্র্যাডম্যান। হ্যামিল্টন টেস্টের আগে এত দিন ব্র্যাডম্যানই ছিলেন একমাত্র ব্যাটসম্যান, ঘরের মাঠে পুরো এক মৌসুমে যার ব্যাটিং গড় ছিল ন্যূনতম ২০০। লাথাম আপাতত এই রেকর্ডে ব্র্যাডম্যানের একার দখল কেড়েছেন। আপাতত বলতেই হচ্ছে , মৌসুম এখনো শেষ হয়নি।

ঘরের মাঠে এবার নিউজিল্যান্ডের মৌসুম শুরু হয়েছে গত ডিসেম্বরে। এই বেসিন রিজার্ভেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই টেস্টে ৬৯৪ মিনিট ব্যাট করে ২৬৪ রান করেছিলেন লাথাম। ওই টেস্টে এক ইনিংসেই ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। ক্রাইস্টচার্চে পরের টেস্টে অবশ্য দুই ইনিংসেই ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ১০ রান করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে করলেন ১৭৬। এই দুই টেস্টে তিন ইনিংস মিলিয়ে লাথামের ব্যাটিং গড় ছিল কাঁটায় কাঁটায় ২২৫। এরপর হ্যামিল্টনে বাংলাদেশের বিপক্ষে করলেন ১৬১। এই টেস্টেও এক ইনিংসে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন লাথাম। আউট হওয়ায় চার ইনিংস মিলিয়ে ব্যাটিং গড়ও কমে নেমেছে ২০৩.৬৭-এ।

ওয়েলিংটনে কি তা বাড়বে? বেসিন রিজার্ভে নামলেই যে রান পান লাথাম। বাংলাদেশের বোলাররা সাবধান!


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *