নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ সচিবালয়ের আশেপাশে ঘোষিত ‘নীরব এলাকা’য় হর্ন বাজালেই জেল-জরিমানা করা হবে। সচিবালয়ের চারপাশের এলাকাকে ১৭ ডিসেম্বর থেকে ‘নো হর্ন জোন’ বা ‘নীরব জোন’ ঘোষণা করেছে সরকার। এরপর থেকে বাংলাদেশ সচিবালয়ের চারপাশের এলাকায় হর্ন বাজালে এক মাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
‘নীরব জোন’ কার্যকর করতে রোববার সচিবালয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আন্তঃমন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ‘নীরব জোন’ জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়, সচিবালয় লিংক রোড হয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকায় হর্ন বাজানো যাবে না।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে গত ২৫ নভেম্বর আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে সচিবালয়ের চারপাশ ‘নীরব জোন’ হিসাবে কার্যকরের সিদ্ধান্ত হয়। শব্দ দূষণের মারাত্মক ক্ষতি থেকে রেহাই দিতে এ সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের অধীনে প্রণীত ‘শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬’ অনুযায়ী ‘নীরব জোন’ বলতে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত বা একই জাতীয় অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান এবং এর চারিদিকে ১০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা এলাকাকে বুঝায়।
বৈঠকে উপস্থিত উপস্থিত কর্মকর্তারা। বিধিমালায় বলা হয়েছে, কেউ এই বিধান প্রথম লঙ্ঘণ করলে সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। পরবর্তী অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
শব্দ দুষণ রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রচারণার জন্য টেলিভিশেনে স্ক্রল, ফেসবুকে প্রচারণা, মোবাইলে ম্যাসেজ প্রদান এবং লিফলেট বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সভায়।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, আমরা সব মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেবো, যাতে তাদের কর্মকর্তাদের গাড়ির চালকেরা সচিবালয়ের আশেপাশে হর্ন না বাজায়। এছাড়াও সচিবালয়ের ভেতরেও লিফলেট বিতরণ করা হবে।
‘নীরব জোন’ কার্যকরের জন্য সচিবালয়ের চারপাশ অর্থাৎ জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়, সচিবালয় লিংক রোড হয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকায় চারটি নীরব জোন বা নো হর্ন জোন চিহ্নিত সাইন বোর্ড স্থাপন করা হবে। হর্ন বাজানো বন্ধে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
‘নীরব জোন’ বাস্তবায়নে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, জন নিরাপত্তা বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ পারস্পরিক সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করবে বলেও সভায় জানানো হয়।
‘নীরব জোন’ বাস্তবায়নে সচেতনতা সৃষ্টি করার উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং এ লক্ষ্যে গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা চেয়েছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।