নিজস্ব প্রতিবেদক : গতকাল রবিবার ৮ অক্টোবর, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে সম্প্রতি তিনটি বৈশ্বিক সম্মেলনে এভিয়েশন ও রেল ইন্ডাস্ট্রির স্মার্ট ব্যবস্থাপনার জন্য নত-নতুন সালুশনের বিষয়ে জানিয়েছে। বিমান ও রেল ইন্ডাস্ট্রির বিকাশের জন্য হুয়াওয়ের উন্নত প্রযুক্তি কতটুকু সহায়ক হবে সে বিষয়টি এই সম্মেলনগুলোতে আলোচনা হয়েছে।
বর্তমানে বিমান ও রেলওয়ে ইন্ডাস্টিতে নতুন প্রযুক্তিগত সমাধান আনার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং আরও অনেক প্রতিষ্ঠান ও দেশ এই বিপ্লবের ব্যাপারে আগ্রহী হচ্ছে। এই কারণে একটি উন্নত ডিজিটাল ও বুদ্ধিবৃত্তিক ভিত্তি ব্যবহার করে হুয়াওয়ে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির গভীরতর পর্যায়ে খুটি-নাটি বিষয় পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে একটি কার্যকরী উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে যা বিমান ও রেলের স্মার্ট ব্যবস্থাপনাকে ত্বরান্বিত করতে সক্ষম।
উদাহরণস্বরূপ, একটি বিস্তৃত মাপের ইনটেলিজেন্ট পরিবর্তন ও কলাকৌশল তৈরিতে চায়না ওয়েস্ট এয়ারপোর্ট গ্রুপ (সিডব্লিউএজি) হুয়াওয়েকে বেছে নিয়েছে। সিডব্লিউএজি -এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার লিন বিনের মতে, হুয়াওয়ের হাই- পারফরম্যান্স কম্পিউটিং দক্ষতা এবং ওপেন ইন্টেলিজেন্ট প্ল্যাটফর্ম তো রয়েছেই; এর পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রির জন্য হুয়াওয়ের উন্নত অ্যালগরিদম ব্যবহার করে তাঁর প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা, অপারেশন, পরিষেবা এবং অন্যান্য কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ৩৫টি ইনটেলিজেন্ট সল্যুশন / বুদ্ধিবৃত্তিক সমাধান তৈরি করেছে।
বিমানবন্দরে কার্যক্রম পরিচালনায় এ বুদ্ধিবৃত্তিক সমাধান ব্যাপকভাবে সহায়তা করতে পারে। সুনির্দিষ্ট, ডিজিটাল ও বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সমাধানগুলি বিমানের ফ্লাইট, যাত্রী ও রিসোর্সের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট সময়ের পূর্বাভাসের পাশাপাশি দ্রুত সতর্কতা জারি করে, প্রয়োজনে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার বিতরণেও কাজ করে। এ সল্যুশন্স গ্রাউন্ড সাপোর্টের কার্যকারিতা ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়ে সাপোর্ট নেওয়ার সময়কে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। এছাড়াও, এর স্মার্ট এয়ারপোর্ট অপারেশন সল্যুশন সর্বোত্তম সরবরাহ চাহিদার মিল রেখে এআই-সহায়ক অপারেশন কমান্ড পেতে একটি সন্তোষজনক ফ্লাইট প্ল্যান মডেল চালু করেছে।
হুয়াওয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হুয়াওয়ের এভিয়েশন অ্যান্ড ব্রেল বিজনেস ইউনিটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লিজুনফেং গ্লোবাল রেলওয়ে সামিটে একটি উদ্বোধনী বক্তৃতা দেন। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে, জিএসএম-আর ধীরে ধীরে বাজার
থেকে বেরিয়ে আসছে, সেই সঙ্গে রেলওয়ে ইন্ডাস্ট্রির দক্ষতা ও সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি হাই-কোয়ালিটির উন্নয়ন বজায় রাখার জন্য একটি নেক্সট-জেনারেশন মোবাইল কমিউনিকেশন্স সিস্টেম প্রয়োজন।
এই পরিপ্রেক্ষিতে, হুয়াওয়ে রেলওয়ে ইন্ডাস্ট্রিকে আরও ভালোভাবে উপস্থাপনের জন্য কীভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করতে পারে তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। এক্ষেত্রে চর্চা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তারা উল্লেখযোগ্য অর্জন করেছে।উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, হুয়াওয়ে স্মার্ট রেলওয়ে টিএফডিএস সলিউশন’ তৈরি করতে দুইটাই (Huitie) টেকনোলজি’- এর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করেছে, যেখানে তিন বিলিয়ন আলাদা আলাদা নির্ণায়ক সম্বলিত ‘পাসু রেলওয়ে মডেল’ ব্যবহার করা হয়। সল্যুশনটি সকল টিএফডিএস পরিস্থিতিকে কভার করে এবং কার্যকরভাবে ৬৭টি গাড়ির মডেলের ৪৩০টিরও বেশি ধরণের ত্রুটি সনাক্ত করে যার ত্রুটি সনাক্তকরণের হার ১৯.৩ শতাংশেরও বেশি। গুরুতর ত্রুটি সনাক্তের ক্ষেত্রে এর ব্যর্থতার হার প্রায় শূন্য যা এর অপারেশনাল দক্ষতাকে তিনগুণ করে। তিনি তার বক্তৃতা শেষ করেন এই বলে যে “নির্দিষ্ট পরিস্থির জন্য সঠিক প্রযুক্তি খুঁজে পেতে এবং সর্বাত্মকভাকে ব্যবসায়িক সাফল্যে অবদান রাখতে হুয়াওয়ে আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অন্বেষণ চালিয়ে যাবে।”
ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে, হুয়াওয়ে বিমান ও রেল ইন্ডাস্ট্রিতে গ্রাহকদের সেবা দিতে এই খাতের সকলকে একীভূত করার কাজ চালিয়ে যাবে। কোম্পানিটি ইন্টেলিজেন্ট আপগ্রেডের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নকে শক্তিশালী করে এবং নবীনদের সক্রিয়ভাবে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে আরও নিরাপদ ও দক্ষ পরিবহন এবং উচ্চ মানের পরিষেবা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।