নিজস্ব প্রতিনিধি (জামালপুর) : জামালপুরের মাদারগঞ্জের পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেলের নিজের স্বীকারোক্তি মুলক একটি চাদাবাজির অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে বেশ আলোচনা ও সমালোচনা ৷ বিষয়টি নিয়ে দল থেকে অব্যাহতি বা বহিষ্কারের দাবী জানিয়েছেন পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা।

এদিকে চ্যানেল ২৪ প্রচারিত মুক্তবাক অনুষ্ঠানে কে কার পকেটে বিষয়ে শিরোনামে নাজনীন নাসির দোলার সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে সাবেক সংসদ সদস্য ও আইনজীবী রুমিন ফারহানা,সিনিয়র সাংবাদিক আশরাফ কায়সার, ইনকিলাব মঞ্চের মুখ পাত্র শরীফ ওসমান অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে নাজনীন নাসির দোলা ৭ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের মাদারগঞ্জের পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেলের চাদাবাজি নিয়ে প্রশ্ন তুললে সাবেক সংসদ সদস্য ও আইনজীবী রুমিন ফারহানা বলেন, সরকার কি পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে? করা দরকার ছিল না? তিনি আরো বলেন, ওনাকে দল বহিষ্কার করবে, ধরে নেওয়া যায় দল বহিষ্কার করবে। আর ওনার পটাকশনে যে পুলিশ কর্মকর্তা ওনাকে ২ লাখ টাকা দিলেন।

হঠাৎ বহিষ্কারের বিষয়ে আবারো প্রশ্ন ছুড়লে রুমিন ফারহানা বলেন যদি বহিষ্কার না হয়ে থাকে তাহলে ওনার বার্ডেন দল বিয়ার করবে। ওনার বার্ডেন দল বিয়ার করবে। লেট দা পার্টি বিয়ার রাবিশ৷ এই সরকারের দায়িত্ব ছিল না, তার একজন কর্মচারী ২ লাখ টাকা দিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে? অত্যন্ত তদন্ত করা ?

বিএনপি ৪০০০ ওপরে বহিষ্কার করেছে। সেটা কেন কাজ করছে না, সেটাও বিএনপিকে খতিয়ে দেখতে হবে। এবং এই কাজ না করবার জন্য দেশব্যাপী বিএনপির যে ইমেজের সঙ্কট তৈরি হচ্ছে এবং আপনারা যে আমাদেরকে পেলেই যে চাদাবাজির প্রশ্ন করছেন একটা টাকাও এদিক সেদিক না করে আমাকে যে জবাব দিতে হচ্ছে এটা আমার খুব সুখখর অভিজ্ঞতা না ভাই। ৪৭ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের আরো রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন আলচনা হয়।
সেই আলোচনার আংশিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে অতি দ্রুত পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেলকে বহিষ্কার ও পরবর্তী ব্যবস্থার নেওয়ার দাবী জানিয়েছে নেতা কর্মীরা।
জানা যায়, গত ১৮ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পেইজ ও প্রোফাইল থেকে মাদারগঞ্জের পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেলের নিজের স্বীকারোক্তি মুলক ৬ মিনিট ১০ সেকেন্ড ৩ / ৪ জনের কথোপকথনে একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর মাদারগঞ্জের পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেল জামালপুর শহরে এসে এশিয়া ফুড ভিলেজ রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে সোহেল তালুকদার দাবী করেন, গত রমজান মাসে একটি ইফতার মাহফিলের প্রস্তুতি সভার আগে রেকর্ড করা হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন মাদারগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুল গফুর, সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যাপক রাকিব লিটন, সাবেক সভাপতি হাবলুল গাজী বেলাল, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ইউসুফ হাসান অভিসহ আরও অনেকে। তিনি আরও জানান, পারিবারিক ও বন্ধুমহলে আড্ডার সময় কথোপকথনের একপর্যায়ে কৌশলে তাকে উসকানি দেওয়া হয়। রাগ ও আবেগের বশে কিছু কথা বলে ফেলেন, যা বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। একটি স্বার্থান্বেষী মহল তার অজান্তে কথোপকথনটি রেকর্ড করে তা ফাঁস করে তাকে ব্ল্যাকমেইল করার অপচেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ দিকে পৌর বিএনপির সদস্য বাবু ফকির জানান, ওনি যা বলেছেন আমরা শুনেছি। রাজনৈতিক নেতারাও শুনেছে। ৫ তারিখের আগে কি ছিল ৫ তারিখের পর কি হল সব মিলিয়ে তদন্ত করেন। ব্যক্তির দায়ভার তো দল নিবে না। আমরাও নিব না। দল এখন কি করে এটাই বড় বিষয়৷
তবে এদিকে মাদারগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুল গফুর জানান, তাকে নিয়ে এর আগে আমাকে সেনাবাহিনীরা বলেছে। আমি তাকে কয়েকবার সতর্ক হওয়ার জন্য বলেছি। অডিওটি কে বা কারা ছেড়েছে আমি জানি না।
অন্যদিকে এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রতনকে মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মঞ্জুর কাদের বাবুল খান জানান, আমরা বিষয়টি জেলার নেতাদের জানিয়েছি।