নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় ব্যবসা করতে হলে বাণিজ্যিক অনুমতি (ট্রেড লাইসেন্স) নিতেই হবে। এছাড়া কাউকে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
গতকাল মঙ্গলবার ৭ নভেম্বর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটরিয়ামে রাজস্ব আদায়ের সার্বিক পর্যালোচনা সভা ‘রাজস্ব সম্মেলন’ এ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এই মন্তব্য করেন।
ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আমাদের রাজস্ব মেলাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও রাজস্ব আদায়ে আমাদের অভিযানগুলো আরো কঠোর করতে হবে। ব্যক্তি বিশেষের প্রতিষ্ঠান, নামকরা মার্কেট বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা — যে-ই হোক না, কেউ যদি বাণিজ্যিক অনুমতি (ট্রেড লাইসেন্স) না করে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন, তাহলে প্রয়োজনে সেসব স্থাপনা-মার্কেট সিলগালা করে দিতে হবে, ক্রোক করতে হবে। এ ধরনের কিছু উদাহরণ সৃষ্টির করা হলে বাকিরাও নড়েচড়ে বসবে। সেজন্য আমাদের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে আরও কঠোরতা প্রদর্শনের নির্দেশ দিচ্ছি। বাণিজ্যিক অনুমতি ছাড়া আমরা কাউকে ঢাকা শহরে ব্যবসা পরিচালনা করতে দিবো না”
কর সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানে জড়িত সকলের আচরণগত পরিবর্তনের ওপর গুরুত্বারোপ করে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “রাজস্ব আদায়ে একটি বড় বিষয় হলো — আপনার আচরণ, আপনার ব্যবহার। এক্ষেত্রে আপনার দপ্তরে যারা সেবাটা নিতে আসছেন তাদের সাথে ভালো আচরণ করবেন, সুন্দর ব্যবহার করবেন। সেবা নিতে এসে একজন ব্যক্তির যেন আপনার দপ্তরে তিনবার, চারবার আসা না লাগে। সেটা কাম্য নয়। যেদিন এসেছেন সেদিনই তাকে সেবাটা দিবেন। প্রয়োজনে একটু বিলম্ব হলেও সেদিনই সেবাটা দেবেন। তাকে কালকে আসেন, পরশু আসেন, তিনদিন পরে আসেন, দশ দিন পরে আসেন — এসব বলা যাবে না। এতে করে সে ব্যক্তি কর দেওয়ার মানসিকতা হারিয়ে ফেলেন। আপনার আচরণগত কারণে বা তাকে যথাযথ সেবা দেওয়া থেকে বঞ্চিত করার কারণে একজন আগ্রহী করদাতাও করখেলাপি হয়ে যেতে পারেন। সুতরাং কোনো আগ্রহী করদাতাকে করখেলাপি বানাবেন না।”
এ সময় হয়রানি ছাড়া জনগণকে সেবা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কঠোরতা দেখানো হবে উল্লেখ করে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আমরা কিন্তু ঝুড়িতে একটাও পঁচা আম রাখতে চাই না। আপনারা জানেন যে, আমরা পঁচা আম ফেলে দিচ্ছি এবং আরও পঁচা আম আমরা ফেলতে থাকব। এটা চলমান প্রক্রিয়া। আমার দাদি বলতেন, একটা ঝুড়িতে একটা পঁচা আম থাকলে বাকি আমগুলোতেও পচন ধরে। আমের ঝুড়ি থেকে প্রথমে আমগুলো নিয়ে নিচে রাখতে হয়। তারপর যেগুলো ভালো সেগুলোকে ঝুড়িতে রাখতে হয়। যেগুলো পঁচা আম সেগুলো ফেলে দিতে হয়। সুতরাং এখনো যে কটা পঁচা আম আছে বা এখনো যারা অন্যভাবে চিন্তা করেন তারা এখানে থাকতে পারবে না। এখানে থেকে কোনো ধরনের গাফিলতি, অবহেলার সুযোগ নেই।”
করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হকের সঞ্চালনায় রাজস্ব সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব সচিব আকরামুজ্জামান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের মধ্যে (অঞ্চল-১ ও ৭) মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম , (অঞ্চল ২ ও ৬) সোয়ে মেন জো, (অঞ্চল-৩) বাবর আলী মীর, (অঞ্চল ৪ ও ১০) মো. আতাহার মিয়া, (অঞ্চল ৫ ও ৯) মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার এবং (অঞ্চল-৮) মোহাম্মদ শফিউর রহমান প্রমুখ রাজস্ব আদায় বৃদ্ধিতে বিদ্যমান প্রতিকূলতা ও আগামীদিনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে নিজ নিজ মতামত ব্যক্ত করেন।
আজকের রাজস্ব সম্মেলনে উপ-প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শাহজাহান আলীসহ কর্পোরেশনের কর কর্মকর্তা, উপ-কর কর্মকর্তা, বাজার সুপারভাইজর, লাইসেন্স ও বিজ্ঞাপন সুপারভাইজর, রেভিনিউ সুপারভাইজার, রেন্ট এসিট্যান্স, হিসাব সহকারীসহ রাজস্ব বিভাগের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন।