নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ আগামী বর্ষা মৌসুমে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলে নৌকা বাইচ আয়োজন করার আশাবাদ জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
গতকাল বুধবার (২২ নভেম্বর) সকালে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলে চলমান কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আমরা যে জায়গার উপর এখন দাঁড়িয়ে আছি সেটা ভরাট অবস্থায় ছিল। ভরাট অবস্থায় এই জমির উপরে (স্থানীয় সরকার) মন্ত্রীসহ আমরা এখানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলাম। তখন মাত্র ৩০ থেকে ৪০ ফুটের সংকীর্ণ একটি খালের মতো অবস্থা ছিল। কিন্তু আজকে আদি বুড়িগঙ্গা তার পূর্বের রূপ ফিরে পেয়েছে। বর্তমানে ৬০০ ফিটের (প্রশস্ততা) ঊর্ধ্বে পূনঃখনন করে আমরা আদি বুড়িগঙ্গাকে পুনরুজ্জীবিত করেছি। যেহেতু এখন শুষ্ক মৌসুম সেজন্য পানি কম। ইনশাল্লাহ আগামী বর্ষা মৌসুমে এখানে পানি টলমল করবে, ভরা থাকবে। বাকি যেটুকুও দখল অবস্থায় আছে সেগুলো দখল মুক্ত হয়ে আদি বুড়িগঙ্গা তার পূর্ণ রূপ ফিরে পাবে। আমরা আশা করছি যে, আগামী বর্ষা মৌসুমী এখানে নৌকা বাইচসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক কার্যক্রম আয়োজন করতে পারব। যেটা ঢাকাবাসী উপভোগ করবে, অংশগ্রহণ করবে।”
আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের পুনরুজ্জীবন মানে ঢাকা শহরেরও পুনরুজ্জীবিত হওয়া উল্লেখ করে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আমাদের পরামর্শকরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। আমরা সাত কিলোমিটার করে দুই পাশের ১৪ কিলোমিটারে নান্দনিক পরিবেশ, গণপরিসর, হাঁটার পথ, সাইকেল চালানোর পথ সৃষ্টি করবো। এখন পরামর্শকরা নকশা প্রণয়ন করছে। আমরা আশা করছি, আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে নকশা প্রণয়ন শেষ হবে। তারপর নতুন সরকার গঠন হওয়ার পরে আমরা একনেকে এটার প্রকল্প পেশ করতে পারব। সে প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আদি বুড়িগঙ্গা একটি নান্দনিক নদীতে রূপান্তরিত হবে। এটা অনেকটা দুঃস্বপ্ন ছিলো যে, আদি বুড়িগঙ্গা পুনঃখনন করে পূর্বের রূপে ফিরে আসবে। কিন্তু সেই দুঃস্বপ্নকে স্বপ্নে রূপান্তরিত করে আদি বুড়িগঙ্গাকে পুনরুজ্জীবিত করতে আমরা আমাদের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছি। আদি বুড়িগঙ্গার পুনরুজ্জীবন মানে ঢাকা শহরেরও পুনরুজ্জীবিত হওয়া।”
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “এই বেড়িবাঁধের যে ঢাল সেটা আগে দেখা যেত না। পুরোটা দখল অবস্থায় ছিল। আমরা সেগুলো পরিষ্কার করেছি। এখানে ছোট্ট একটি দ্বীপের মতো (জায়গা দখল অবস্থায়) রয়েছে। আমরা তাদেরকে সুযোগ দিয়েছিলাম, তারা কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারে কিনা। কিন্তু তারা দেখাতে পারেনি। সুতরাং আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমরা সেটা পরিষ্কার করে ফেলব। এটি পুরোটাই দখলমুক্ত হবে। নদীর মধ্যে আমরা কোনো কিছুই থাকতে দিবো না।”
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বাবর আলী মীর, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মুনিরুজ্জামান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. খায়রুল বাকের, কাউন্সিলরদের মধ্যে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মকবুল হোসেন, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মোকাদ্দেস হোসেন জাহিদ, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আনোয়ার ইকবাল সেন্টু, ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. নুরে আলম, ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ হোসেন, ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সাইদুল ইসলাম এবং সংরক্ষিত আসনের নিলুফার রহমান ও শেফালি আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।