মোস্তাফিজুর রহমান : রাজধানীর কদমতলী পূর্ব জুরাইনে খাদ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ডিলার হাবিবের বিরুদ্ধে ও এম এস এর পণ্য চুরির অভিযোগ উঠেছে একাধিকবার। কদমতলী খাদ্য অধিদফতরের আঞ্চলিক শাখায় লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। চুরি করে বেশিদামে পন্যবিক্রি করার অপরাধে স্থানীয় রুবেল মিয়া লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্তা না নিয়ে গড়িমশি করছেন খাদ্যনিয়ন্ত্রক জুড়াইনের আঞ্চলিক অফিস।
অভিযোগের কোনো নিস্পত্তি না হলেও আবারও চুরির ঘটনা ঘটেছে। জনগনের তোপের মুখে পন্যসহ ট্রাক আটক করে জনতা। পরে ডেমরা থানার পুলিশকে বিষয়টি জানালে তাদের আসতে দেরি হওয়ায় দ্রুত পালিয়ে যায় হাবিরের ট্রাকসেল কর্মীরা। বিষয়টি জেনেও জুড়াইন খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা চোখ বন্ধ করে আছেন। গত ৩ মে একটি জাতীয় দৈনিকে ” খাদ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ও এম এস এর পন্য চুরির অভিযোগ” শিরোনামে রিপোর্ট প্রকাশিত হয।উক্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর সে কাউকে পরোয়া না করে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। এবং চুরির মাত্রা বাড়িযে দিয়েছেন।
ও এম এস এর পণ্য ডেলিভারি পাওয়ার পরে ট্রাকে সেল করার নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না ডিলার করিম খানের ছেলে হাবিব। খাদ্য অধিদপ্তর থেকে ডেলিভারি নিয়ে তার নিজস¦ দোকানের গোডাউনে তালা বদ্ধ করে রাখেন। সুনসান রাত গভীর হলে গোপনে বেশি মুনাফায় অন্য দোকানির কাছে বিক্রি করেন। যে কারণে তিনি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। তিনি এতই বেপরোয়া হয়েছেন কোনো সংবাদ কর্মী তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে তার নিজস্ব গুন্ডাবাহিনী দিয়ে হেনস্তা করতে দ্বিধাবোধ করেন না। আবার কোনো কোনো সাংবাদিককে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছেন।
ও এম এস এর পণ্য বিক্রির ফুটেজসহ কদমতলী থানায় অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছেনা। থানা পুলিশ, ও স্থানীয় নেতা, পাতিনেতাসহ সবার সাথে গড়েতুলছেন সখ্যতা, যে কারণে সাধারণ মানুষ ভঁয়ে মুখ খুলতে নারাজ। খাদ্য অধিদপ্তরের পণ্য ডেলিভারিতেও রয়েছে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপণা। আব্দুল করিমের নামে লাইসেন্স থাকলেও সাম্প্রতিক পরিচালনা করছেন তাঁর ছেলে হাবিব।
জানা গেছে গত ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেল অনুমান চারটা ৩০মিনিটে সংবাদকর্মী জেসিকাসহ তিন সদস্যের একটি দল পূর্ব জুরাইন ও এম এস এর পণ্য বিক্রির অভিযোগ পেয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে যান। যাওয়ার আগে কদমতলী থানা অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম কে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি আইনের সুরক্ষা দিবেন বলে আশ্বস্থ¯করেন। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ডিলার হাবিবের কাছে তথ্য চাওয়া হলে,তথ্য না দিয়ে তালবাহানা করতে থাকে।
পরবর্তীতে ঘটনা সামাল দেওয়ার জন্য দৈনিক যুগান্তরের কদমতলী থানা প্রতিনিধি খোরশেদ নামের ওই ব্যক্তি ধামাচাপা দেওয়ার প্রস্তাব দেন।প্রস্তাবে আরও বলেন,আমি আপনারা একই পেশায়,স্থানীয়ভাবে কিছু কিছু বিষয় ছাড় দিতে হয় বলে পাঁচ হাজার টাকা বেরকরে দেন। উক্ত প্রস্তাবে রাজি না হলে ঘটে যায় বিপত্তি। ওই সময় ডিলার হাবিব নিরুপায় হয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের হেনস্তা করার জন্য তার পোষা গুন্ডাবাহিনী লেলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
ঘটনাটি টের পেয়ে কদমতলী থানার ওসিকে জানালে কোন জবাব না দিয়ে তাঁর ফোন বন্ধ করে দেন।পরে থানার ডিউটি অফিসারকে জানালে তিনিও অপরাগতা প্রকাশ করে বলেন,এটা ওসি স্যারের ব্যাপার আমি আপনাদের কোনো সহযোগিতা করতে পারব না। আপনারা স্যারকে ফোন দিতে পারেন। হাবিবের আচরণে এবং ওসির ফোনে কোনো রেসপন্স না পাওয়ায় অপরাধীর সঙ্গে সখ্যতার প্রমাণ নিশ্চিত হয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা দ্রুত ঘটনা স্থল ত্যাগ করেন।
স্থানীয় সূত্র বলছে ,প্রতি বৃহস্পতিবার পণ্য আমদানি করে তার নিজস্ব গোডাউনে রেখে গভীর রাতে বস্তা পরিবর্তন করেন। তিনদিন তার গোডাউনে জমা রেখে গোপনে গভীর রাতে বিক্রি করেন। থানা পুলিশকে বখরা দেওয়ায় গোপনে সব ধরনের সহযোগিতা করছেন।
তবে এ তালিকায় সরকার দলীয় নেতা,পাতিনেতারা ও জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। সূত্রটি আরও বলছে খাদ্য অধিদপ্তরের জিকরুল আলম ইয়ারো, জুড়াইন এলাকার হুমায়ুন খাদ্য পরিদর্শক নামের কর্মকর্তাগণ পণ্য বিক্রির কাজে সহযোগিতা করছেন বলে জানা যায।যে কারণে প্রতি বৃহস্পতিবার পণ্য ডেলিভারি দেওয়ার পেছনে হাত রযেছে।
এসব অনিয়মের বিষয় জানতে চাইলে ডিলার করিম খানের ছেলে হাবিব বলেন,আপনি অফিসে গিয়ে অভিযোগ দেন আমাকে ফোন দেবেন না। আমার নামে কোনো লাইসেন্স নাই যা করার অফিস করবেন বলে ফোন কেটে দেন। পরে ফোন দেলে ফোন কল গ্রহণ করেননি।
খাদ্য অধিপ্তরের ইয়ারো জিকরুল আলম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি সকালের সময়কে জানান, গভীর রাতে পণ্য বিক্রি করলে আমরা ঠেকাতে পারিনা।
আমাদের ওই সময় ডিউ্টি থাকেনা বা আমাদের পাহারা দেওয়ার কাজ না। যদি আমরা অভিযোগ পাই তাহলে আবশ্যই ব্যবস্থা নেবো।অফিযোগ পেয়েও কেন ব্যবস্থা নিলেন না এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি এ কর্মকর্তা। এসব বিষয় জানার জন্য কদমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম ‘গণমাধ্যম কে’ জানান আমাকে কেউ ফোন করেননি বা আমার ফোন কথনও বন্ধ থাকেনা।