লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সংকট: চিকিৎসা বঞ্চনায় হাজারো মানুষ

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ স্বাস্থ্য

সফিকুল ইসলাম (লালমনিরহাট)  :  পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। ৩৩টি অনুমোদিত পদ থাকলেও বর্তমানে মাত্র ৩ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে পুরো উপজেলা স্বাস্থ্যসেবার কার্যক্রম। এতে চিকিৎসা বঞ্চনায় পড়েছেন উপজেলার হাজার হাজার সাধারণ মানুষ।


বিজ্ঞাপন

উপজেলার প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য এ হাসপাতালই একমাত্র ভরসাস্থল। প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন। অথচ, মাত্র ৩ জন চিকিৎসক দিয়ে এসব রোগী দেখা, জরুরি বিভাগ পরিচালনা এবং ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে।


বিজ্ঞাপন

রোগীদের দুর্ভোগ চরমে  :  স্থানীয় বাসিন্দা রহিমা বেগম জানান, “আমার ছেলেকে জ্বর-ডায়রিয়া নিয়ে সকাল ৯টায় হাসপাতালে এনেছিলাম, দুপুর ২টা পর্যন্ত বসে থেকেও ডাক্তার পাইনি। শেষে বাধ্য হয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যেতে হয়েছে।”


বিজ্ঞাপন

আরেক রোগী মাহবুবুর রহমান বলেন, “দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও চিকিৎসা মেলে না। অনেক সময় নার্সদের কাছ থেকেই ওষুধ লিখে নিতে হয়।


বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তার মন্তব্য  : এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএসসি) ডা. দেবব্রত কুমার রায় জানান, চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি আমরা বারবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। অনুমোদিত ৩৩টি পদের মধ্যে ৩/৪জন ডঃ দিয়ে চলছে জনসাধারণের চিকিৎসা সেবা , এবং অধিকাংশই ডঃ শূন্য। বারবার চাহিদা পাঠানো হলেও এখনো কোনো আশ্বাস মেলেনি।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রতিক্রিয়া :  পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, “এটা খুবই উদ্বেগজনক। এত বড় একটি উপজেলায় মাত্র ৩ জন ডাক্তার দিয়ে হাসপাতাল চালানো যায় না। আমি ব্যক্তিগতভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে :  স্বাস্থ্য খাত বিশ্লেষকরা বলছেন, একদিকে জনসংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। এতে করে দরিদ্র ও সীমান্তবর্তী অঞ্চলের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট শুধু একটি প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়—এটি জনগণের মৌলিক স্বাস্থ্য অধিকার হরণের স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি। অবিলম্বে চিকিৎসক নিয়োগ ও যথাযথ ব্যবস্থাপনার দাবি জানাচ্ছে পাটগ্রামের জনগণ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *