নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা, গত ১৮ মে, দেশের অন্যতম দুই মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও বাংলালিংক তাদের নেটওয়ার্ক অবকাঠামো শেয়ার এর সম্ভ্যবতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে। মোবাইল নেটওয়ার্কের মান ও গতি বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশব্যাপী ফোর-জি’র প্রসার বাড়াতে এই যৌথ উদ্যোগ নিয়েছে অপারেটর দুটি।
বিশ্বে টেলিযোগাযোগ শিল্পে নেটওয়ার্ক অবকাঠামোর যৌথ ব্যবহার জনপ্রিয় ও স্বীকৃত। এর মাধ্যমে সম্পদের সদ্ব্যবহার করে জ্বালানির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে উভয় প্রতিষ্ঠানই টেকসই পরিবেশ রক্ষার প্রতিশ্রুতি সমুন্নত রাখতে পারে। এছাড়া, এর ফলে ব্যয় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধি ও টেলিযোগাযোগ সম্পদের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করায় সেবার মান ও মূল্য সংযোজন পরিষেবায় (ভিএএস) বেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরী করে। টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এ ধরণের যৌথ উদ্যোগে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
১৭ মে, শুক্রবার, রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ ঘোষণা দেন। বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস ২০২৪ উপলক্ষে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। অনুষ্ঠানে রবি ও বাংলালিংক সমঝোতা চুক্তিটি স্বাক্ষর করে।
গ্রাহকদের উন্নত ও মানসম্মত সেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় এই উদ্ভাবনী যৌথ উদ্যোগ নতুন মাইলফলক তৈরি করবে। এই চুক্তির মাধ্যম উভয় অপারেটরের গ্রাহকগণ বৈচিত্রময় ও উদ্ভাবনী ডিজিটাল সেবা ব্যবহার করার মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক হিসেবে জীবনমান উন্নয়নের সুযোগ পাবে।
এ বিষয়ে এক যৌথ বিবৃতিতে রবি ও বাংলালিংক-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “এই সময়োপযোগী ও গতিশীল উদ্যোগ দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে। আমাদের গ্রাহকদের জন্য আরও উন্নত সেবা ও দেশব্যাপী নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করার ব্যাপারে আমরা বদ্ধপরিকর। এক্ষেত্রে আমাদের প্রথম পদক্ষেপ হবে নেটওয়ার্ক শেয়ার-এর প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সম্ভাব্যতা যাচাই করা। প্রয়োজনীয় নীতিগত পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার পর নেটওয়ার্ক অবকাঠামোর যৌথ ব্যবহার শুরু হবে। আমাদের লক্ষ্য হল সকল গ্রাহকের জন্য শক্তিশালী টেলিযোগাযোগ সংযোগ নিশ্চিত করা, যাতে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য অর্জিত হয়। এই ধরণের দূরদর্শী উদ্যোগের প্রতি সর্বদা সমর্থন দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-এর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।”
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, “সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ মাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে দেশের টেলিযোগাযোগ শিল্পকে অন্যতম চালিকাশক্তিতে রুপান্তর করতে আমরা কাজ করছি। টেলিযোগাযোগ একটি অপরিহার্য সেবা, যা গ্রাহকদের ডিজিটাল পরিষেবা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে গুরত্বপূর্ণ সংযোগ সেতু হিসাবে কাজ করে। রবি ও বাংলালিংকের মধ্যে এই যৌথ উদ্যোগ নতুন উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে। পাশাপাশি, এটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন কর্মকান্ডে দেশের সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারকেও উৎসাহ প্রদান করবে। রবি ও বাংলালিংকের এই যৌথ উদ্যোগ দেশজুড়ে নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক সেবা প্রদানের মাধ্যমে দেশের মানুষের জীবনকে আরও উন্নত করবে বলে আমার বিশ্বাস।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, বিপিএএ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মোঃ সামসুল আরেফিন, বিটিআরসি-এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহজাহান মাহমুদ, বাংলালিংক-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক অস, রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম, বাংলালিংক-এর চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমানসহ রবি ও বাংলালিংক-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।১০%) পাশাপাশি বিশ্ব টেলিযোগাযোগ বাজারের অন্যতম কোম্পানি ভারতী এয়ারটেলের (ভারত) শেয়ার রয়েছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর। দেশের মানুষের জন্য প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ডিজিটাল সেবা আনছে কোম্পানিটি। দেশের প্রতিটি প্রান্তে উদ্ভাবনী সেবা পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশে রবি অব্যাহত বিনিয়োগের মাধ্যমে শক্তিশালী টেলিযোগায্যেগ অবকাঠামো গড়ে তুলেছে। দেশজুড়ে থাকা এ অবকাঠামো ডিজিটাল পণ্য ও সেবা সরবরাহের পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল প্রতিবেশ গড়ে তুলতে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। শহর কিংবা গ্রাম যেখানেই যেখানেই হোক রবির হাত ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে হাটছে দেশবাসী।