যশোর জেলার নবাগত পুলিশ সুপার মো: মাসুদ আলম বিপিএম (বার) পিপিএম।
সুমন হোসেন, (যশোর) : যশোরের নবাগত পুলিশ সুপার তার প্রথম কর্ম দিবসে যশোর পুলিশ বিভাগের বিভিন্ন শাখার সার্বিক অবস্থা খোঁজখবর নিতে ছদ্মবেশে সরেজমিনে গিয়ে যেমন যশোরবাসীকে অবাক করে দিয়েছেন, তার পাশাপাশি তিনি নিজেও বিস্মিত হয়েছেন। যে কারনে তিনি সর্ব-স্তরের মানুষের প্রশংসায় ভাসছেন। বলছিলাম যশোর জেলার নবাগত পুলিশ সুপার মো: মাসুদ আলম বিপিএম (বার) পিপিএম এর কথা।
তিনি বুধবার সকাল বেলায় উঠে নিজে মটরসাইকেল চালিয়ে প্রথমে জেলা প্রশাসকের বাংলোয় যান, সেখানে কর্মরত গার্ড পুলিশ তাকে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন ডিসি সাহেবের সঙ্গে দেখা করবেন, কিন্তু সেখানকার কর্মরত গার্ড তাকে ডিসি সাহেবের পারমিশন ছাড়া ঢুকতে দেন নি।
পরে তিনি সেখান থেকে চলে আসেন ট্রাফিক অফিসে, সেখানে এসে তিনি কাউকে না পেয়ে চলে যান সরাসরি চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়িতে। পুলিশ ফাঁড়ির গেট দীর্ঘক্ষন ঝাকাঝাকি করার পরেও কেউ গেট খুলতে আসেননি।এই অবস্থা দেখে সেখান থেকেও তিনি ফিরে আসেন।
এরপর তিনি চলে আসেন কোতয়ালি মডেল থানায় কোতয়ালি মডেল থানায় এসে উনি ডিউটি অফিস রুমে ঢুকে বলেন ভাই আমার একটা মোবাইল হারিয়ে গেছে আমি একটু জিডি করতে চাই কিন্তু ডিউটি অফিসার পক্ষ থেকে তাকে ওই সকালে জিডি হবে না বলে সাব জানিয়ে দেয়া হয়, এক পর্যায়ে ওই ডিউটি অফিসার একজনকে দেখিয়ে দেন জিডি করতে হলে ৫০০ টাকা লাগবে, তখন তিনি বলেন আমার কাছে ৫০০ টাকা নাই আছে মাত্র ২০০ টাকা কিন্তু জিডি কারক ২০০ টাকা নিতে নারাজ একপর্যায়ে ২০০ টাকা ফেরত দিয়ে বলেন যান ৫০০ টাকা নিয়ে আসলে তবেই জিডি হবে।
পরে তিনি সাইকেল চালিয়ে সরাসরি চলে যান পুলিশ লাইনে। সেখানে পুলিশ লাইন কনস্টেবল ব্যারাকে কামাল নামের তার এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে চাইলে গার্ড তাকে ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দেন।
তিনি পুলিশ কনস্টেবলদের ব্যারাকে তিনতলায় যান দেখতে পান সেখানে ডাইনিং এ কেউ খিচুড়ি কেউ রুটি খাচ্ছেন। এক পর্যায়ে তিনিও সেখানে একটু খিচুড়ি খান এবং অনেকের সাথে আলাপ করে সেখানকার সার্বিক অবস্থা জানার চেষ্টা করেন। পরে তিনি চলে আসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যশোরের অনেকেই এই কথা গুলো শুনে মন্তব্য করে বলেছেন, আমরা তো এই ধরনের একজন পুলিশ সুপার চাই। যে পুলিশ সুপার এতদিন আমাদের ভাগ্যে জোটেনি, তারা পুলিশ সুপারকে কৃতজ্ঞতা সহ ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানিয়েছেন।
নবাগত পুলিশ সুপারের সুরক্ষিত জীবন কামনা করেছেন এবং তার কাছে আশা প্রকাশ করে বলেছেন আপনি মাঝেমধ্যে এই ধরনের তৎপরতা চালালে আল্লাহ আপনার মঙ্গল করবে এবং সাধারন মানুষের দুঃখ দূর হবে। মানুষ সেবা নিতে এসে কেউ হয়রানী হবে না। সেই সাথে সাধারন মানুষ হিসাবে আমরাও দারুন ভাবে উপকৃত হব।