নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ গেজেট মোতাবেক ২৬৯৬ টি মিশুকের পরিবর্তে সিএনজি অটোরিক্সা প্রতিস্থাপনে অবশিষ্ট ৭০০টি মিশুকের পরিবর্তে সিএনজি অটোরিক্সা সমূদয় গাড়ি প্রতিস্থাপন এবং চালকদের নামে ৫০০০ সিএনজি অটোরিক্সা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিক্সা মিশুক চালক ও শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং: ২৯৭৮ এর নেতৃবৃন্দ।

আজ শুক্রবার ১ আগষ্ট, ১১ টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিক্সা মিশুক চালক ও শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে বাংলাদেশ গেজেট ২৭ আগস্ট ২০১২ মোতাবেক ২৬৯৬ টি মিশুকের পরিবর্তে সিএনজি অটোরিক্সা প্রতিস্থাপনে অবশিষ্ট সমূদয় গাড়ি প্রতিস্থাপন এবং চালকদের নামে ৫০০০ সিএনজি অটোরক্সিা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুর মোর্শেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বালাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহমেদ।
বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও মিশুক মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন দুলাল। উপস্থাপনা করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন প্রধান।

আরো বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর মিশুক মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক সারোয়ার হোসেন, সদস্য সচিব ওবায়েদ হোসেন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রুহুল আমিন, সিরাজুল ইসলাম শিপন, হাসান শেখ, আবুল বাশার বাদল, কামাল হোসেন, বাহাদুর বেপারী’সহ এবং বিভিন্ন থানার নেতৃবৃন্দগণ।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বিগত সময়ে ঢাকা মহানগরীতে মিশুক চলাচল বন্ধ ঘোষনা করা হলে ঢাকামেট্রোপলিটন মিশুক মালিক সমিতি উহার বর্তমান নাম ঢাকামেট্রোপলিটন সিএনজি অটোরিক্সা মালিক সমিতি, রেজি নং-২৯২৯ এবং ঢাকা মহানগর মিশুক চালক ও শ্রমিক ইউনিয়ন উহার বর্তমান নাম ঢাকাজেলা সিএনজি অটোরিক্সা মিশুক চালক ও শ্রমিক ইউনিয়ন, রেজি নং-২৯৭৮ মিলে মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ গঠন করে মালিক শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ এর দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালনার পর অবশেষে মিশুকের পরিবর্তে গ্যাস/পেট্রোল চালিত ফোরস্ট্রোক থ্রি-হুইলার অটোরিক্সা প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহন করেন।
সেই লক্ষে গত ২৭ আগস্ট ২০১২ সালে সরকার ২৬৯৬ টি গাড়ি প্রতিস্থাপনের গেজেট প্রকাশ করেন। অতপর দুই কার্যদিবসের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ মিশুকের কাগজপত্র বিআরটিএ জমা প্রদানের বিজ্ঞপ্তি প্রচারিত হইলে উক্ত সময়ের মধ্যে মোট ২২৪০ টি মিশুকের কাগজ জমা প্রদান করা হয়।
অবশিষ্ট ৪৫৬টি মিশুকের মালিকগণ সময় স্বল্পতার কারণ সহ বিবিধ সমস্যার কারনে কাগজ যথাসময়ে জমা দিতে পারেন নাই। তৎসময়ে উক্ত কাগজ জমার সময়সল্পতা নিয়ে বিতর্ক হইলে পরিবর্তীতে যে কোন সময় উক্ত কাগজ জমা নেওয়ার মৌখিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
সেই সময়ে উক্ত প্রতিস্থাপনের কার্যক্রমে মালিক সমিতির ১ (এক) জন ও শ্রমিক ইউনিয়ন এর ১ (এক) জন প্রতিনিধি সহ বিআরটিএ হইতে প্রয়োজনীয় কর্মকর্তা বৃন্দের সমন্বয়ে বাছাই কমিটি গঠন করে মিশুকের মালিকানা যাচাই বাছাই পূর্বক প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া চলতে থাকে।
উক্ত বাছাই কমিটিতে সদস্য হিসাবে আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী সাখাওয়াত হোসেন দুলাল শ্রমিক প্রতিনিধি হিসাবে ছিলাম এবং মোঃ সরোয়ার হোসেন, মালিক প্রতিনিধি হিসাবে যুক্ত ছিলেন।
এক পর্যায়ে উক্ত বাছাই কমিটি পূর্ণগঠন করে পুনরায় প্রতিস্থাপন কার্যক্রম চালনো হয়। অদ্য পর্যন্ত সর্বমোট কম-বেশি ২ (দুই) হাজার প্রতিস্থাপনের কাজ সমাপ্ত করা হয় । এখনও কম-বেশি ৭০০ (সাত শত) মিশুকের প্রতিস্থাপন অবশিষ্ট রহিয়াছে।
বক্তারা আরো বলেন, একদিকে ২০১২ সাল থেকে আজ ২০২৫ সাল (১৩) বৎসর। একজন মিশুক মালিক তার গাড়ী বন্ধ থাকায় উক্ত ১৩ বৎসর আয় থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। এছাড়া উক্ত মিশুক রাখার জন্য প্রতি মাসে অনেক টাকা মাসিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
প্রতি বছর উক্ত গাড়ীর রোড পারমিট, টেস্ট টোকেন, ফিটনেস ইত্যাদি ফি অথ্যাৎ রাজস্ব এবং উহা পরিশোধ না করায় জড়িমানা সহ প্রতিটি মিশুক বাবদ মালিক প্রায় ৩৫০,০০০ (তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা বকেয়া দেনা রয়েছেন। এ সকল সমস্যার কারনে মিশুক মালিকরা বর্তমানে পথের ভিখারীতে পরিনত হয়েছে/হচ্ছেন।
অন্যদিকে ২০১২ সাল আর ২০২৫ সাল এক নয়, ঢাকা মহানগরিতে তৎকালীন এক কোটি জন সংখ্যার জায়গায় বর্তমানে দুই কোটি লোকের বসবাস এবং তৎকালীন ঢাকা মহানগরির আয়তন ১২৯ বর্গ কিঃ মিঃ এর জায়গায় বর্তমান আয়তন ২৭০ বর্গ কিঃ মিঃ হয়েছে।
এমতাবস্থায় মিশুক মালিকের ক্ষতিগ্রস্থতা আর মহানগরির বর্তমান লোক সংখ্যা ও আয়তন বিবেচনায় গাড়ীর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বিধায় অবশিষ্ট কম-বেশি ৭০০ (সাত শত) মিশুকের পরিবর্তে সিএনজি অটোরিক্সা প্রতিস্থাপন করা একান্ত প্রয়োজন।
উক্ত প্রতিস্থাপনের কাজ সম্পূর্ণ হইলে ২৪৫০,০০,০০০ (চব্বিশ কোটি পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা সরকারের এককালীন রাজস্ব আদায় হবে।
এরুপ পরিস্থিতিতে মিশুক মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধি সহ প্রয়োজনীয় বিআরটিএ কর্মকর্তাদের নিয়ে পূর্বের ন্যায় একটি বাছাই কমিটি গঠন করে অবশিষ্ট কম-বেশি ৭০০ (সাত শত) মিশুকের পরিবর্তে সিএনজি অটোরিক্সা প্রতিস্থাপনের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা প্রয়োজন।