কোটার বিরোধীতায় ৭১’র পরাজিত গোষ্ঠীকে পুনর্বাসনের চেষ্টা হচ্ছে কি-না সে প্রশ্ন উঠেছে  : ডিইউজে

Uncategorized আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সংগঠন সংবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  গত রোববার ১৪ জুলাই,  গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোটা আন্দোলনকারীদের ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার, রাজাকার’ শ্লোগানে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) বলেছে, এ ধরনের শ্লোগান দিয়ে কোটা পদ্ধতির বিরোধীতাকারীরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে ‘৭১’র পরাজিত রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস গোষ্ঠীকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছে কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।


বিজ্ঞাপন

সংগঠনের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন সোমবার (১৫ জুলাই ২০২৪) এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গত কয়েক দিন ধরে চলা কোটা বিরোধী আন্দোলনে দেশের মানুষ দুর্ভোগের শিকার হলেও সন্তানসম আন্দোলনকারীদের প্রতি সহমর্মী ছিল।


বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবি যখন একটি যৌক্তিক পরিণতির দিকে যাচ্ছিল, তখন হঠাৎ করে সাংবাদিক ও সংবাদ কর্মীদের ওপর হামলা, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ শ্লোগান আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করেছে।

প্রায় ২৪ বছরের মুক্তি সংগ্রাম এবং ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে দেশটির জন্ম, সে দেশটিতে কোটা সংস্কারের দাবি করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে নানা ধরনের কটুক্তি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মর্মমূলে কুঠারাঘাত করার অপচেষ্টা কি-না তেমন প্রশ্নও ঘুরে ফিরছে।

বিবৃতিতে ডিইউজে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোটা নিয়ে যে আন্দোলন তা সুস্থ ও স্বাভাবিক গতিতে চলা উচিত। দেশের সচেতন সব মহলের মত সাংবাদিকরাও মনে করে কোটা পদ্ধতি নিয়ে একটি যৌক্তিক সমাধানে আসা উচিত। আর এর যথাযথ পরিণতির জন্য আন্দোলনকারী, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি পক্ষকে সমান তালে এগিয়ে আসতে হবে। কোনো ক্ষমতালিদু গোষ্ঠী বা ৭১’র পরাজিত গোষ্ঠীর ঈশারায় এ আন্দোলন চললে তার পরিণত সুখকর হবে না।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, চীন সফরোত্তর সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী কোটা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা কোটা পাবে না তো রাজাকাররা নাতি-পুতিরা কোটা পাবে?’- কথাটি বলার মাধ্যমে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখেছেন। কিন্তু তাঁর সে বক্তব্যকে ঘিরে নেতিবাচক প্রচারণা ডিইউজের কাছে উদ্দেশ্যমূলক ও দূরভিসন্ধিমূলক মনে হয়েছে।

বিবৃতিতে ডিইউজে নেতৃদ্বয় বলেন, দেশের প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক সব আন্দোলনে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। সেই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাঙ্গণ থেকে রাজাকারের সমর্থনে শ্লোগান ওঠা পুরো জাতিকে হতাশ ও বিস্মিত করেছে। ডিইউজে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। একইসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গণে সোমবার (১৫ জুলাই ২০২৪) সংঘর্ষের ঘটনারও নিন্দা জানানো হচ্ছে। এসব ঘটনার সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠাও সঙ্গত মনে হয়নি।

বিবৃতিতে ডিইউজে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের গৌরবের প্রতীক মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি না করে সৃষ্ট জটিলতা থেকে বেরিয়ে আসতে সবার মর্যাদা রক্ষা করে সামনের পথে এগোতে হবে। সেক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু কন্যার কথাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা বন্ধ করা জরুরি।

সাংবাদিক সমাজ মনে করে, আন্দোলনের নামে জনদুর্ভোগ না বাড়িয়ে, আন্দোলনকারীদের উচিত হবে বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে নিজেদের দাবির যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠা করা।

আর বিচার বিভাগ এবং নির্বাহী বিভাগের উচিত হবে বিষয়টির যৌক্তিক সমাধানের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সেক্ষেত্রে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে হবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *