বিসিক ভবনে চার কর্মচারির ভয়ংকর অপতৎপরতা !

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  হাসিনা সরকারের পতনের পরও দুঃসাহস দেখিয়ে যাচ্ছে তার দোসররা। ৫ আগষ্ট ২০২৪ তারিখে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর নানা কৌশলে প্রভাব বিস্তারের অপচেষ্টায় লিপ্ত তার অনুস্মারীরা। নিজেদের অপকর্ম আড়াল করে সুবিধা লাভের আশায় একটি সরকারী ভবনে আগুন দেয়ার বিষয়ে লিখিত বক্তব্য দাখিল করেছে মোঃ আব্দুল হালিম, শরীফ রানা, জান্নাতুল নাইম এবং ছাইদুর রহমান নামীয় চারজন কর্মচারী। বিসিক চেয়ারম্যান বরাবর দাখিল করা চারজনের যৌথ স্বাক্ষরিত একটি পত্র আমাদের হস্তগত হয়েছে। যাতে লিখা রয়েছে: দেশের সংকটময় মূহুর্তে বিসিক প্রধান কার্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরীর ব্যবস্থাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ প্রসংগে।


বিজ্ঞাপন

একাধিক স্থানে লিখা রয়েছে জাতীয় শ্রমিক লীগ অন্তর্ভুক্ত কথাটি গোপন করা হয়েছে,যার দরুণ উল্লিখিত চারজন কর্মচারির শ্রমিক লীগ প্রীতির বিষয়টি দালিলিক প্রমাণ বহন করে। পত্রের এক জায়গায় উল্লেখ করা হয়েছে জাতীয় শ্রমিক লীগের অঙ্গসংগঠন হয়ে নিরবিচ্ছিনভাবে ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দানের জন্য যে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে তা বিসিকে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরীর দুরভিসন্ধিমূলক উদ্দ্যেশ্য বলে বিসিক এ কর্মরত কর্মচারীগণ মনে করেন।


বিজ্ঞাপন

কেন না ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আগুন দেওয়া ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। উপরোক্ত বিষয়টি সদয় বিবেচনায় নিয়ে একটি দলের ব্যানারের আড়ালে ট্রেড ইউনিয়নের নাম করে বিসিকের স্থিতিশীল পরিবেশ অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রকারী বা ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বিসিকের শান্তিকামী কর্মচারীদের পক্ষ হতে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। পত্রের এক জায়গায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিসিক চেয়ারম্যান এবং পরিচালক (প্রশাসন) বরাবরে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এ ধরনের একটি পত্র আমাদের হস্তগত হওয়ার পর আমরা কয়েকজন প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বললে তারা জানিয়েছেন যে, শৃংখলা ভংগ করে যৌথ স্বাক্ষরে দাখিলকৃত আবেদনের বিষয়ে ১২-০৮-২০২৪ তারিখে এ ধরনের একটিপত্র প্রাপ্তির পর বিসিক চেয়ারম্যান, বিসিক পরিচালনা পর্ষদ, বিশেষ করে পরিচালক (প্রশাসন) সংশ্লিষ্ট চারজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে কেন নীরব ভূমিকা পালন করছেন সেটাই বোধগম্য নয় । প্রথমতঃ উক্ত চারজন পত্রটি যৌথ স্বাক্ষরে প্রেরণ করেছেন-যা করার এখতিয়ার তাদের থাকার কথা নয়। দ্বিতীয়ত: তারা বিসিক কর্তৃপক্ষ বরাবর সরাসরি আবেদন/নিবেদন পেশ করার অধিকার বা এখতিয়ার সংরক্ষণ করেন না।

তৃতীয়তঃ স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের কোন সরকারী দপ্তরে বা ট্রেড ইউনিয়ন অফিসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেনি, অথচ: তাদের আবেদনে তার উল্লেখ আছে। চতুর্থতঃ কে বা কারা স্বাক্ষর করে বিসিক কর্তৃপক্ষ বরাবর পত্র প্রেরণ করবে তা দেখার এখতিয়ার বিসিক কর্তৃপক্ষের-কোন অবস্থাতেই পত্র প্রেরণকারী চার জন কর্মচারির নয়। পঞ্চমতঃ যৌথ স্বাক্ষরকারী চারজন বিসিক চেয়ারম্যান এবং পরিচালক (প্রশাসন) বরাবর কোন কিছু উপস্থাপন করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে না।
তাদের এ ধরনের লিখাতে পরিষ্কার বুঝা যায় যে, বিসিক কর্তৃপক্ষের সাথে তাদের এক ধরনের অলিখিত আঁতাত রয়েছে। আঁতাত না থাকলে এ ধরনের লিখা তাদের নজরে আসার সাথে সাথে শৃংখলা ভংগের দায়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান আছে।

ষষ্ঠতঃ চার জনের লিখায় পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে উক্ত চার জন কর্মচারি তাদের অসৎ উদ্দেশ্য সাধনকল্পে বিসিকের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। উক্ত চারজন নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য নিজেরা বিসিক ভবনে আগুন দিয়ে অন্য কারো নামে দোষ চাপিয়ে দেয়ার অশুভ চক্রান্তে লিপ্ত থাকার সুনির্দিষ্ট প্রমাণক তাদের যৌথ স্বাক্ষরে প্রেরিত পত্রটি। বিষয়টি অনুধাবন করে বিসিক ভবনে আগুন দেয়ার হুমকী প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না বিসিক কর্তৃপক্ষ। বিসিক পরিচালনা পর্ষদের অতি উৎসাহী এবং মানবাধিকার লংঘনকারী পরিচালক (অর্থ) মোঃ কামাল উদ্দিন বিশ্বাস, পরিচালক (প্রকল্প) মোঃ আব্দুল মতিন এবং পরিচালক (দক্ষতা ও প্রযুক্তি) কাজী মাহবুবুর রশীদ স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসাবে উক্ত চার জন কর্মচারির সাথে দফায় দফায় শলাপরামর্শ করে বিসিকের স্থিতিশীল পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন মর্মে বিসিকের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

স্মরণযোগ্য যে, সংশ্লিষ্ট চারজন কর্মচারী বিসিক শ্রমিক কর্মচারী লীগ নামে একটি সিবিএ সংগঠনের রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্তির জন্য মহাপরিচালক, শ্রম অধিদপ্তর,ঢাকা বরাবরে আবেদন দাখিল করেছেন এবং বিষয়টি বিসিক কর্তৃপক্ষকে সংশ্লিষ্ট দপ্তর হতে লিখিতভাবে অবগত করে বেশ কিছু তথ্য চেয়ে ৭ জুলাই ২০২৪ তারিখে বিসিক চেয়ারম্যান বরাবরে একটি পত্র প্রেরণ করে, যা বিসিক চেয়ারম্যান দপ্তরে ১১-০৭-২০২৪ তারিখে ৫১৮২ নং স্মারক মূলে ডাইরীভুক্ত হ্য় এবং ১৫-০৭-২০২৪ তারিখে পরিচালক (প্রশাসন) এর দপ্তরে প্রেরণ করা হয়। জাতীয় শ্রমিক লীগের অন্যতম দোসর কে বা কারা তা আর চিহ্নিত করে দেখানোর প্রয়োজন হয়না।

বে-আইনীভাবে যৌথ স্বাক্ষরে পত্র প্রেরণ, যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন নিবেদন পেশ করা গুরুতর অসদাচরণ এবং নিজেদের মনগড়া মতো করে অফিসে আগুন দেয়ার নাটক সাজিয়ে এ বিষয়ে আলোকপাত করার কারণে সংশ্লিষ্ট চারজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বিসিক কর্তৃপক্ষ তাদের পক্ষ অবলম্বন করার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন। কারণ বিসিক কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে নি। এমন কি বিসিক প্রধান কার্যালয়ের নিরাপত্তা বিধান কল্পে স্থানীয় থানায় কোন জিডি এন্টি ্রকরে নি। বিসিক ভবনে আগুন দেয়ার বিষয়ে আলোকপাত করা, যৌথ স্বাক্ষরে পত্র প্রেরণ এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষ ব্যতীত দাখিলকৃত আবেদন/নিবেদন গুরুতর অসদারণ প্রভৃতি বিষয় অবগত থাকার পরও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনায় বিসিক কর্তৃপক্ষের নীরবতাই সম্মতির প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। বিসিক কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে পরিচালক (প্রশাসন) প্রত্যক্ষ ভাবে তাদেরকে সহযোগিতা করছে বা তাদের পক্ষঅবলম্বন করে কাজ করা হচ্ছে বলা হলে কোনভাবেই তা অত্যুক্তি হবে না।
যেখানে দেশের কোথায়ও সরকারী কোন দপ্তরে বা ট্রেড ইউনিয়ন কার্যালয়ে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেনি সেখানে সংশ্লিষ্ট চারজন কর্মচারী বিসিক ভবনে আগুন দেয়ার বিষয়ে আলোকপাত করে নিজেদের কৃত অপকর্ম অন্যদের ঘাড়া চাপানোর অপচেষ্টা হতে বিসিক ভবনকে রক্ষাকল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের বিষয়ে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা বিসিক কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করবেন-বিসিকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ এমনটিই প্রত্যাশা করছেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *