নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নিরীক্ষা দাবির পাওনা এক হাজার কোটি টাকা সোমবারের (২৪ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এ নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
সর্বোচ্চ আদালতে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহবুবে আলম ও খন্দকার রেজা-ই-রাকিব। গ্রামীণফোনের পক্ষে শুনানি করেন এ এম আমিন উদ্দিন ও মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী।
আদেশে বলা হয়েছে, গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির যে পাওনা টাকা সেটা কমানেরা কোনো সুযোগ নাই। সেক্ষেত্রে তাদের আগামী সোমবারের মধ্যে অন্তত এক হাজার কোটি টাকা দিতে হবে। বাকি টাকার বিষয়ে ওই দিন পরবর্তী আদেশ দেয়া হবে।
এদিন গ্রামীণফোনের আইনজীবী ছয় মাস সময় চেয়ে বলেন, তারা ৫৭৫ কোটি টাকা দিতে চায়। কিন্তু আদালত সেই আবেদন গ্রাহ্য না করে সরাসরি বলেছেন, আগে এক হাজার কোটি টাকা দিতে হবে বিটিআরসিকে। এসময় আদালত বলেন, শুধু টাকা কমালে হবে না। টাকা দিতেও হবে।
গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে গত বছর দাবি করে বিটিআরসি।
একপর্যায়ে বিটিআরসির দাবি করা টাকার অঙ্ক নিয়ে আপত্তি তুলে নিম্ন আদালতে একটি টাইটেল স্যুট (স্বত্ত্বের মামলা) মামলা করে গ্রামীণফোন। ওই মামলাটি আদালত গ্রহণ করে। ওই টাইটেল স্যুটের অধীনেই গ্রামীণফোন বিটিআরসির পাওনা আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে, যা গত ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালত খারিজ করে দেন।
নিম্ন আদালতের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে পরে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন। সে আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে বিটিআরসির পাওনা আদায়ের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে বিটিআরসি।
সে আপিলের শুনানি নিয়ে গত ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ ৩ মাসের মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া সাপেক্ষে গ্রামীণফোনের কাছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। তবে ২ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার আদেশটি বাস্তবায়ন না হলে এর আগে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশটি (ভ্যাকেট) বাতিল হয়ে যাবে বলে তখন জানিয়ে দেন সর্বোচ্চ আদালত।
আপিল বিভাগের এই আদেশ পুনর্বিবেচনার চেয়ে গত ২৬ জানুয়ারি রিভিউ আবেদন করে গ্রামীণফোন। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ আদেশ দিলেন সর্বোচ্চ আদালত।