চট্টগ্রাম লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) উদযাপন :  মানব জাতিকে সভ্য সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে রাসুল (স.)’র আদর্শ উত্তম-অনুসরণীয়

Uncategorized ইতিহাস ঐতিহ্য গ্রাম বাংলার খবর চট্টগ্রাম জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

স ম জিয়াউর রহমান, (চট্টগ্রাম) :  শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে শ্রমজীবীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই। রাসুল (স.) শ্রমিক এবং মালিককে যার যার কর্তব্য ও অধিকারের বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছেন। সে শিক্ষা অনুসরণ করলে কেউ কাউকে ঠকাতে না পারা বা যার যার দেনা পাওনা বুঝিয়ে পাওয়ার ক্ষেত্রে সুর্নিদ্দিষ্ট নীতির কোন বিকল্প থাকে না।


বিজ্ঞাপন

আজ ১২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকাল ৫ টায় মাঝির ঘাট মোড়স্থ বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে চট্টগ্রাম লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি. নং চট্ট-২০৯০ এর উদ্যোগে সংগঠনের সভাপতি এম. নুরুল হুদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আকতার জামাল মাস্টারের সঞ্চালনায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) মাহফিল ও দোয়া মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সদরঘাট নৌ-থানা পুলিশ ইনচার্জ অফিসার মো. মিজানুর রহমান বলেন, প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) অন্যায়কে প্রতিরোধ এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করেছেন। মজলুম আর শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে সবসময় সরব থাকতেন। তাঁর শিক্ষা আমাদের অনুকরণ ও অনুসরণই মুক্তির পথ। আমি নৌ-থানায় দায়িত্ব পালনকালে কোন অন্যায় অনিয়মকে প্রশ্রয় দিবো না। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট থাকবো। শ্রমিক মালিক সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে কাজ চালিয়ে যাবো।


বিজ্ঞাপন

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার ও পরিবেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এস এম শামসূল হক, মহিউসুন্নাহ মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মো. মাহমুদুল হক, চট্টগ্রাম লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি মো. সেলিম মাস্টার।


বিজ্ঞাপন

তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, মহাপরিচালক শ্রম অধিদপ্তরের মাধ্যমে নৌ-সেক্টরে সকল জাহাজ শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন এর পক্ষ থেকে ১১ দফা অমিমাংসিত দাবী বাস্তবায়ন ও নৌ-সেক্টরে চলমান সংকট সমাধানকল্পে উক্ত দাবীর বিষয়বস্তু তুলে ধরেন। উক্ত ১১ দফা সমূহ হল- ১. জাহাজী শ্রমিকদের মালিক কর্তৃক নিয়োগ পত্র, পরিচয় পত্র, সার্ভিস বুক প্রদান ও কল্যাণ তহবিল ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে কন্টিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন করতে হবে। ২. গত ৩০ মার্চ ২০২৩ইং এর গেজেট অনুযায়ী বকেয়া পাওনা সহ বেতন পরিশোধ করতে হবে। ৩. মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ ১২ লক্ষ টাকা প্রদান করতে হবে। ৪. ভারতগামী জাহাজী শ্রমিকদের ভারতের সীমানার ল্যান্ডিং পাস, পোর্ট ভিসা ও সুচিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে। ৫. বালুবাহী বাল্কহেড শ্রমিকদের উপর নৌ-প্রশাসনের হয়রানী, মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে হবে। ৬. নৌ-পথে ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও নৌ-প্রশাসনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ৭. নিরাপদে জাহাজ রাখার পোতশ্রয় নির্মান করতে হবে এবং চরপাড়া সী-বিচ পতেঙ্গা এলাকায় জাহাজের কিনারায় উঠানামার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের পর্যাপ্ত ঘাটের ব্যবস্থা করতে হবে। ৮. মাস্টার, ড্রাইভারশীস পরীক্ষা সহ নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর ও বিআইডব্লিউটিএ এর সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। ৯. চট্টগ্রামে সিরিয়ালের নামে জাহাজ মালিকদের সৃষ্ট সমস্যা সংকট তাদের নিজেদের ব্যাপার, যা জাহাজ মালিকদেরই সমাধান করতে হবে। ১০. সকল প্রকার জাহাজী শ্রকিকদের জন্য পোতশ্রয় নির্মাণ করে ইজারামুক্তভাবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। ১১. বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে পেশকৃত ১১ দফার অমিমাংসিত দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আজগর হোসেন তালুকদার, চট্টগ্রাম বিভাগীয় জলপরিবহণ কার্গো ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ মো. আব্দুল কাদের সারেং, চট্টগ্রাম লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য যথাক্রমে, আবদুস সবুর মাস্টার, জিয়াউর রহমান মাস্টার, মো. ইসমাইল, জাহাঙ্গীর আলম, মো. সেলিম, খলিল সিকদার, সজীব মৃধা, আমজাদ হোসেন, শামসুল ইসলাম, নাছিম মাঝি, বুলবুল মাঝি, মনির মাঝি, মো. আলিম রেজা, মো. মাসুম, শেখ মোহাম্মদ, মাহবুব আলী, মো. জামাল উদ্দীন চৌধুরী, মো. শুভ প্রমুখ।

সভায় দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন মাঝিরঘাট বিবি মসজিদের খতিব মাওলানা মো. আসহাব উদ্দিন।

তিনি দেশ জাতির মঙ্গল কামনা, প্রয়াত শ্রমিক নেতৃবৃন্দসহ বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন, রেজি. নং বি-২১৪৮-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম আইনুল হোসেন উত্তম ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মুনাজাত করেন। পরিশেষে উপস্থিত সকলের মাঝে তবরুক বিতরণ করা হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *