নারী ক্ষমতায়নের পরও এত ডিভোর্স কেন?

Uncategorized আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

ফেরদৌসী রুবী, একজন গুণী লেখিকা।


বিজ্ঞাপন

 

ফেরদৌসী রুবী  : নারী ক্ষমতায়নের পরও এত ডিভোর্স কেন! কথাটি প্রায়শই শুনে থাকি। তাহলে কি আমাদের অভ্যন্তরীণ কন্ঠস্বর এবং আবেগকে উপেক্ষা করে আমাদের প্রকৃত চিন্তা শুধু ক্ষমতা কেন্দ্রীক? স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হ’ল আত্বার সম্পর্ক, দুজন মানুষের একটি বন্ধন। বুঝিনা ক্ষমতার সাথে এই সম্পর্ক ভাঙ্গা গড়ার কি সম্পর্ক থাকতে পারে!


বিজ্ঞাপন

যাইহোক বিবিএসের একটি জরিপে উঠে এসেছে নারীর প্রতি সহিংসতা, যৌতুক এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ক নির্যাতন বাংলাদেশে নারীদের ডিভোর্স নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক। তবে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ও অর্থ সংকট বিবাহিত জীবন ধরে না রাখতে পারার অন্যতম কারণ বলে বিবেচনা করে যায়।
তাছাড়া যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা, অবাস্তব প্রত্যাশা এবং প্রতিশ্রুতির অভাব ক্রমবর্ধমান বিবাহবিচ্ছেদের হারে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আমাদের সমাজে বিবাহ টিকিয়ে রাখার জন্য ব্যক্তিগত পরিপূর্ণতাকে সব কিছুর ঊর্ধ্বে মূল্যায়ন করে। অনেকে একটি সফল বিবাহের জন্য প্রয়োজনীয় কঠোর পরিশ্রম এবং আপসকেও অগ্রাধিকার দিতে সংগ্রাম করে যায়।

যাইহোক বিচ্ছেদ অনেক বড় কষ্টের, দুঃখজনক এবং এর পিছনে রয়েছে প্রকাশ করা যায় না এমন অবিচলিত জ্বলন্ত কষ্ট। তা-সত্বেও কখনো কখনো এই ব্যথা এড়ানোর বৃথা চেষ্টা করা বা একটি অসুখী সম্পর্কে জড়িয়ে থাকা আরও বেশী ব্যথা তৈরির কারণ হতে পারে।
আমরা যারা খুব বেশী গণিত নিয়ে ভাবি তারা যুক্তি, ত্রুটির উপপাদ্যগুলি সঠিকভাবে বের করতে চেষ্টা করি কেন এই বিচ্ছেদ হ’ল কিন্তু এর পেছনে কত সত্য লুকিয়ে থাকতে পারে তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন নই। যেখানে যুক্তির বাইরে গিয়েও এমন অনেক কিছু রয়েছে যা ভুক্তভূগি ছাড়া অন্য কারো পক্ষে হয়ত অনুভব করা সম্ভব নয়।

তবে এটাও সত্য যে আজ কাল কিছু বিচ্ছেদ ঘটছে অতিরিক্ত প্রত্যাশা, ক্ষমতার দাম্ভিকতা, বিশ্বাসঘাতকতা, আসক্তি, এবং মানষিক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে। যা একেবারেই কাম্য নয়। আর এর জন্য স্বামী-স্ত্রীর পাশাপাশি পরিবার এবং যদি সন্তান থাকে তারা বিশেষভাবে অনেক বেশী কষ্টের শিকার হয়ে থাকে। সম্পর্কের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকাটা স্বাভাবিক তবে এটি জটিল কিংবা চ্যালেন্জিং হয়ে যেন আত্বার সম্পর্ক আত্বা থেকে সরে না যায় সেদিকে বিশেষভাবে নজর রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

একটি জীবন্ত বিবাহ হল মানুষের সবচেয়ে স্বাভাবিক সুন্দর অবস্থা এবং যে অবস্থায় মানুষ অনেক সুখে থাকে। অনেক উত্থান-পতন, অ্যাডভেঞ্চার এর পরও আমরা দুজন দুজনের সেরা বন্ধু, সর্বশ্রেষ্ঠ সমর্থন, শক্তিশালী প্রেরণা, গভীরতম ভালবাসা। অতএব অংক,জ্যামিতি, যুক্তি, সবকিছুর বাইরে গিয়ে আমাদের অন্তর্দৃষ্টি এবং হৃদয়কে অনুসরণ করে আমাদের জীবন হতে পারে সত্যিকারের অর্থপূর্ণ, সুন্দর, সাবলিল ও অবিশ্বাস্য স্মৃতিতে পরিপূর্ণ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *