বিনোদন প্রতিবেদক : অনম বিশ্বাস পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘রঙিলা কিতাব’ গতরাতেই ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইতে মুক্তি পেয়েছে। কিঙ্কর আহসানের লেখা উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে। এটা দেখে শেষ করেছি এক বসাতেই।
প্রদীপ আর সুপ্তির ফেরারি জীবনের গল্পই ‘রঙিলা কিতাব’ ওয়েব সিরিজের মূল বিষয়। তাদের এই শ্বাসরুদ্ধকর ফেরারী যাত্রা দর্শকদের আটকিয়ে রাখবে। এই সিরিজটি দেখতে-দেখতে মনেহবে এটা কী সুপ্তি আর প্রদীপের গভীর ভালোবাসার কাহিনী নাকি প্রদীপের বেঈমানীর গল্প। তবে, আট পর্ব সিরিজের পরতে পরতে আছে বৈচিত্র্যময়তা, যা দর্শকদের বিরক্তির জন্ম দেবে না।
‘রঙিলা কিতাব’ ওয়েব সিরিজে সুপ্তি ওরফে পরীমনির প্রথম দৃশ্যে ঘরের দরোজা খোলা থেকে শুরু করে পুরো সিরিজে দুর্দান্ত অভিনয় করলেন। চরিত্রের প্রয়োজনে কিছুটা ওজন বাড়ানো থেকে শুরু করে অন্তঃসত্ত্বা নারীর চরিত্রে অনায়াসে অনবদ্য অভিনয় কতলেন। কয়েকবছর আগে নিজেও সন্তানের জননী হয়েছেন। সেই কারণে অভিনয়ে আরো বেশি সহায়ক হয়েছেন চরিত্র হয়ে উঠতে৷
একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীর মতো হাঁটা,চলা, বসা, কথাবলা আয়ত্ব করেছেন দারুণভাবে। তাকে ছাড়া এই চরিত্রটি কল্পনা করা যায়না। মা হওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তগুলোর অভিনয় একেবারে মনোযোগ দিয়ে করেছেন। শেষ দৃশ্যে সন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়ে রহস্যময় তাকানো অনেক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে দর্শকদের কাছে। পুরনো পরীমনির নতুন জন্ম হয়েছে সুপ্তি চরিত্রের মধ্য দিয়ে যা বাঁচিয়ে রাখবে দীর্ঘদিন।
প্রদীপ চরিত্রের অভিনয়শিল্পী মোস্তাফিজ নুর ইমরান ছাড়া এই চরিত্রটি একেবারে অসম্পূর্ণ লাগতো। প্রথম দৃশ্য থেকে তার অভিনয়, অভিব্যক্তি, অ্যকশন দৃশ্যে কী সাবলীল আর অসাধারণ। বাড়তি কোনোকিছু তার অভিনয়ে চোখে পড়েনি। চরিত্র হয়ে উঠতে যতোটা প্রয়োজন ঠিক ততোখানিই করেছেন।
স্ত্রীর জন্য আকুলকরা প্রেম, অসহায়ত্ব, প্রতিশোধের নেশা চোখে-মুখে ছড়িয়ে দিলেন কী সুন্দরভাবে যা একজন প্রতিভাবান অভিনয়শিল্পীর পক্ষেই সম্ভব। জ্যাঠারুপি ফজলুর রহমান বাবুকে গুলি করার আগে পরে তার অভিনয় চোখে গেঁথে থাকবে দীর্ঘদিন।
এছাড়া ফজলুর রহমান বাবু, মনোজ প্রামানিক নিজ নিজ চরিত্রে দারুণ অভিনয় করে নিজেদের দিকে দৃষ্টি নিতে বাধ্য করেছেন।
নির্মাতা অনম বিশ্বাস নিজের চেনা ছক থেকে বেরিয়ে এমন একটা অ্যাকশন ওয়েব সিরিজ বানিয়েছেন। যা সত্যি প্রশংসার দাবী রাখে। নিজের জনরা থেকে বাইরে গিয়ে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়েছেন এই নির্মাতা।